একই কলেজ, একই বিভাগ। সেই সূত্রে দুই ছাত্র-ছাত্রীর বন্ধুত্ব। একটি সেমেস্টারে ছেলেটি অকৃতকার্য হন। মেয়েটি তাঁর চেয়ে একটি সেমেস্টার এগিয়ে যান। সেই ‘সিনিয়র’কেই কলেজের পুরুষদের শৌচাগারে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করলেন ছাত্রটি। এমনই অভিযোগ উঠল বেঙ্গালুরুর একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের পড়ুয়ার বিরুদ্ধে। ‘নির্যাতিতা’র দাবি, তাঁর উপর অত্যাচারের সময় একটি ফোন এসেছিল। কিন্তু তাঁর মোবাইল কেড়ে নেন অভিযুক্ত।
বেঙ্গালুরুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ঘটনায় দায়ের হওয়া এফআইআর থেকে জানা যাচ্ছে, ‘নির্যাতিতা’ এবং অভিযুক্ত আগে একই ক্লাসেই পড়তেন। অভিযুক্তের বয়স ২১ বছর। ‘নির্যাতিতা’রও তা-ই। দক্ষিণ বেঙ্গালুরু এলাকায় একটি বেসরকারি কলেজের সপ্তম সেমেস্টারের ছাত্রীটি জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ষষ্ঠ সেমেস্টারের ছাত্র। আগে তাঁরা সহপাঠী ছিলেন। সেই সূত্রে কথাবার্তা হত। নোট ইত্যাদি দেওয়া-নেওয়া হত। কিন্তু সেই প্রাক্তন সহপাঠীই গত ১০ অক্টোবর তাঁকে কলেজের শৌচাগারে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন। শুক্রবার হনুমন্থনগর থানায় তিনি অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনাক্রমে গ্রেফতারের পর আদালতে হাজির করানো হলে ধৃতের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
নির্যাতিতার বয়ান অনুযায়ী, হালে তাঁকে বিরক্ত করছিলেন প্রাক্তন সহপাঠী। গত ১০ অক্টোবর দুপুরে বার বার ফোন করেন তাঁকে। খানিক বিরক্ত হয়েই মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে কলেজ ভবনের আট তলায় যান তিনি। কিন্তু তাঁকে দেখা মাত্রই জড়িয়ে ধরে চুম্বনের চেষ্টা করেন অভিযুক্ত। তিনি বাধা দেন। কিন্তু অভিযুক্তের সঙ্গে গায়ের জোরে পারেননি। এর পর তাঁকে সাত তলায় পুরুষদের শৌচালয়ে টেনে নিয়ে যান অভিযুক্ত।
এফআইআরে বলা হয়েছে, ঘটনার দিন সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটে কলেজে ঢোকেন ছাত্রী। ফোনে কথা হয়েছিল অভিযুক্তের সঙ্গে। ছাত্রীটি তাঁকে জানিয়েছিলেন, দুপুরে দেখা করবেন। তাঁর বেশ কিছু জিনিস রাখা ছিল ছেলেটির কাছে। সেগুলো তিনি ফেরত নেবেন। ছেলেটিও ‘হ্যাঁ’ বলেছিলেন।
‘নির্যাতিতা’র অভিযোগ, মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে তাঁকে বার বার ফোন করতে থাকেন অভিযুক্ত। তিনি একটি কাজে ব্যস্ত বলে জানান। তার পরেও ফোন করতে থাকেন অভিযুক্ত। শেষমেশ আট তলায় আর্কিটেকচর ডিপার্টমেন্টের সামনে তাঁদের দেখা করতে যান। সেখানে তাঁকে চুম্বনের চেষ্টা করেন অভিযুক্ত। বাধা দিলে ফল হয় আরও ‘ভয়ানক।’
শৌচাগারে নিয়ে গিয়ে ছাত্রীটিকে ‘অত্যাচারের সময়’ তাঁর মোবাইল বেজে উঠেছিল। সেটি তাঁর হাত থেকে ছাড়িয়ে নেন অভিযুক্ত। ছাত্রীটি জানিয়েছে, ওই ঘটনার পর কোনও রকমে বাড়ি ফেরেন তিনি। তার পর থেকে মানসিক ভাবে তিনি বিধ্বস্ত ছিলেন। খানিক থিতু হয়ে বিষয়টি বাবা-মাকে জানান। পুলিশ ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস)-র ৬৪ ধারায় (ধর্ষণ) মামলা রুজু করেছে। ‘নির্যাতিতা’র ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হচ্ছে। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।