দীর্ঘ ৪০ দিন ধরে আমেরিকার সরকারে অচলাবস্থা (শাটডাউন) চলছে। বন্ধ হয়ে রয়েছে একাধিক দফতর। আপৎকালীন পরিষেবা চালু থাকলেও সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মীরা বেতন পাচ্ছেন না। অবশেষে এই পরিস্থিতি কাটাতে পদক্ষেপ করা হল। মার্কিন সেনেটে একটি প্রস্তাবিত বিল নিয়ে শুরু হল ভোটাভুটির প্রস্তুতি।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, রবিবার রাতেই (স্থানীয় সময়) প্রস্তাবিত বিল নিয়ে ভোটাভুটি হতে পারে। স্বল্পমেয়াদি তহবিল একত্রিত করার জন্য ওই বিল সংশোধন করা হবে। এতে ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত মার্কিন সরকারের খরচ চালানো যাবে। রিপাবলিকানদের পাশাপাশি অন্তত আট জন ডেমোক্র্যাট এই প্রস্তাবকে সমর্থন করতে পারেন। সেনেটে বিল পাশ করানোর পক্ষে তা যথেষ্ট। যদিও সেনেটের পর মার্কিন হাউস অফ রিপ্রেজ়েন্টেটিভ্স-এও বিলটিকে পাশ করানো দরকার। তার পর তা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের টেবিলে যাবে। তাঁর স্বাক্ষরের পরেই অচলাবস্থা কাটতে পারে। এখনও এতে বেশ কিছু দিন সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
অচলাবস্থা কাটাতে নতুন প্রস্তাবটির মধ্যস্থতা করেছেন নিউ হ্যাম্পশায়ারের দু’জন ডেমোক্র্যাট সেনেটর ম্যাগি হাসান এবং জিন শাহিন। এ ছাড়া, মধ্যস্থতাকারীদের মধ্য রয়েছেন এক নির্দল সেনেটর। ডেমোক্র্যাটদের কেউ কেউ এই প্রস্তাবের বিরোধিতাও করেছেন প্রকাশ্যে। ফলে ‘শাটডাউন’ নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা রয়েছে।
‘শাটডাউন’ কী
প্রতি অর্থবর্ষে সরকারের বিভিন্ন দফতরে কাজ চালানোর জন্য মার্কিন কংগ্রেসকে অর্থ বরাদ্দ করতে হয়। অর্থবর্ষ শুরু হয় ১ অক্টোবর থেকে। এই সময়ের মধ্যে সেনেট সদস্যেরা একমত হয়ে ব্যয়বরাদ্দ চূড়ান্ত করতে পারেননি। ফলে ১ অক্টোবর থেকে ট্রাম্প প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ১০০ সদস্যের মার্কিন সেনেটে রিপাবলিকানদের সংখ্যা ৫৩। যে কোনও বিল পাশ করাতে অন্তত সাত জন ডেমোক্র্যাটের সমর্থন তাঁদের প্রয়োজন হয়। সরকারি তহবিল সংক্রান্ত বিলে তা হয়নি। সেই কারণে সেনেটের অনুমোদনও মেলেনি। এর প্রভাব পড়েছে স্বাস্থ্য, পরিবহণ থেকে শুরু করে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে। বিমান চলাচলেও সমস্যা হচ্ছে ‘শাটডাউন’-এর কারণে। বিমানকর্মীরা বেতন পাচ্ছেন না। বহু বিমান বাতিল করা হয়েছে। কমিয়ে আনা হয়েছে আসনসংখ্যা। এই পরিস্থিতির জন্য ডেমোক্র্যাটদের দিকেই আঙুল তুলেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। আমেরিকায় এর আগেও ‘শাটডাউন’ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে এটিই দীর্ঘতম।