নয়াদিল্লিতে পাকিস্তান হাই কমিশনের আধিকারিক এহসান-উর-রহিম ওরফে দানিশের সঙ্গে ধৃত ইউটিউবার জ্যোতি মলহোত্রার ‘ঘনিষ্ঠতা’ এখন পুলিশের নজরে। ওই পাক আধিকারিকের সঙ্গে কী ভাবে যোগাযোগ হয়েছিল জ্যোতির, তাঁকে গোপন তথ্য পাচার করতেন কি না, সে সব অনুসন্ধান করে দেখছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের নজরে রয়েছে, ইউটিউবে জ্যোতির পোস্ট করা বেশ কিছু পুরনো ভিডিয়ো। সূত্রের খবর, দানিশের সঙ্গে জ্যোতির ‘ঘনিষ্ঠতার প্রমাণ’ রয়েছে একটি ভিডিয়োতে।
গত বছর নয়াদিল্লিতে পাকিস্তানি হাই কমিশনের আয়োজন করা ইফতার পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন জ্যোতি। সেই পার্টির ভিডিয়ো নিজের ইউটিউব চ্যানেলে পোস্ট করে পাক হাই কমিশনের থেকে ‘বিশেষ আমন্ত্রণ’ পাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। তদন্তকারীদের নজরে এখন সেই ভিডিয়ো। সূত্রের খবর, ওই ভিডিয়োতে দানিশের সঙ্গে জ্যোতির ‘ঘনিষ্ঠতা’ চোখ এড়ায়নি তদন্তকারীদের। ভিডিয়ো দেখে তাঁরা মনে করছেন, ওই পার্টির আগেই দানিশের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল জ্যোতির।

নয়াদিল্লিতে পাক হাই কমিশনের আধিকারিক দানিশের সঙ্গে জ্যোতি। ছবি: ভিডিয়ো থেকে।
গুপ্তচরবৃত্তি সংক্রান্ত অভিযোগে চলতি সপ্তাহেই দানিশকে ভারতে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করা হয়েছে। অভিযোগ, দানিশের মাধ্যমেই পাক গুপ্তচর সংস্থার একাধিক আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল জ্যোতির। তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, জ্যোতি প্রথম বার পাকিস্তান যান ২০২৩ সালে। ওই সময়ে নয়াদিল্লিতে পাকিস্তান হাই কমিশনের আধিকারিক দানিশের সঙ্গে তাঁর পরিচয়।
জ্যোতির পোস্ট করা ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, নয়াদিল্লিতে পাক হাই কমিশনে তাঁকে স্বাগত জানান দানিশ। জ্যোতিকে বলতে শোনা যায়, ‘‘ওঁকে এবং এই আয়োজন দেখে আমি দারুণ খুশি হয়েছি।’’ তার পরে পার্টি যেখানে চলছে, সেখানে প্রবেশ করেন জ্যোতি। ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, তাঁকে অন্য অতিথিদের সঙ্গে ‘ইউটিউবার’ বলে পরিচয় করিয়ে দেন সেই দানিশই। দানিশকে বলছে শোনা যায়, ‘‘ইনি হলেন এক জন ইউটিউবার এবং ভ্লগার। ওঁর নাম জ্যোতি। ওঁর চ্যানেলের নাম ট্রাভেল উইথ জো। এক লক্ষের বেশি সাবস্ক্রাইবার রয়েছে সেই চ্যানেলে।’’
এর পরে জ্যোতির সঙ্গে নিজের স্ত্রীর পরিচয় করিয়ে দেন দানিশ। তাঁরা দু’জনে পাকিস্তানের জাতীয় দিবস নিয়ে আলোচনা করেন। ওই ইফতার পার্টিতে উপস্থিত ভারতীয়দের সঙ্গেও কথা বলতে দেখা যায় জ্যোতিকে। তাঁরা কখনও পাকিস্তানে গিয়েছিলেন কি না, জিজ্ঞেস করেন ইউটিউবার। তার পরে বলেন, ‘‘আমি পাকিস্তানে যেতে চাই।’’ প্রায় ১৫ মিনিটের সেই ভিডিয়োর শেষে জ্যোতিকে পার্টিতে যোগ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান দানিশ। দু’জনের এই কথোপকথন এখন খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। প্রসঙ্গত, শনিবার গ্রেফতার করা হয়েছে জ্যোতিকে। পাকিস্তানের গুপ্তচরদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগে ধৃত তিনি। পাঁচ দিনের হেফাজতে পাঠানো হয়েছে জ্যোতিকে।