রাজধানীর বাসিন্দাদের মন জিততে এতকাল বিনামূল্যে জল-বিদ্যুৎ দিয়ে এসেছিলেন অরবিন্দ কেজরীওয়াল। বিধানসভা ভোটে আপ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ায় এ বার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, দিল্লিতে সরকার গঠনের পরে বিজেপিও কি সেই নীতিতেই হাঁটবে? তারাও কি কেজরীর বিনামূল্যের জনমোহিনী প্রকল্প চালিয়ে যাবে?
বিজেপি বরাবরই কেজরীর ‘খয়রাতি সংস্কৃতি’র বিরোধিতা করে গিয়েছে। ফলে এমন আশঙ্কা তৈরি হওয়া আশ্চর্যও নয়। পদ্মশিবিরের অবশ্য বক্তব্য, কেজরীর আমলের জনমোহিনী প্রকল্প বন্ধ হবে না। তাদের সরকারও দিল্লিবাসীকে একই রকম সুযোগসুবিধা দেবে। তবে সেই প্রকল্পকে দুর্নীতিমুক্ত করে তোলাও একই সঙ্গে জরুরি বলে মনে করছে তারা। বিজেপি তাদের ইস্তাহারেও লিখেছে, ‘‘বর্তমান প্রকল্পগুলি বিজেপি সরকারও চালিয়ে যাবে। তবে ওই প্রকল্পগুলিকে দুর্নীতিমুক্ত করে তোলা হবে।’’
ভোটের সময় ইস্তাহারে একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কেজরী। ‘কেজরীওয়াল কি গ্যারান্টি’ নামে প্রকাশিত ওই ইস্তাহারে দিল্লিবাসীকে মোট ১৫টি প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। যার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হল— মহিলাদের মাসিক ২১০০ টাকা অর্থসাহায্য, প্রবীণ নাগরিকদের বিনামূল্যে চিকিৎসা, যুবসমাজের জন্য চাকরি, পড়ুয়াদের জন্য বিনামূল্যে বাস পরিষেবা এবং মেট্রোর ভাড়া অর্ধেক মকুব। অটো ও ই-রিক্সাচালক, ট্যাক্সিচালকদের জন্য জীবনবিমা, দুর্ঘটনাজনিত বিমা, তাঁদের মেয়েদের বিয়েতে এক লক্ষ টাকার সাহায্য ও ছেলেমেয়েদের বিনামূল্যে কোচিং-এর ব্যবস্থা। এ ছাড়া বিনামূল্যে বিদ্যুৎ ও জল।
কেজরী খয়রাতির বান ছোটালেও তাতে যে এ বার দিল্লিবাসীর মন গলেনি, তা ভোটের ফলাফলেই স্পষ্ট। রাজধানীর ৭০টি আসনের মধ্যে তারা জিতেছে ২২টি আসনে জিতেছে। আর বিজেপি ৪৮টি আসন পেয়ে ২৭ বছর পর সরকার গড়তে চলেছে।
বিজেপিও একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ইস্তাহারে। তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ— গরিব পরিবারের মহিলাদের মাসে আড়াই হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য, প্রসূতিদের ২১ হাজার টাকার আর্থিক সাহায্য এবং ৫০০ টাকায় এলপিজি সিলিন্ডার।
পদ্মশিবির জানিয়েছে, সরকার গঠনের পর প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকেই দিল্লিতে কেন্দ্রের আয়ূষ্মান ভারত যোজনা চালু করা হবে। সেই সঙ্গে দিল্লির সরকারও চিকিৎসার জন্য পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত আর্থিক সাহায্য করবে। ইস্তাহারে প্রবীণ নাগরিকদের জন্য ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা মাসিক অনুদানের কথাও বলেছে বিজেপি।