নিহতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলছেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। ছবি সৌজন্য টুইটার।
সোনভদ্রে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে তাঁকে দেখা করতে অনুমতি দেয়নি রাজ্য প্রশাসন। রাতভর চুনার দুর্গে কাটান প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। শনিবার সকালে ফের সোনভদ্র যাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু এ বারও তাঁকে যেতে অনুমতি দেয়নি পুলিশ। এ দিকে, প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে দেখা করতে চুনার দুর্গের সামনে হাজির হন নিহতদের কয়েকটি পরিবার। তাঁদের সঙ্গে অবশ্য দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয় প্রিয়ঙ্কাকে। প্রিয় নেত্রীকে সামনে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহতদের পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন প্রিয়ঙ্কা। সেই সঙ্গে রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার অবনতির জন্য ক্ষোভ উগরে দেন যোগী সরকারের বিরুদ্ধে। প্রিয়ঙ্কার বলেন, “জানি না এদের কী মানসিকতা।”
কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, “সোনভদ্র হত্যাকাণ্ড রুখতে ব্যর্থ উত্তরপ্রদেশ সরকার। পুরোপুরি বেআইনি ভাবে প্রিয়ঙ্কাজিকে গ্রেফতার করেছে রাজ্যের বিজেপি সরকার।” রাজ্যের বিজেপি নেতা সিদ্ধার্থ নাথ সিংহ কংগ্রেসকে পাল্টা আক্রমণ করে বলেন, “সোনভদ্রে কি ট্যুরিজম চলছে? ১৪৪ ধারা চলছে ওখানে। সেই মতো ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে কংগ্রেস।”
শুক্রবার মধ্য রাত। চুনার দুর্গে ‘বন্দি’ প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর সঙ্গে দেখা করতে যান বারাণসী পুলিশের এডিজি ব্রজ ভূষণ এবং এক শীর্ষ সরকারি আধিকারিক। সূত্রের খবর, প্রিয়ঙ্কাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন তাঁরা। সোনভদ্র ছাড়ার পরামর্শও দেন। ঘণ্টা খানেক কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে বৈঠক করে রাত সওয়া ১টা নাগাদ চুনার দুর্গ ছাড়েন উত্তরপ্রদেশ সরকারের ওই দুই আধিকারিক। সেই বৈঠকে কোনও সুরাহা হয়নি। যোগীর সরকারকে প্রিয়ঙ্কা সাফ জানিয়ে দেন, যত ক্ষণ না নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন, চুনার দুর্গ থেকে এক পা-ও নড়বেন না তিনি।
পরে প্রিয়ঙ্কা টুইট করে বলেন, ‘উত্তরপ্রদেশ সরকার বারাণসীর এডিজি ব্রজ ভূষণ, কমিশনার দীপক অগ্রবাল এবং মির্জাপুরের ডিআইজি-কে আমার কাছে পাঠায়। নিহতদের পরিবারগুলোর সঙ্গে দেখা না করে সোনভদ্র ছাড়ার পরামর্শ দেন তাঁরা। প্রায় এক ঘণ্টা বসেছিলেন ওই আধিকারিকরা।’ তিনি আরও জানান, ‘কেন আমাকে হেফাজতে নেওয়া হল, তার সুনির্দিষ্ট কোনও কারণ রাজ্য সরকারের পাঠানো আধিকারিকরা দেখাতে পারেননি। শুধু তাই নয়, এ সংক্রান্ত কোনও নথিও দিতে পারেননি তাঁরা।’ চুনার দুর্গে রাতের একটি ভিডিয়োও টুইট করেন প্রিয়ঙ্কা।
যোগীর সরকারের সঙ্গে প্রিয়ঙ্কার টানাপড়েন শুরু হয়েছিল শুক্রবার সকাল থেকেই। সোনভদ্রে নিহত পরিবারগুলোর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু মির্জাপুরের কাছে তাঁকে আটকে দেয় যোগীর পুলিশ। বাধার মুখে পড়ে সদলবলে ধর্নায় বসে পড়েন প্রিয়ঙ্কা। প্রশাসনের দাবি, ১৪৪ ধারা চলছে সোনভদ্রে। এই মুহূর্তে সেখানে কোনও রাজনৈতিক দল যাওয়া মানেই পরিস্থিতি ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠার আশঙ্কা দেখা দেবে। প্রিয়ঙ্কার অভিযোগ, এই নির্দেশ সংক্রান্ত কোনও কাগজপত্রই দেখাতে পারেনি পুলিশ। যদিও মির্জাপুরের জেলাশাসক অনুরাগ পটেল বলেন, “১৫১ সিআরপিসি-তে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী এবং তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শান্তি বিঘ্নিত হতে পারে এই আশঙ্কায় কংগ্রেস নেত্রী ও তাঁর সঙ্গীদের আটকে দেওয়া হয়েছে।”
আরও পড়ুন: ছুটির দিনে তৃণমূলের ২১শের সভা, জোর ‘সংগঠিত’ ভিড়ে
আরও পড়ুন: কর্নাটকে টাকার খেলা! বিজেপি চুপ
প্রিয়ঙ্কা ধর্না থেকে না ওঠায় তাঁকে আটক করে পুলিশ। তার পর সেখান থেকে চুনার দুর্গের অতিথিশালায় নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সারা রাত সদলবলে সেখানেই ছিলেন তিনি। কংগ্রেস নেত্রীকে আটক না গ্রেফতার করা হয়েছে, এ নিয়েও যোগী সরকারের সঙ্গে একটা টানাপড়েন চলে। কংগ্রেসের দাবি, প্রিয়ঙ্কাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ পাল্টা দাবি করেছে, গ্রেফতার নয়, আটক করা হয়েছে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদককে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy