Advertisement
E-Paper

‘পথকুকুর নিয়ে নির্দেশ খতিয়ে দেখব’, দেশ জুড়ে বিতর্কের আবহে জানালেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বিআর গবই

বুধবার পথকুকুর সম্পর্কিত একটি মামলা জরুরি তালিকায় সংযোজনের জন্য প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে তোলা হয়েছিল। সেখানেই এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি। আশ্বাস দিয়েছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন তিনি।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২৫ ১২:০৩

ছবি: শাটারস্টক।

রাজধানী দিল্লি থেকে অবিলম্বে কয়েক লক্ষ পথকুকুরকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সোমবারের ওই নির্দেশের পর থেকেই বিতর্ক শুরু হয়েছে দেশ জুড়ে। সেই আবহে প্রধান বিচারপতি বিআর গবই আশ্বাস দিলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন তিনি।

বুধবার পথকুকুর সম্পর্কিত একটি মামলা জরুরি তালিকায় সংযোজনের জন্য প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে তোলা হয়েছিল। সেখানেই এমন মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে প্রধান বিচারপতিকে। আইনি খবরাখবর পরিবেশনকারী ওয়েবসাইট ‘লাইভ ল’-এর প্রতিবেদন সূত্রে খবর, ২০২৪ সালে কনফারেন্স ফর হিউম্যান রাইট্‌স (ইন্ডিয়া) নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পথকুকুরদের নির্বীজকরণ এবং টিকাকরণের বিষয়ে একটি জনস্বার্থ মামলায় দিল্লি হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিল। বুধবার আইনজীবী শীর্ষ আদালতে বিষয়টি উল্লেখ করতেই প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘অন্য একটি বেঞ্চ তো ইতিমধ্যেই পথকুকুর সংক্রান্ত একটি নির্দেশ জারি করেছে।’’ সোমবার দিল্লির রাস্তা থেকে পথকুকুরদের সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানোর যে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট, সেই নির্দেশের কথাই বলছিলেন প্রধান বিচারপতি। এর পরেই তিনি জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন তিনি।

বুধবার আদালতে ২০২৪ সালের মে মাসে বিচারপতি জেকে মহেশ্বরীর বেঞ্চের একটি নির্দেশও পড়ে শোনান আইনজীবী। তাতে বলা হয়েছিল, ‘‘কর্তৃপক্ষকে আইন মেনে পদক্ষেপ করতে হবে। তবে কোনও রকম পরিস্থিতিতেই পথকুকুরদের নির্বিচারে হত্যা করা যাবে না। সকল জীবের প্রতি করুণা প্রদর্শন করাই সাংবিধানিক মূল্যবোধের পরিচায়ক। সকলকে তা মানতে হবে। এতে কোনও দ্বিমত নেই।’’ উল্লেখ্য, পথকুকুরদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য মানবিক পদ্ধতিতে তাদের নির্বীজকরণ এবং টিকাকরণ করানোয় ছাড়পত্র দেওয়া হোক, এই মর্মে ২০১৮ সালে দিল্লি হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিল ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ২০২৩ সালে হাই কোর্ট কোনও রকম নির্দেশ ছা়ড়াই মামলাটির নিষ্পত্তি করে দেয়। এর পরেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় ওই সংস্থা। কিন্তু সেই মামলা এখনও শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত হয়নি।

সম্প্রতি দিল্লিতে পথকুকুরের কামড়ের ফলে জলাতঙ্কে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যাবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট। এই সমস্যার সমাধান খুঁজতে নয়াদিল্লি পুরসভা (এনডিএমসি) এবং দিল্লি পুরসভার (এমসিডি) কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকেও বসে শীর্ষ আদালত। শেষমেশ সোমবার সুপ্রিম কোর্ট জানায়, রাজধানী নয়াদিল্লি, দিল্লি পুরসভা এবং নয়াদিল্লি পুরসভার প্রশাসনকে দ্রুত সকল এলাকা থেকে পথকুকুরদের সরানোর কাজ শুরু করতে হবে। অবিলম্বে সমস্ত বেওয়ারিশ কুকুরকে ধরে, জীবাণুমুক্ত করে স্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠাতে হবে। মঙ্গলবার আর এক নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়, এখন থেকে উচ্ছিষ্ট খাবার খোলা জায়গায় ফেলা যাবে না, ঢেকে রাখা ডাস্টবিনে ফেলতে হবে। কারণ এতে পথকুকুর ও অন্য প্রাণীরা ওই ফেলে দেওয়া খাবারের প্রতি আকৃষ্ট হয়। খাবারের খ‌োঁজে তারা আবর্জনার স্তূপ ঘাঁটাঘাঁটি করে, যা অস্বাস্থ্যকর। তা ছাড়া, কখনও কখনও ওই বিড়াল, কুকুরেরা পথচারীদের আঁচড়ে-কামড়েও দেয়। তাই সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

যদিও পথকুকুর নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক নেতা থেকে অভিনেতা, পশুপ্রেমী থেকে সমাজকর্মী— সরব হয়েছেন সকলেই। বেশির ভাগেরই বক্তব্য, নির্বীজকরণ, টিকাদান এবং যথাযথ যত্নের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, ‘‘মানবিকতার পথ থেকে সরে এসে সুপ্রিম কোর্ট এই নির্দেশ দিয়েছে। অবোলা প্রাণীদের এ ভাবে সমস্যা বলে দাগিয়ে দেওয়া যায় না।’’ সরব হয়েছে ‘পেটা’-ও (পিপল ফর এথিক্যাল ট্রিটমেন্ট অফ অ্যানিম্যাল্‌স)। তাদের যুক্তি, এত বড় পরিসর জুড়ে স্থানচ্যুতি অবৈজ্ঞানিক এবং অকার্যকর। এই পদ্ধতিতে কুকুরের সংখ্যা বাড়বে বই কমবে না। এ ভাবে জলাতঙ্ক কিংবা কুকুরের কামড়ের ঘটনাও রোধ করা যাবে না।

Supreme Court Stray Dogs chief justice CJI Dogs
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy