Advertisement
E-Paper

সনিয়াকেই ‘ধরে রেখে’ এগোতে চান প্রবীণেরা

কংগ্রেসের এক প্রবীণ নেতা বলেন, ‘‘রাহুলের ইস্তফার পর গাঁধী পরিবারেরই কাউকে ক্ষমতার কেন্দ্রে দরকার ছিল। সনিয়া অন্তর্বর্তী সভাপতি হতে রাজি হয়েছেন। কিন্তু আমরা তাঁকে সহজে ছাড়ছি না।’’

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় 

শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:৩৪
সনিয়া গাঁধী।

সনিয়া গাঁধী।

নামেই ‘অন্তর্বর্তী’। সনিয়া গাঁধীকেই সভাপতি পদে রেখে দিয়ে কংগ্রেসকে চালাতে চাইছেন দলের প্রবীণ নেতারা।

লোকসভা ভোটে হারের দায় নিয়ে সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন রাহুল গাঁধী। তার পর দলের চাপে সনিয়া সেই দায়িত্ব ‘সাময়িক’ভাবে কাঁধে তুলে নিয়েছেন। তা-ও দেড় মাস হল। কিন্তু কংগ্রেসের করিডরে এখন প্রচলিত কথা হল, ‘‘ম্যাডাম ফেরার পরেই ‘ভাই’-এর দাপট ফের বেড়েছে।’’ এই ‘ভাই’ আসলে আহমেদ ভাই, একদা সনিয়ার রাজনৈতিক সচিব আহমেদ পটেল। রাহুল সভাপতি থাকার সময় যাঁকে কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু রাহুলের আমলে আহমেদ পটেল-সহ অন্য প্রবীণ নেতারা তেমন গুরুত্ব পেতেন না। নবীন-ব্রিগেডকে পাশে সরিয়ে তাঁরাই এখন ক্ষমতার ভরকেন্দ্রে।

কংগ্রেসের এক প্রবীণ নেতা বলেন, ‘‘রাহুলের ইস্তফার পর গাঁধী পরিবারেরই কাউকে ক্ষমতার কেন্দ্রে দরকার ছিল। সনিয়া অন্তর্বর্তী সভাপতি হতে রাজি হয়েছেন। কিন্তু আমরা তাঁকে সহজে ছাড়ছি না।’’ সভাপতি হিসেবে সনিয়াকে টুইটারে আনার জন্যও আলোচনা চলছে। কিন্তু এ সবই হতাশা বাড়াচ্ছে কংগ্রেসের নবীন নেতাদের। রাহুল সভাপতি হওয়ার পরে যাঁরা কংগ্রেসে পরিবর্তনের আশা করছিলেন। সামনে হরিয়ানায় ভোট। রাহুল সেখানে সভাপতি করেছিলেন অশোক তানওয়ারকে। অথচ প্রবীণ কংগ্রেস নেতা ভূপেন্দ্র সিংহ হুডার চাপে সনিয়া তাঁকে সরাতে বাধ্য হন। আজ দিল্লিতে হরিয়ানা নিয়ে বৈঠকে যোগ দেননি তানওয়ার। প্রকাশ্যেই ক্ষোভ উগরে তিনি আজ বলেন, ‘‘আমার মুখ হয়তো দলের অনেকের পছন্দ হয় না। নেতৃত্ব সব জানেন। তারপরে যা ভাল বুঝবেন, করবেন।’’

রাহুলের ইস্তফা ঘোষণার পরে দলের সভাপতি পদের দৌড়ে ছিল জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, সচিন পাইলটের মতো নবীন মুখের নাম। কিন্তু দলীয় সূত্রের মতে, আহমেদ পটেল-অশোক গহলৌত-দিগ্বিজয় সিংহ-কমল নাথেরা মিলে সেটি ভেস্তে দিয়েছেন। ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহ যতই নবীনদের সুযোগ দেওয়ার কথা বলুন, দিগ্বিজয়-কমল নাথের চাপেই তাঁকে মধ্যপ্রদেশের রাজনীতির বাইরে রাখছেন সনিয়া— ঘনিষ্ঠ মহলে এই অভিযোগ করেছেন জ্যোতিরাদিত্য। দলীয় নেতৃত্বকেও নিজের অসন্তোষ জানিয়েছেন। আবার রাজস্থানে সম্প্রতি বিএসপির বিধায়কদের কংগ্রেসে এনে দলে নিজের গুরুত্ব বাড়িয়ে নিয়েছেন গহলৌত। এ বারে পাইলটের ডানা ছাঁটার চেষ্টায় রয়েছেন।

কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির এক নবীন নেতা বলেন, ‘‘দলে নবীন নেতাদের সমস্যা হল, তাঁরা রাহুলের দিকে তাকিয়ে ছিলেন। কিন্তু রাহুল নিজেই প্রবীণদের চালের কাছে হেরে গিয়ে পিছু হঠেছেন। ফলে দলে পরিবর্তন আনার ব্যাপারে তাঁর লড়াইও থেমে গিয়েছে। আর দীর্ঘদিন রাজনীতির সুবাদে প্রবীণদের জোট যতটা মজবুত, নবীনদের তেমন কোনও গোষ্ঠী নেই। ফলে কখনও ত্রিপুরায় প্রদ্যোত মাণিক্য দেববর্মন প্রকাশ্যে কান্নাকাটি করে পদত্যাগ করছেন, কখনও মহারাষ্ট্রে মিলিন্দ দেওরা দলের থেকে দেশের স্বার্থ আগে বলে নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা করছেন। আবার শশী তারুর-জয়রাম রমেশরা একতরফা মোদী-নিন্দা না করার পরামর্শ দিচ্ছেন। সব মিলিয়ে সকলেই ছন্নছাড়া!’’

Congress Sonia Gandhi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy