নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
আদালতের উপর ভরসা না রেখে অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের জন্য নরেন্দ্র মোদী সরকারকে আইন করার ‘আদেশ’ দিলেন সাধুরা। দিল্লিতে আজ বৈঠকে সাধুরা মোদীর উপর ক্ষোভ উগরে দিলেও তাঁকে এ কাজের জন্য তিন মাস সময় দিলেন। তাঁদের আরও দাবি রাহুল গাঁধীও যেন আইন পাশের ব্যাপারে সমর্থন করেন।
রামজন্মভূমি ন্যাসের প্রধান নৃত্যগোপাল দাসের নেতৃত্বে আজ সাধুদের ‘উচ্চাধিকার কমিটি’-র বৈঠকের আয়োজন করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। রামের নামে ভোট পেয়ে ক্ষমতায় বসেও কেন সাড়ে চার বছরে মন্দির নির্মাণ করলেন না প্রধানমন্ত্রী, তা নিয়ে একাধিক সাধু আজ বৈঠকে ক্ষোভ উগড়ে দেন। সুপ্রিম কোর্টের রায় যে পক্ষেই যাবে তার নিশ্চতা নেই। এই অবস্থায় মোদী যদি আইন না আনেন, তা হলে ‘করসেবা’-র ভিত্তিতে মন্দির নির্মাণ শুরু করে দেওয়ার পক্ষেও সওয়াল করেন অনেকে। তবে শেষ পর্যন্ত পরিষদের হস্তক্ষেপে সুর অনেকটা নরম করে একটি প্রস্তাব পাশ হয়। তার পর রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করে সাধুরা প্রধানমন্ত্রীকে এ বারের চাপ দিতে বলেন।
মোদীর সঙ্গেও দেখা করার সময় চাইছেন তাঁরা।
বৈঠকের পরে সাংবাদিক বৈঠক করে সাধুরা জানান, আইনের পথে মন্দির নির্মাণের পথ প্রশস্ত করতে চলতি মাসে সব রাজ্যের রাজ্যপালের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। নভেম্বরে সব সংসদীয় কেন্দ্রে সভা হবে। ঘেরাও করা হবে সাংসদদের। ১৮ ডিসেম্বর, গীতা-জয়ন্তী থেকে এক সপ্তাহ ‘জনজাগরণ’ অনুষ্ঠান হবে। ৩১ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারি প্রয়াগে কুম্ভে ফের সাধুদের ধর্ম-সংসদ বসবে। তার মধ্যে আইন না পাশ হলে আরও আক্রমণাত্মক হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন সাধুরা।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা অলোক কুমার বলেন, ‘‘আমরা ভেবেছিলাম, প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বেঞ্চেই মামলার নিষ্পত্তি হবে। এখন আদালতে কবে কী ভাবে মামলা গড়াবে, জানা নেই। তাই শীতকালীন অধিবেশনেই বিল এনে পাশ করুক সরকার। প্রয়োজনে যৌথ সংসদীয় অধিবেশন ডেকে। নতুন পৈতেধারী, মানসরোবর যাত্রী হিন্দুত্ববাদীও একে সমর্থন করুন।’’
বুঝতে অসুবিধা হয় না এই কটাক্ষ সরাসরি রাহুল গাঁধীর প্রতি, যিনি আজ সকালেই বলেছেন, ‘‘আমি মন্দিরে গেলেই বিজেপি খেপে যায়। ওরা মনে করে, একমাত্র ওদেরই অধিকার আছে যাওয়ার।’’
বিজেপি মনে করছে, ভোটের মুখে রামমন্দিরের হাওয়া উঠলে মেরুকরণ আরও বাড়বে। রাহুল গাঁধী যে ‘হিন্দু’ সাজার চেষ্টা করছেন, সেই প্রচারও এই হাওয়ায় উড়ে যাবে। বিজেপি নেতারাও মানছেন, সরকারের পক্ষে কোনও এক বিশেষ ধর্মের জন্য আইন পাশ করানোটা কঠিন। তবে গোটা বিষয়টি নির্ভর করছে, সাধু-সন্তরা আগামী দিনে কতটা হাওয়া তুলতে পারছেন, তার উপরে। একবার হাওয়া উঠলে বিরোধী নেতারাও চাপে পড়তে পারেন। হরিদ্বারের হংসদেবাচার্য বলেন, ‘‘যারাই এই বিলের বিরোধিতা করবে, সন্তরা উখড়ে ফেলবেন তাদের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy