আমিই কি শুধু গুড মর্নিং বলে যাব...
তুমি তো এক বারও বলো না…
রাতে শুধু তোমারই স্বপ্ন দেখি। একটু তো ফোনও করতে পারো!...
এই হোয়াট্সঅ্যাপ মেসেজ ঘিরেই এখন তোলপাড় ছত্তীসগঢ়ে। দাবি করা হচ্ছে, এই হোয়াট্সঅ্যাপ চ্যাট দন্তেওয়াড়ার ডেপুটি পুলিশ সুপার (ডিএসপি) কল্পনা বর্মা এবং ব্যবসায়ী দীপক টন্ডনের। ছত্তীসগঢ়ে এই দু’জনের সম্পর্ক এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। কারণ, ব্যবসায়ী দীপক অভিযোগ তুলেছেন তাঁকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে দু’কোটি টাকা, হিরের আংটি, সোনার হার এবং একটি বিলাসবহুল গাড়ি নিয়েছেন ডিএসপি কল্পনা। যদিও সেই দাবি এবং অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ডিএসপি। দু’জনের সম্পর্কের এই টানাপড়েনের মাঝে বেশ কয়েকটি হোয়াট্সঅ্যাপ চ্যাট প্রকাশ্যে চলে এসেছে (যদিও তার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)।
হোয়াট্সঅ্যাপ চ্যাট এ রকম—
‘‘তোমাকে বার বার বারণ করেছিলাম। আমি অফিসার্স মেসে থাকি।
কেউ দেখে নেবে। বিশ্বাস বলে কি কোনও বস্তু নেই তোমার মধ্যে?
আমাকে কি ফাঁসানোর ইচ্ছা আছে তোমার? বিট্টু দেখে নিয়েছে।
বাবাও বলছিল, রাতে এত ভিডিয়ো কলে কার সঙ্গে কথা বলিস?
কেন তুমি ফোন করো না? স্বপ্নে শুধু তোমাকেই দেখি।’’
বিভিন্ন সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, এটি ব্যবসায়ী টন্ডনকে লেখা ডিএসপি কল্পনার হোয়াট্সঅ্যাপ মেসেজ। সম্পর্কে ফাটল ধরতেই সেই চ্যাট টন্ডন প্রকাশ্যে এনেছেন বলেও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে। যখন এই হোয়াট্সঅ্যাপ মেসেজ নিয়ে চতুর্দিকে আলোচনা চলছে, ডিএসপি কল্পনা দাবি করেছেন, এটি সম্পূর্ণ ভুয়ো। তাঁর হোয়াট্সঅ্যাপ মেসেজ নয়। যে বা যাঁরা এই কাজ করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন তিনি।
আরও একটি হোয়াট্সঅ্যাপ চ্যাটে লেখা—
স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে দেব?...
দিয়ে দাও…
সত্যি বলছি, ডিভোর্স দিয়ে দেব…
দিয়ে দাও, দিয়ে দাও…। তবে আমার নাম যেন কোনও ভাবেই প্রকাশ্যে না আসে…।
আরও একটি মেসেজে লেখা— শুধু তোমারই অভাব বোধ করছি। টাকা তো আসবে-যাবে…।
উত্তর আসে— আমি তো রয়েইছি। সারাজীবন তোমার সঙ্গে থাকব…।
বিভিন্ন সূত্রের দাবি, এই হোয়াট্সঅ্যাপ চ্যাট টন্ডনের স্ত্রী বরখার হাতে আসে। আর সেখান থেকেই স্বামী দীপকের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কথা জানতে পারেন। আর তার পরই শুরু হয় অশান্তি। আর তার পর থেকেই দীপকের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াতে শুরু করেন ডিএসপি। পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন যে, ডিএসপি তাঁকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে দু’কোটি টাকা, হিরের আংটি, সোনার হার, গাড়ি হাতিয়ে নিয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, তাঁদের দু’জনের হোয়াট্সঅ্যাপ চ্যাটের স্ক্রিনশটও প্রমাণ হিসাবে তুলে দিয়েছেন।
কী ভাবে দু’জনের আলাপ, ঘনিষ্ঠতা এবং প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে?
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ছত্তীসগঢ়ের মহাসমুন্দে প্রথম পোস্টিং হয় ডিএসপি কল্পনার। সাল ২০২১। সেই সময় কয়েক জন বন্ধুকে নিয়ে হোটেল ব্যবসায়ী দীপকের হোটেলে ওঠেন। দীপকের সঙ্গে কল্পনার এক বন্ধুর আলাপ ছিল। তাঁর সূত্র ধরেই দীপকের সঙ্গে কল্পনার পরিচয়। দু’জনের মধ্যে ফোন নম্বরও আদানপ্রদান হয়। পরিচয়ের কয়েক দিন পরই দীপককে ফোন করেন কল্পনা। তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। দেখা-সাক্ষাৎও শুরু হয়। সেই থেকে দু’জনের প্রেমের সম্পর্কের সূত্রপাত। পরবর্তী কালে রায়পুরে বদলি হয়ে আসেন কল্পনা। ফলে দীপক এবং কল্পনার মধ্যে আরও ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। দীপকের বাড়িতে যাতায়াতও শুরু হয় কল্পনার।