টিকিট সংখ্যার সর্বোচ্চ সীমা পেরিয়ে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও রমরমিয়ে চলছিল টিকিট বিক্রি। তা-ই কি কাল হল নয়াদিল্লিতে? এ বার দিল্লি স্টেশনের পদপিষ্টের ঘটনায় এমনটাই প্রশ্ন তুলল দিল্লি হাই কোর্ট।
বুধবার উচ্চ আদালতে ওই বিষয়ক একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি ছিল। সেখানেই বিচারপতি দেবেন্দ্র উপাধ্যায় এবং বিচারপতি তুষার রাও গেদেলার বেঞ্চ রেলকে প্রশ্ন করে, কেন বিক্রয়যোগ্য টিকিটের সংখ্যা সর্বোচ্চ সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও টিকিট বিক্রি করা হয়েছিল? দিল্লির ঘটনার পরপরই তদন্ত পরিচালনার জন্য উত্তর রেলের বাণিজ্যিক ও নিরাপত্তা বিভাগের দুই শীর্ষস্থানীয় কর্তাকে নিয়ে একটি কমিটি গড়ে দিয়েছিল রেল মন্ত্রক। এ ছাড়াও, রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছিল আরপিএফ-সহ আরও একাধিক বিভাগকে। সেই তদন্তেই উঠে এসেছে অতিরিক্ত টিকিট বিক্রির তথ্য। এর পরেই রেল আইনের ৫৭ এবং ১৫৭ ধারার কথা উল্লেখ করে আদালত বলে, একটি বগিতে সর্বোচ্চ কত জন যাত্রী তোলা যাবে, তা পূর্বনির্ধারিত। এর হেরফের করা যায় না। জবাবে ভারতীয় রেলের তরফে কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, তিনি কোনও পক্ষ নিচ্ছেন না। তবে তিনিও সহমত যে, দিল্লির ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। কোনও রকম আর্থিক সাহায্যই এই ক্ষতি পূরণ করতে পারে না।
আরও পড়ুন:
গত ১৫ জানুয়ারি নয়াদিল্লি স্টেশনে কুম্ভমেলার পুণ্যার্থীদের ভিড়ে পদপিষ্টের পরিস্থিতি তৈরি হয়। তাতে মহিলা ও শিশু-সহ মোট ১৮ জন যাত্রীর মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় দিল্লি হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন আইনজীবী আদিত্য ত্রিবেদী। তাঁর দাবি, নয়াদিল্লির ঘটনার জন্য কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থা, চরম অবহেলা এবং প্রশাসনের ব্যর্থতাই দায়ী। এ নিয়ে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টেও দায়ের হয়েছিল জনস্বার্থ মামলা। সেখানে মামলাকারী বিশাল তিওয়ারির দাবি ছিল, ভবিষ্যতে এই ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে কিছু গাইডলাইন তৈরি করা উচিত। তাঁর আর্জি, গাইডলাইন তৈরির জন্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে দিক শীর্ষ আদালত। এর আগে প্রয়াগরাজের কুম্ভমেলায় মৌনী অমাবস্যার শাহিস্নানের দিনও ভিড়ের চাপে পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেছিল। ওই ঘটনাতেও অন্তত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। মামলাকারীর আবেদনপত্রে ছিল কুম্ভমেলার পদপিষ্টের ঘটনাও। তাঁর বক্তব্য, ভিড় নিয়ন্ত্রণে সব রকম প্রযুক্তি থাকার পরেও কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না। বরং প্রযুক্তি এবং যাবতীয় সুযোগসুবিধা কেবল ভিআইপিদের জন্যই রাখা হচ্ছে।