Advertisement
০৫ মে ২০২৪

সংরক্ষণ ছেড়ে দিন সচ্ছলরা, ডাক দিল সঙ্ঘ

জাতপাতের ভিত্তিতে সংরক্ষণের যে ব্যবস্থা দেশে চালু রয়েছে, তার পর্যালোচনার দাবি তুলে বিহার ভোটের সময় নরেন্দ্র মোদীকে বেগ দিয়েছিলেন আরএসএসের প্রধান মোহন ভাগবত। আজ এরও এক ধাপ এগিয়ে সঙ্ঘ নেতৃত্ব জানিয়ে দিলেন, সমাজের সচ্ছল অংশকে সংরক্ষণের সুবিধা দেওয়াটা তাঁরা আদৌ সমর্থন করছেন না। জানালেন এমন একটি সময়ে যখন পাঁচটি রাজ্যে ভোট-যুদ্ধ সামনে।

ভাইয়াজি জোশী

ভাইয়াজি জোশী

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৬ ০৪:৪৮
Share: Save:

জাতপাতের ভিত্তিতে সংরক্ষণের যে ব্যবস্থা দেশে চালু রয়েছে, তার পর্যালোচনার দাবি তুলে বিহার ভোটের সময় নরেন্দ্র মোদীকে বেগ দিয়েছিলেন আরএসএসের প্রধান মোহন ভাগবত। আজ এরও এক ধাপ এগিয়ে সঙ্ঘ নেতৃত্ব জানিয়ে দিলেন, সমাজের সচ্ছল অংশকে সংরক্ষণের সুবিধা দেওয়াটা তাঁরা আদৌ সমর্থন করছেন না। জানালেন এমন একটি সময়ে যখন পাঁচটি রাজ্যে ভোট-যুদ্ধ সামনে। এবং জাঠ আন্দোলনের আঁচ পুরো নেভেনি।

রাজস্থানের নাগৌরে তিন দিনের আরএসএসের প্রতিনিধি সভার শেষ দিনে সঙ্ঘ-নেতা ভাইয়াজি জোশী ঘোষণা করেছেন, সচ্ছলদের উচিত সংরক্ষণের অধিকার ছেড়ে দেওয়া। সমাজের দুর্বল অংশকে সাহায্য করা উচিত তাঁদের। তার বদলে নিজেদের জন্য সংরক্ষণের দাবি করাটা আদৌ ঠিক পথ নয়। জাতপাতের ভিত্তিতে বৈষম্য সকলের কাছে চিন্তার বিষয়। হিন্দু সম্প্রদায় তার জন্য দায়ী। এটি দূর করা উচিত। বি আর অম্বেডকর সামাজিক ন্যায়ের কথা ভেবেই সংরক্ষণ করেছিলেন। সে কথা মাথায় রেখেই সংরক্ষণের দাবি করা উচিত।

প্রশ্ন উঠছে, ভাইয়াজিরা বিতর্ক উস্কে দিলেন বটে, কিন্তু নিছক আবেদনে কেউ কি সংরক্ষণের সুবিধা ছেড়ে দেবেন? রান্নার গ্যাসে ভর্তুকি ছেড়ে দেওয়ার আবেদন করে নরেন্দ্র মোদী মোটেই আশানুরূপ সাড়া পাননি। শেষ আয়ের উর্ধ্বসীমা বেঁধে দিতে দিয়েছে। আরএসএসের বক্তব্য নিয়ে বিজেপি আজ আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে সঙ্ঘের ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। সেখানেই তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, সঙ্ঘ পরিবারের মূল আদর্শগত অবস্থান নিয়ে বিজেপি বা কেন্দ্রীয় সরকার কোনও সমঝোতা করবে না।

বিজেপি-সঙ্ঘের এই অবস্থানে জাঠ আন্দোলনকারীদের মধ্যে কী প্রতিক্রিয়া হয়, সেটা দেখার বিযয়। ভোটের আগে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিই বা কী ভাবে একে খণ্ডন করে বা কাজে লাগায় সেটাও প্রশ্ন। কারণ সঙ্ঘ সংরক্ষণ-বিতর্ক উস্কে দেওয়ায় বিজেপির ভোট-ভাগ্যে তা বিরূপ প্রভাবই ফেলেছিল বিহারে। ভাগবতের মন্তব্যের ভরপুর ফায়দা নিয়েছিল বিজেপি-বিরোধী দলগুলি। লালুপ্রসাদ, নীতীশ কুমাররা প্রচার করেন, আরএসএস এবং বিজেপি দলিত ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণির বিরোধী। পরে মোদী তার সাফাই দিলেও শেষরক্ষা হয়নি।

কিন্তু আরএসএস সূত্রের মতে, বিজেপি ও তার সরকার কী অবস্থান নিতে চায়, সেটি সঙ্ঘের বিবেচনার বিষয় নয়। আরএসএস মনে করে, পিছিয়ে পড়া শ্রেণির সংরক্ষণের সুবিধা পাওয়াটা জরুরি। এবং সেটা তারা পাচ্ছে কি না তা নিয়ে
সমীক্ষা হওয়া উচিত। দলিতদের শিক্ষার মান আরও উন্নত হয়েছে। এখনও অনেক পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মানুষ রয়েছেন। আসল লোক যাতে সংরক্ষণের সুবিধা পায়, সেই ব্যাপারে নজর দেওয়া দরকার।

ভাইয়াজি জোশী আজ মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশের অধিকারের মতো স্পর্শকাতর বিষয় নিয়েও মুখ খুলেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘গোটা দেশে অসংখ্য মহিলা মন্দিরে যান। কিছু মন্দিরে তাঁদের ঢোকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। সংশ্লিষ্ট মন্দিরের পরিচালকদের মানসিকতা পাল্টানো দরকার।’’ একই সঙ্গে তাঁর মত, আন্দোলন নয়, আলোচনার পথেই এই সমস্যা মিটিয়ে নেওয়া উচিত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Conservation leave Conservation bhaiyyaji joshi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE