পথচলতি মানুষের চোখ আটকে গিয়েছিল রাস্তার পাশে দাঁড় করানো কালো রঙের একটি বাইকে। সেটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তাঁদের সন্দেহ হয়। বাইকটি কার, তা নিয়ে কৌতূহলও বাড়তে থাকে। ভিড়ও জমতে শুরু করেছিল। হঠাৎই কয়েক জনের নজর যায় রাস্তার পাশের জলাজমিতে। আঁতকে ওঠেন তাঁরা। দেখেন জিন্স, টিশার্ট পরা এক যুবক কাদার মধ্যে নিথর হয়ে পড়ে রয়েছেন। এই ঘটনায় হুলস্থুল পড়ে যায়।
স্থানীয়েরা ভেবেছিলেন, যুবককে খুন করে ফেলে দেওয়া হয়েছে। ফলে যুবককে ওই অবস্থায় দেখেও কেউ এগিয়ে যেতে সাহস পাননি। তাঁরা অপেক্ষা করতে থাকেন। জলাভূমিতে উপুড় হয়ে পড়ে থাকা যুবকের কোনও নড়াচড়া না দেখে সন্দেহ হয়। ফোন করা হয় পুলিশকে। জানানো হয়, এক যুবকের দেহ পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে হাজির হয় পুলিশ।
পুলিশকর্মীরা যখন ‘দেহ’ তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, হঠাৎ নড়ে ওঠেন যুবক। তাঁর নড়াচড়া দেখে পুলিশও হতচকিত হয়ে যায়। উঠেই যুবক বলেন, ‘‘স্যর, আমি বেঁচে আছি।’’ যাঁরা এত ক্ষণ ধরে তাঁকে মৃত ভেবে পুলিশকে ফোন করেছিলেন, যুবক আচমকা উঠে এ রকম কথা বলতে শুরু করায়, হতচকিত হয়ে যান সেই স্থানীয়েরা। অদ্ভুত এই ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের সাগর জেলায়।
জানা গিয়েছে, খুরাই থানা এলাকায় ধানোরা এবং বানখিরিয়া গ্রামের মাঝে রাস্তার ধারে সোমবার বিকেলে এক যুবককে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়েরা। জলাজমিতে উপুড় হয়ে পড়েছিলেন। সারা গা কর্দমাক্ত। রাস্তার পাশে দাঁড় করানো ছিল তাঁর বাইক। ছ’ঘণ্টা ধরে ওই অবস্থাতেই পড়ে ছিলেন তিনি। কোনও নড়াচড়া না দেখে স্থানীয়েরা ভেবেছিলেন যুবক মৃত। তখন তাঁরা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ‘দেহ’ উদ্ধার করতে আসতেই নড়েচড়ে ওঠেন যুবক। কেন এ ভাবে পড়ে ছিলেন, এই প্রশ্ন করাতে যুবক দাবি করেন, তিনি অত্যধিক মদ্যপান করেছিলেন। রবিবার রাতে বাইক নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। রাস্তার পাশে বাইক দাঁড় করিয়ে প্রস্রাব করছিলেন। তখন টাল সামলাতে না পেরে কাদার মধ্যে মুখ থুবড়ে পড়ে যান। এত নেশা করেছিলেন যে তাঁর ওঠার ক্ষমতা ছিল না। ফলে সেখানেই নেশার ঘোরে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন খেয়াল নেই। রাত পেরিয়ে পর দিন বেলা গড়িয়ে বিকেলে পথচলতি কিছু লোকের বাইকটি দেখে সন্দেহ হওয়ায় কৌতূহলবশত এগিয়ে দেখতে যান। তখনই তাঁদের চোখে পড়েন ওই যুবক। স্থানীয়েরা বলেন, ‘‘আমরা ভেবেছিলাম ওটা মৃতদেহ। কিন্তু হঠাৎ উঠে কথা বলতে শুরু করায় ভূতের গল্পের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে।’’