Advertisement
E-Paper

কী ভাবে হল ধর্ষণ, চার বছরের শিশু জানাল বিচারককে

দিল্লির দ্বারকার বেসরকারি ম্যাক্সফোর্ট স্কুলের পড়ুয়া ৪ বছরের মেয়েটি জানিয়েছে, টিফিন শেষ করে হাত না ধুয়েই তাকে বাথরুমে নিয়ে যায় তার সহপাঠী। সেখানে নিয়ে গিয়ে তার যৌনাঙ্গে হাত দেয়। সেই সময় বাথরুমের কাছে কোনও দিদি (আয়া) ছিলেন না।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৭ ২১:০৪
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

কী ভাবে তাকে যৌন নির্যাতন করেছিল তার স্কুলের সহপাঠী, ৪ বছর বয়সের মেয়েটি তা সবিস্তার জানাল পুলিশকে। ঘটনার একই বিবরণ দিল মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেটকেও। বৃহস্পতিবার।

দিল্লির দ্বারকার বেসরকারি ম্যাক্সফোর্ট স্কুলের পড়ুয়া ৪ বছরের মেয়েটি জানিয়েছে, টিফিন শেষ করে হাত না ধুয়েই তাকে বাথরুমে নিয়ে যায় তার সহপাঠী। সেখানে নিয়ে গিয়ে তার যৌনাঙ্গে হাত দেয়। সেই সময় বাথরুমের কাছে কোনও দিদি (আয়া) ছিলেন না। ক্লাস রুমে ছিলেন না কোনও শিক্ষিকাও। সেখানে নিয়ে গিয়ে মেয়েটির প্যান্ট খোলায় ওই সহপাঠী। তার পর মেয়েটির যৌনাঙ্গে আঙ্গুল ঢুকিয়ে দেয়। তার পর একটা পেন্সিল ছুলে নিয়ে সেটাও ঢুকিয়ে দেয় মেয়েটির যৌনাঙ্গে। মেয়েটি জানিয়েছে, দারুণ যন্ত্রণায় সে ওই সময় চিৎকার করে উঠেছিল। কিন্তু স্কুলের আয়া বা কোনও শিক্ষিকাকেই সে দেখতে পায়নি। ক্লাসরুমের ভিতরে এবং শৌচাগারে নিয়ে গিয়ে একাধিক বার ওই কাণ্ড ঘটিয়েছে ছেলেটি। মেয়েটি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু, ছেলেটির সঙ্গে পেরে ওঠেনি।

আরও পড়ুন:

অধস্তনের মেয়েকে ধর্ষণ, গ্রেফতার ভারতীয় সেনার কর্নেল

নারী সুরক্ষায় দেশের ৮ শহরে বসবে সিসিটিভি, পরিকল্পনা কেন্দ্রের

মেয়েটির মা জানিয়েছেন, শুক্রবারও রোজকার মতো কিন্ডারগার্টেন স্কুলে গিয়েছিল চার বছরের মেয়েটি। কিন্তু, বাড়ি ফিরেছিল যৌনাঙ্গে যন্ত্রণা নিয়ে। বাড়িতে এসে মেয়ে তাঁকে বলেওছিল সে কথা। কিন্তু, প্রথমে তিনি বিষয়টিকে অতটা গুরুত্ব দেননি। পরের দিন যন্ত্রণা বাড়তে থাকায় মেয়েকে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারেন, স্কুলে এক সহপাঠী তার যৌনাঙ্গে আঙুল এবং পেন্সিল দিয়ে বার বার আঘাত করেছে! রাতে মেয়েটি বাড়িতে খুব কান্নাকাটি করছিল। মায়ের কাছে অয়েন্টমেন্ট চেয়েছিল। কেটে, ছড়ে গেলে মা অয়েন্টমেন্ট লাগান বলে ভেবেছিল, ওটা লাগালেই সেরে যাবে। কিন্তু মা যখন তাঁর মেয়ের যৌনাঙ্গে সেই অয়েন্টমেন্ট লাগাতে যান, তখন দেখেন, সেখানটা লাল হয়ে গিয়েছে। ফুলে গিয়েছে। অয়েন্টমেন্ট লাগাতেই তাঁর মেয়ে চিৎকার করে কেঁদে ওঠে। সোমবারই মেয়েকে নিয়ে স্কুল আর পুলিশের কাছে যান তার মা। সেখানে পুলিশকে দেখানো হয় মেয়েটির যৌনাঙ্গের ক্ষতচিহ্ন। স্কুলের কোথায় তার ওপর অত্যাচার চালানো হয়েছিল, মেয়েটি সে সবও দেখায় পুলিশকে। স্কুল কর্তৃপক্ষকেও।

এর পর মেয়েকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যান বাবা-মা। চিকিৎসক জানান, ওই নাবালিকার যৌনাঙ্গে বার বার আঘাতের ফলে সেখানে ক্ষত তৈরি হয়েছে। যন্ত্রণার কারণ সেটাই। তিনি ওষুধপত্রও দেন।

স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন বাবা-মা। মায়ের অভিযোগ, স্কুলের কোঅর্ডিনেটরকে বার বার জানানো সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অভিযুক্ত ৪ বছর বয়সী ছেলেটিকে স্কুল থেকে বহিস্কারের দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা।

স্কুল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, অভিযুক্ত শিশুর বয়স চার বছর বলেই বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিভ্রান্ত পুলিশও।

চার বছরের শিশু কী ভাবে এমনটা করতে পারে?

মনোবিদদের মতে, কৌতূহলেই ওই ছাত্র এমন কাজ করেছে। কারণ, এই বয়সে কোনও শিশুর যৌন বোধ তৈরি হওয়ার কথা নয়।

মনোরোগ বিশেষজ্ঞ কেদার বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘আমার যত দূর মনে হয়, কৌতূহলের কারণেই ওই ছেলেটি এমনটা করেছে। হতে পারে, সে কোনও জায়গায় কাউকে এমনটা করতে দেখেছে। সেটা তার বাবা-মা হোক বা অন্য কেউ। আবার এমনটাও হতে পারে, বড় কেউ তার পাশে বসে পর্নোগ্রাফি দেখছিলেন। শিশুটি তা দেখেছে। আর সেটাই তার মনে কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে।’’

তাঁর মতে, চার বছর বয়সে সাধারণত শিশুদের যৌনবোধ তৈরি হয় না। তিনি বলেন, ‘‘অনেক শিশুর ক্ষেত্রে সময়ের আগেই যৌনবোধ তৈরি হয়। কিন্তু, আমার এত দিনকার অভিজ্ঞতায় চার বয়সে তেমনটা হয়েছে বলে দেখিনি। শুনিওনি।’’

পুলিশের কাছে ওই ছেলে শিশুটির নামে যৌন নিগ্রহের মামলা দায়ের করেছে নাবালিকার পরিবার। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ ধর্ষণের একটি মামলা রুজু করেছে। কিন্তু অভিযুক্তের বয়স যে হেতু খুবই কম, তাই এই বিষয়ে কী পদক্ষেপ করা হবে তা নিয়ে ধন্দে রয়েছে পুলিশ।

দিল্লি পুলিশের মুখপাত্র দীপেন্দ্র পাঠক বলেছেন, ‘‘ভারতীয় দণ্ডবিধি সাত বছরের কম বয়সী শিশুদের শাস্তির ক্ষেত্রে কিছুটা সুরক্ষা দেয়। আমরা সেই ক্ষেত্রগুলো খতিয়ে দেখছি। পাশাপাশি, অতি স্পর্শকাতর এই বিষয়টিকে ভীষণ গুরুত্ব দিয়েও দেখা হচ্ছে।’’

Delhi Rape Maxfort School ম্যাক্সফোর্ট স্কুল
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy