প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের দারুণ মিল রয়েছে একটা জায়গায়। দু’জনেই টেক-স্যাভি। যতটা সময় পারেন, থাকতে ভালবাসেন ফেসবুক, টুইটারে।
আবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের অমিলও রয়েছে একটা জায়গায়। নিজেই নিজের টুইটার অ্যাকাউন্ট ‘হ্যান্ডল’ করেন আপাদমস্তক ব্যস্ত বিদেশমন্ত্রী। আর হলেনই বা বিদেশমন্ত্রী, প্রায় সকলকেই সুষমা জবাব দেন টুইটারে। থাকতে ভালবাসেন আমজনতার নাগালেই।
কিন্তু কেন? কেন টুইটারে চাইলেই, জবাব পাওয়া যায় সুষমার? সেই জবাবটাও শেষমেশ শনিবার রাতে দিয়েছেন সুষমা। বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী (মোদী) তাঁর বিদেশনীতিতে যে আমূল পরিবর্তন এনেছেন, সেটাই আমাকে টুইটারে সপ্রতিভ হতে উৎসাহিত করেছে। প্রেরণা জুগিয়েছে।’’
প্রধানমন্ত্রীর বিদেশনীতি নিয়ে ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় রিসার্ট ফাউন্ডেশনের একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে শনিবার দিল্লিতে সুষমা বলেছেন, ‘‘আগে বিশ্ব সভায় আমরা (ভারত) সকলের কথা শুনতাম। এখন সকলে আমাদের কথা শোনে। এটাই বিদেশনীতির আমূল পরিবর্তন।’’
সুষমার ইঙ্গিত, এখান থেকেই তিনি টুইটারে সকলের কথা শোনা আর সকলের সঙ্গে যোগাযোগের প্রেরণা পেয়েছেন।
বিদেশনীতির আরও একটি বড়সড় রদবদলের কথা বলেছেন বিদেশমন্ত্রী। সুষমার কথায়, ‘‘এখন বিদেশ-বিভুঁইয়ে কোনও ভারতীয় বিপদে-আপদে পড়লে এটুকু ভেবে ভরসা পান যে, ভারত সরকার তাঁর পাশে দাঁড়াবে বন্ধুর মতো, পরিবারের মতো। এটা অন্যান্য দেশে থাকা ভারতীয়দের মনোবল বাড়িয়ে তুলেছে। তাঁদের শক্তি জুগিয়েছে। বিদেশ-বিভুঁইয়ে বিপদে পড়া ভারতীয়দের এখন নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে খুঁজে বের করে বিদেশমন্ত্রক। তাঁদের উদ্ধার করে। তাঁদের দিকে দ্রুত, দ্বিধাহীন ভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। আগে কখনওই এ সব ব্যাপার বিদেশমন্ত্রকের কাছে অগ্রাধিকার পেত না।’’
সুষমা বুঝিয়ে দিয়েছেন, টুইটারে যে সহমর্মিতায় তিনি অন্যদের প্রশ্নের জবাব দিতে দ্বিধা বা দেরি করেন না, সেই সহমর্মিতার পাঠ নিয়েছেন তিনি প্রধানমন্ত্রীর নতুন বিদেশনীতি থেকেই।
বিদেশনীতির আরও একটি বড় পরিবর্তনের উল্লেখ করেছেন সুষমা একেবারে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে উদ্ধৃত করেই। বলেছেন, ‘‘এটা তো প্রধানমন্ত্রী আকছারই বলে থাকেন যে, আগে বিদেশমন্ত্রক (মন্ত্রকের কর্তারা) শুধু স্যুট-বুট পরে ডিনার খেয়ে আর খাইয়ে চলত। কিন্তু এখন তা নিজের পায়ে ভর দিয়ে হাঁটে। এগিয়ে যায় কল্যাণমূলক কাজে, স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে।’’
এর পরেই স্মিত হেসে সুষমার মন্তব্য, ‘‘বুঝতে পারলেন তো, কেন আমি সব সময় জবাব দিই ফেসবুক, টুইটারে?’’
সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদেশমন্ত্রী কতটা সোশ্যাল থাকেন, তার একটা হাতেগরম ঘটনা ঘটেছে গতকালই। এক বাবা তাঁর ছোট্ট মেয়ের সাজগোজ করা একটা ছবি সুষমাকে পাঠিয়েছিলেন টুইটারে।

বিদেশমন্ত্রীর ‘প্রোটকল-ঘেরাটোপ’ ভেঙে সুষমা ঝটিতি জবাব দিয়েছেন শিশুকন্যাটিকে, ‘‘ও! আই লাভ ইয়োর জ্যাকেট।’’
আরও পড়ুন- স্বাধীনতার ‘শুভেচ্ছা’! ওয়াঘায় মিষ্টি দিয়ে পুঞ্চে গোলাগুলি পাকিস্তানের