বিজেপি-তে যোগ দিলেন জিতিন প্রসাদ। ছবি টুইটার থেকে নেওয়া
কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিলেন পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক তথা এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক জিতিন প্রসাদ। বুধবার দিল্লিতে দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে বিজেপি-র দফতরে গিয়ে পীযুষ গয়ালের উপস্থিতিতে গেরুয়া শিবিরে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগদান করেন তিনি। এআইসিসি সূত্রে খবর, তাঁরাও জিতিনের দল ছাড়ার ইঙ্গিত আগেই পেয়ে গিয়েছিলেন। লোকসভা ভোটের পর তৎকালীন পর্যবেক্ষক গৌরব গগৈ কংগ্রেস সংসদীয় দলের মুখ্যসচেতকের দায়িত্ব পেলে, বাংলার সংগঠনের দায়িত্বে আনা হয়েছিল তাঁকে। গত দু’বছর তিনি পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক ছিলেন। বামফ্রন্ট-কংগ্রেস ও আইএসএফের মধ্যে জোট হয়েছিল তাঁর পর্যবেক্ষণেই। কিন্তু বাংলার ভোটে কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ইতিহাসে এই প্রথমবার কংগ্রেসের কোনও প্রতিনিধি নেই। ভোটে হারের পর থেকেই আর বাংলায় দেখা যায়নি তাঁকে। এমনকি দলের বরিষ্ঠ কোনও নেতার সঙ্গেও যোগাযোগ করেননি তিনি।
এআইসিসি-র অধুনা প্রয়াত কংগ্রেস নেতা জিতেন্দ্র প্রসাদের পুত্র জিতিন। ছাত্রাবস্থা থেকেই কংগ্রেস ঘরানার রাজনীতি শুরু করেন বাবার হাত ধরেই। উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে প্রভাব রয়েছে প্রসাদ পরিবারের। আগামী বছর উত্তরপ্রদেশের ভোটের আগে জিতিনের দলছাড়ার ঘটনা কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে জোর ধাক্কা। রাজধানীর রাজনীতির কারবারিদের আলোচনায়, উত্তরপ্রদেশের ব্রাহ্মণ ভোটের কথা মাথায় রেখেই জিতিনকে তাঁদের দলে নিয়েছে গেরুয়া শিবির। ২০০৯ সালে উত্তরপ্রদেশের ধুয়ারা লোকসভা থেকে কংগ্রেসের প্রতীকে সাংসদও হয়েছিলেন তিনি। দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম প্রতিমন্ত্রীও হয়েছিলেন। পরে তাঁর দফতর বদলে ইস্পাত মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর প্রায় দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা এই সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে। তাঁর দল ছাড়া প্রসঙ্গে এআইসিসি-র একাংশের মত, সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হন অজয়কুমার লল্লু। দায়িত্ব পেয়েই সংগঠনে রদবদলের কাজ শুরু করেন নতুন সভাপতি। কিন্তু তাঁর কাজ নিয়ে তীব্র আপত্তি ছিল জিতিনের। এআইসিসি-র মহাসচিব তথা উত্তরপ্রদেশের ভারপ্রাপ্ত নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধীকে একাধিক সাংগঠনিক রদবল নিয়ে একাধিক আপত্তির কথা জানালেও, তাতে কর্ণপাত করা হয়নি বলেই ঘনিষ্ঠমহলে অভিযোগ করেছিলেন জিতিন। তাই বাধ্য হয়েই দলত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এমনিতেই কংগ্রেসের মধ্যে বিক্ষুব্ধ জি-২৩ গোষ্ঠীর অন্যতম সদস্য বলেই পরিচিত ছিলেন উত্তরপ্রদেশের এই নেতা। পর্যবেক্ষকের বিজেপি-তে যোগদান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা তথা রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য। তিনি বলেছেন, ‘‘তিনি যদি সত্যিই বিজেপি-তে যোগদান করেন তার দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় পশ্চিমবঙ্গের ভোটে আমাদের যে ভরাডুবি হয়েছে। ফলাফলে বিপর্যয় হয়েছে, তার পিছনে ওই নেতার হাত ছিল। এই ধরনের লোক যদি পর্যবেক্ষক হন, সেই রাজ্যের সাংগঠনিক উন্নতি করা কখনওই সম্ভব নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy