Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

অল ইন্ডিয়া লস্কর-ই-তইবা-র নিশানায় বিরাটও

এআইএলইটি-র কোঝিকোড় কমিটির ওই চিঠিতে কাশ্মীরে ‘নিরীহ মানুষের উপর সেনার অত্যাচারের প্রতিশোধ নিতে’ রাজনৈতিক নেতাদের উপর হামলা চালানোর হুমকি দেওয়া হয়েছে।

জঙ্গিগোষ্ঠীর নিশানায় দ্বাদশ স্থানে রয়েছেন কোহালি।—ছবি এএফপি।

জঙ্গিগোষ্ঠীর নিশানায় দ্বাদশ স্থানে রয়েছেন কোহালি।—ছবি এএফপি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:০১
Share: Save:

ফার্স্ট বা সেকেন্ড ডাউন নয়, ভারতীয় ক্রিকেট ক্যাপ্টেন বিরাট কোহালির জায়গা এখন ১২ নম্বরে!

ব্যাটিং অর্ডার নয়। অল ইন্ডিয়া লস্কর-ই-তইবা নামে একটি জঙ্গিগোষ্ঠীর নিশানায় রাজনৈতিক নেতৃত্বের পাশাপাশি দ্বাদশ স্থানে রয়েছেন কোহালি। কাশ্মীরের প্রতিশোধ নিতে দেশের এক ডজন পরিচিত ব্যক্তিত্বের উপর হামলা চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থাকে (এনআইএ) পাঠানো এক চিঠিতে দাবি করেছে সংগঠনটি। এর পরেই ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে সতর্ক করেছে এনআইএ। ৩ নভেম্বর থেকে দিল্লিতে ভারত-বাংলাদেশ টি-২০ ম্যাচের আগে কোহালি-সহ পুরো ভারতীয় দলের নিরাপত্তা বাড়াতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দিল্লি পুলিশকে।

এআইএলইটি-র কোঝিকোড় কমিটির ওই চিঠিতে কাশ্মীরে ‘নিরীহ মানুষের উপর সেনার অত্যাচারের প্রতিশোধ নিতে’ রাজনৈতিক নেতাদের উপর হামলা চালানোর হুমকি দেওয়া হয়েছে। তাদের তালিকায় রয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, জাতীয় সুরক্ষা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবত, বিজেপির কার্যকরী সভাপতি জে পি নড্ডা, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, জম্মু-কাশ্মীরের সদ্য প্রাক্তন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক, বিজেপি নেতা রাম মাধব, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী। দ্বাদশ নামটি কোহালির। ২০০২-এ খ্যাতির শীর্ষে থাকা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়-সচিন তেন্ডুলকরকেও খুনের হুমকি দিয়েছিল লস্কর-ই-তইবা। তার পরে দীর্ঘদিন জ়েড ক্যাটেগরির সুরক্ষা পেয়েছিলেন ওই দু’জন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বক্তব্য, এআইএলইটি সম্ভবত হাফিজ সইদের নেতৃত্বাধীন লস্কর-ই-তইবার ভারতীয় শাখা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তার ব্যাখ্যা, মূলত দু’টি কারণে লস্করের ভারতীয় শাখা আত্মপ্রকাশ করতে পারে। এক, ভারত বরাবরই বলেছে, এ দেশের সংখ্যালঘুরা নন, ভারতে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের উৎস পাকিস্তান। সেই যুক্তিকে খণ্ডন করতে বছর দশেক আগে ‘ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন’ নামে একটি জঙ্গিগোষ্ঠীকে খাড়া করেছিল পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। সংগঠনটি এখন প্রায় নিষ্ক্রিয়। এখন ফের এ দেশেই আর একটি জঙ্গি সংগঠন খাড়া করতে চাইছে তারা। যাতে প্রমাণ করতে সুবিধা হয় যে, সরকারের প্রতি ভারতীয় সংখ্যালঘুদের ক্ষোভ আছে। নামের আগে ভারতীয়ত্ব প্রমাণে ‘অল ইন্ডিয়া’ শব্দটির যোগ তারই প্রমাণ।

দুই, লস্করের পিছনে পাকিস্তানের ভূমিকা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই সরব ভারত। আগামী দিনে ‘এআইএলইটি’ ভারতে সন্ত্রাসমূলক কাজ করলে সরাসরি পাকিস্তানকে দোষারোপ করা সমস্যা হবে। তখন উল্টে ভারতকে নানা ভাবে দুষতে পারবে পাকিস্তান।

তবে গোয়েন্দাদের ধন্দে ফেলেছে চিঠিটি। এ ভাবে চিঠি ও নিকেশ তালিকা পাঠিয়ে এনআইএ-কে সতর্ক করে দেওয়া থেকেই গোয়েন্দাদের একাংশের সন্দেহ, আদৌ এমন কোনও সংগঠনের অস্তিত্ব আছে তো?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE