Advertisement
০৭ মে ২০২৪

ভাইপোর ‘দাদাগিরি’ টিকবে কি

এক দিকে ‘মরাঠা স্ট্রংম্যান’ শরদ পওয়ার। অন্য চরিত্রটি তাঁরই বড় ভাইয়ের ছেলে অজিত পওয়ার।

 অজিত পওয়ার

অজিত পওয়ার

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৯ ০২:০৮
Share: Save:

সব কিছু ঠিকঠাক চলছে না।

মহারাষ্ট্রের পওয়ার পরিবারের কাকা-ভাইপোর ক্ষমতার দ্বন্দ্ব নিয়ে এমন কানাঘুষো নতুন নয়।

এক দিকে ‘মরাঠা স্ট্রংম্যান’ শরদ পওয়ার। অন্য চরিত্রটি তাঁরই বড় ভাইয়ের ছেলে অজিত পওয়ার। এক জন মহারাষ্ট্রের তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের প্রাক্তন মন্ত্রী, জাতীয় রাজনীতিতে নক্ষত্র। আর অন্য জন কাকার উত্তরাধিকারী হতে মরিয়া। নিন্দুকেরাও বলেন, দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা অজিতের স্বভাবগত। রাজ্যের এক সময়ের উপমুখ্যমন্ত্রী, সেচ দফতরের দায়িত্বে ১০ বছর থেকে দক্ষ প্রশাসক হিসেবেও নাম কুড়িয়েছেন।

আজ মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে নাটকীয় পরিবর্তনের অন্যতম প্রধান চরিত্র ষাট বছর বয়সি সেই অজিত। দল তো বটেই, ভেঙেছে পওয়ার পরিবার। সাধারণত ভারতীয় রাজনীতিকেরা তাঁদের উত্তরাধিকারী হিসেবে ছেলে-মেয়েকেই বেছে নেন। ভাইপোদের আসন অনেক পিছনে। সেই অঙ্কে তেলঙ্গানায় হরিশ রাও কিংবা মহারাষ্ট্রে রাজ ঠাকরের মতো নেতাকে পিছনের সারিতেই বসতে হয়েছে। শরদ-অজিতের সম্পর্ক নিয়ে এর ব্যতিক্রমী ছবি শুরুতে দেখা গিয়েছিল। অজিতের বাবা অনন্তরাও বিশিষ্ট চিত্রপরিচালক ভি শান্তারামের সঙ্গে কাজ করতেন। আর রাজনীতিতে ঘোড়া ছুটিয়েছিলেন কাকা শরদরাও। বাবার নয়, অজিত হাত ধরেছিলেন কাকার। শুধু কংগ্রেসে থাকার সময়েই নয়, পাশাপাশি থেকে দু’জনে গড়ে তুলেছিলেন এনসিপি। ১৯৯১ সালে শরদের ভোট-দুর্গ বারামতী থেকে জিতেছিলেন অজিত। কিন্তু শরদ পওয়ার দিল্লিতে নরসিংহ রাও সরকারে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হওয়ায় ছ’মাসেই সেই আসন কাকাকে ফিরিয়ে দেন তিনি। রাজ্য রাজনীতিতেই আটকে রাখেন নিজেকে। ২০০৯ সালে উপমুখ্যমন্ত্রী না হতে পেরে ক্ষুব্ধ হন ভাইপো, কিন্তু কাকার ইচ্ছেয় পরের বছরে সেই পদ মিলেছিল তাঁর।

শুধু রাজনীতিতেই নয়, মহারাষ্ট্রের চিনি সমবায়ে মুকুটহীন সম্রাট হিসেবে পরিচিত শরদের সঙ্গে থেকে ভাইপোও প্রতিষ্ঠিত করেন নিজেকে। তবে ক্ষমতার সিঁড়ি চড়তে চড়তে পাশাপাশি থাকা কাকা-ভাইপোর সম্পর্কে ফাটল এসেছিল। অজিত শিবিরের নেতারা শরদ-কন্যা সুপ্রিয়া সুলের রাজনৈতিক উত্থানকে ভাল ভাবে নেননি। উত্তরাধিকার নিয়ে বিরোধ তখনই প্রকট হয়। অজিত শিবিরের অভিযোগ, মেয়ের জন্য শরদ সব কিছু করছেন। অথচ অজিতের পরিবার তাঁর কাছে ব্রাত্য। সুপ্রিয়া এ বারও বারামতী থেকে লোকসভা ভোটে জিতেছেন। আর মাভাল কেন্দ্রে অজিত-পুত্র পার্থ হেরে গিয়েছেন দু’লক্ষেরও বেশি ভোটে। ভাইপোর ছেলেকে জেতাতে শরদ ততটা সক্রিয় ছিলেন না, অজিত শিবিরে এমন অভিযোগ উঠেছে। আজ রাজভবনে শপথের সময়ে হাজির ছিলেন পার্থ ও অজিত-পত্নী সুনেত্রা।

এনসিপির নেতা-কর্মীরা অজিতকে ‘দাদা’ বলেই ডাকেন। ফেসবুকে অজিত দাদা পওয়ারের ভক্তদের পেজও রয়েছে। আহমেদনগরে পলিটেকনিক স্কুল অজিত দাদা পওয়ারের নামে।

তবে এখন প্রশ্ন, কাকাকে ছাপিয়ে শেষ পর্যন্ত দাদাগিরি টিকিয়ে রাখতে পারবেন ভাইপো?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Maharashtra Crisis Sharad Pawar Ajit Pawar NCP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE