রাজধানী দিল্লির অদূরে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক পদার্থ এবং অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করেছে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ। সেখানকার এক চিকিৎসককে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই বিস্ফোরকের হদিস পাওয়া গিয়েছে। চিকিৎসক আদিল আহমেদ র্যাদারকে কিছু দিন আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। অভিযোগ, তিনি শ্রীনগরের রাস্তায় দেওয়ালে দেওয়ালে পাকিস্তানি জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদের সমর্থনে পোস্টার সাঁটছিলেন। তিনিই হরিয়ানার ফরিদাবাদে বিস্ফোরক নিয়ে গিয়েছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
হরিয়ানা পুলিশ সোমবার জানিয়েছে, ফরিদাবাদ থেকে যে ৩৬০ কেজি বিস্ফোরক মিলেছে, তা অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট হতে পারে। এই রাসায়নিক আরডিএক্স তৈরির অন্যতম প্রধান উপাদান। এ ছাড়া, বোমার একাধিক টাইমার উদ্ধার করেছে পুলিশ। পাওয়া গিয়েছে একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি, বারুদ, আটটি বড় সুটকেস, চারটি ছোট সুটকেস, ২৪টি রিমোট। ওয়াকিটকি এবং বেশ কিছু বৈদ্যুতিক তারও বাজেয়াপ্ত করেছেন তদন্তকারীরা। তবে তার মধ্যে আরডিএক্স বা একে৪৭ রাইফেল ছিল না। আদিলই পুলিশকে জানিয়েছেন, ফরিদাবাদের কোথায় খুঁজলে এই বিস্ফোরক এবং অস্ত্রশস্ত্র পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন:
আদিল দক্ষিণ কাশ্মীরের বাসিন্দা। অনন্তনাগের গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র রেসিডেন্ট ছিলেন ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত। কিছু দিন আগে শ্রীনগরের রাস্তা ছেয়ে গিয়েছিল জইশ গোষ্ঠীকে সমর্থনকারী পোস্টারে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ঘেঁটে পুলিশ আদিলকে চিহ্নিত করে। তাঁকেই ওই সমস্ত পোস্টার দেওয়ালে সাঁটতে দেখা গিয়েছিল। ন’দিনের মাথায় গত ৬ নভেম্বর আদিলকে গ্রেফতার করা হয় উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরের অম্বালা রোডের একটি হাসপাতাল থেকে। এ ছাড়া, অনন্তনাগের মেডিক্যাল কলেজে আদিলের নামে যে লকার ছিল, সেখান থেকেও পুলিশ একটি একে৪৭ রাইফেল বাজেয়াপ্ত করেছে। অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। জেরায় প্রকাশ্যে আসে ফরিদাবাদের বিস্ফোরকের খবর।
পুলিশ জানতে পেরেছে, দিল্লির কাছাকাছি বিস্ফোরক মজুত করার জন্য মুজ়াম্মিল শাকিল নামের আর এক কাশ্মীরি চিকিৎসকের সাহায্য নিয়েছিলেন আদিল। মুজ়াম্মিল পুলওয়ামার বাসিন্দা হলেও ফরিদাবাদের একটি হাসপাতালে কর্মরত। সেখান থেকে কিছু দিন আগে তাঁকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। আপাতত দু’জনেই রয়েছেন কাশ্মীর পুলিশের হেফাজতে। কী ভাবে নিরাপত্তারক্ষীদের নজর এড়িয়ে রাজধানীর এত কাছাকাছি বিস্ফোরক বয়ে আনা হল, আর কারা এর সঙ্গে জড়িত, জইশ জঙ্গিদের কোনও হাত রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।