Advertisement
E-Paper

বন্দিদশা ছেড়ে চিরমুক্তি প্রিয়র

কোমা থেকে বেরিয়ে এলেও চলাফেরা বা বাক্শক্তি, অভিব্যক্তি প্রকাশের শক্তি কিছুই ছিল না। সেখানেই সোমবার দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে প্রিয়বাবুর মৃত্যু হয়। হাসপাতালের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘উনি গত এক মাস গুরুতর অসুস্থ ছিলেন। মৃত্যুর সময়ে তাঁর স্ত্রী দীপা দাশমুন্সি ও ছেলে তাঁর পাশেই ছিলেন’।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৭ ০৫:০০
প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি।

প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি।

প্রায় ৯ বছর শয্যাবন্দি থাকার পরে প্রয়াত হলেন প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি।

সেই ২০০৮ সালে দুর্গাপুজোর সময়ে কালিয়াগঞ্জের বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পরে তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল দিল্লির এইম্স হাসপাতালে। তখন তিনি কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী। পরে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল দিল্লিরই ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালে। সেখানেই এত দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। কোমা থেকে বেরিয়ে এলেও চলাফেরা বা বাক্শক্তি, অভিব্যক্তি প্রকাশের শক্তি কিছুই ছিল না। সেখানেই সোমবার দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে প্রিয়বাবুর মৃত্যু হয়। হাসপাতালের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘উনি গত এক মাস গুরুতর অসুস্থ ছিলেন। মৃত্যুর সময়ে তাঁর স্ত্রী দীপা দাশমুন্সি ও ছেলে তাঁর পাশেই ছিলেন’।

হাসপাতাল থেকে প্রথমে মরদেহ সংরক্ষণের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় লেডি হার্ডিঞ্জ হাসপাতালে। প্রিয়রঞ্জনের হাত ধরে রাজনীতিতে আসা তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম তাঁকে শ্রদ্ধা জানান। বিকালে কংগ্রেসের সদর দফতর, ২৪ নম্বর আকবর রোডে মরদেহ নিয়ে যাওয়ার পরে সেখানেই সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধী, মনমোহন সিংহ থেকে শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়, সুস্মিতা দেবের মতো কংগ্রেসের প্রায় সব নবীন-প্রবীণ নেতা তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। রাজ্যের নেতাদের মধ্যে প্রদীপ ভট্টাচার্যও হাজির ছিলেন সেখানে। সকলেই প্রিয়রঞ্জনের স্ত্রী দীপা ও তাঁর ছেলে প্রিয়দীপ ওরফে মিছিলকে সমবেদনা জানান।

রাতের বিমানে প্রিয়বাবুর মরদেহ নিয়ে আসা হয়েছে কলকাতায়। প্রদেশ কংগ্রেস দফতর বিধান ভবনে আজ, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত শায়িত থাকবে প্রিয়বাবুর দেহ। তার পরে দক্ষিণ কলকাতার রানি ভবানী রোডের বাড়ি ঘুরে বেহালা ফ্লাইং ক্লাব থেকে হেলিকপ্টারে দেহ নিয়ে যাওয়া হবে রায়গঞ্জ হয়ে আদি বাসস্থান কালিয়াগঞ্জে। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সেখানেই হবে শেষকৃত্য।

প্রিয়বাবুর মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশের পাশাপাশি তাঁর শেষকৃত্যের যাবতীয় বন্দোবস্তও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কে কখন কী ভাবে কোথায় যাবেন, তা নিয়ে এ দিন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানকে দফায় দফায় ফোন করে খোঁজ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাহাড় নিয়ে বৈঠকের জন্য তিনি নিজেও আজ থাকছেন শিলিগুড়িতে। তবে প্রিয়বাবুর শেষকৃত্যে সরকারের তরফে সম্ভবত মন্ত্রী গৌতম দেবকে পাঠানো হবে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রিয়রঞ্জনের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে লিখেছেন, ‘উনি জনপ্রিয় নেতা ছিলেন। যথেষ্ট রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাও ছিল। দেশে ফুটবল জনপ্রিয় করতে তাৎপর্যপূর্ণ কাজ করেছিলেন।’ শোকপ্রকাশ করেছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। সনিয়া বলেছেন, দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্বেও তিনি জনপ্রিয় ছিলেন। পাঁচ দশকের রাজনৈতিক কেরিয়ারে প্রিয়রঞ্জন দল ও সরকারের জন্য সাফল্যের সঙ্গে কাজ করেছেন। বিশেষ করে তৃণমূল স্তরে তাঁর কাজ স্মরণীয়। রাহুলও প্রিয়রঞ্জনের স্মৃতিতে ট্যুইট করেছেন, ‘এক জন অসাধারণ রাজনৈতিক মস্তিষ্ক ও ভালো মানুষ ছিলেন তিনি। বাংলা ও কংগ্রেস দল এক বিরাট নেতাকে হারাল।’ বিপরীত শিবিরের নেতা হয়েও বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘ছাত্র আন্দোলনে আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। রাজনীতিতে আসার পরেও অনেক বার কথাবার্তা হয়েছে। ব্যক্তিগত ভাবে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করার মতো কিছু ছিল না।’’ যে ভাবে বাক্শক্তি এবং অভিব্যক্তি হারিয়ে প্রিয়বাবু বিছানাবন্দি ছিলেন, হাসপাতালে তা দেখে তিনি মর্মাহত হয়েছিলেন বলেও মন্তব্য করেছেন বিমানবাবু।

Priya Ranjan Dasmunsi Congress Death প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি Dipa Dasmunsi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy