বিয়ের ছ’দিন পরেই মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে জঙ্গি হামলায় নৌসেনা আধিকারিক স্বামীকে হারিয়েছেন হিমাংশী নারওয়াল। বেঁচে থাকলে তাঁর স্বামী বিনয় নারওয়াল আজ সাতাশ বছরে পড়তেন। বিনয়ের স্মৃতিতে তাঁর বাড়ির শহরে আয়োজিত একটি রক্তদান শিবিরে আজ হিমাংশী বলেন, “আমার স্বামী হামলার শিকার হয়েছেন, এটা আমার পরিবার ও গোটা দেশবাসীর জন্যই দুঃখজনক। তবে, দয়া করে এই হামলার জন্য পুরো মুসলিম সম্প্রদায় বা কাশ্মীরি জনগণকে দায়ী করবেন না। সাধারণ কাশ্মীরিরা আমাদের অনেক সহায়তা করেছেন, পাশে থেকেছেন।”
হরিয়ানার কর্নালের ছাব্বিশ বছর বয়সি লেফটেন্যান্ট বিনয় নারওয়াল ও ২৪ বছর বয়সি গবেষিকা হিমাংশীর বিয়ে হয়েছিল গত ১৬ এপ্রিল। মধুচন্দ্রিমায় তাঁরা কাশ্মীরের পহেলগামে গিয়েছিলেন। ২২ এপ্রিল সেখানে জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হন বিনয়। স্বামীর মৃতদেহের পাশে বরফের মতো শীতল হিমাংশীর বসে থাকার ছবি নাড়িয়ে দিয়েছিল পুরো দেশকে। আজ হিমাংশী বলেছেন, “আমি শান্তি চাই, হিংসা আর বিদ্বেষ নয়। আমি চাই, অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।” তাঁর মতে, ধর্মীয় ও ভৌগোলিক পরিচয় দিয়ে কাউকে ছোট করা উচিত নয়। এই হামলা সাম্প্রদায়িক উদ্দেশ্যে করা হলেও, তা সমাজকে বিভক্ত করার চেষ্টা মাত্র। তিনি বলেন, “হাসপাতালে আমার স্বামীর চিকিৎসার সময়ে সাধারণ কাশ্মীরিরা রক্তদান করেছেন। পুলিশ, স্থানীয় মানুষ এগিয়ে এসেছেন। তাঁরাই আসল কাশ্মীর। আমি ও আমার পরিবার তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ।”
এ দিকে আজ ওয়াঘা সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে ফেরত যাওয়ার জন্য জম্মু থেকে বাসে উঠে পড়েছিলেন মিনাল খান। ভারতের এক সিআরপি জওয়ানের স্ত্রী মিনালকে এ দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তবে একটি কাশ্মীরি ইংরেজি দৈনিক তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে, মিনালের আইনজীবী তথা স্থানীয় বিজেপি নেতা অঙ্কুর শর্মা একেবারে শেষ মুহূর্তে স্থানীয় এক আদালতের একটি নির্দেশ নিয়ে হাজির হন। যেখানে বলা হয়েছে, আপাতত ভারত ছেড়ে পাকিস্তানে ফিরে যেতে হবে না ওই তরুণীকে।
গত কাল নতুন একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারও জানিয়েছে, আপাতত পাক নাগরিকদের দেশে ফেরার মেয়াদ পরবর্তী ঘোষণা পর্যন্ত বাড়ানো হচ্ছে। মিনাল অবশ্য চান পাকাপাকি ভাবে এ দেশে থেকে যেতে। পহেলগামে নিরীহ পর্যটকদের উপরে জঙ্গি হামলার ঘটনার নিন্দা করে ওই তরুণী বলেছেন, “পহেলগামে যে বর্বরোচিত কায়দায় নিরীহ মানুষদের মেরে ফেলা হয়েছে, তার কড়া নিন্দা করি। ষড়যন্ত্রকারীদের কঠিনতম শাস্তি চাই।” সংবাদ সংস্থা
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)