Advertisement
০৬ মে ২০২৪

বিজেপি-তে শশী তারুর?

কাল সনিয়ার বকুনি, আর আজ জুটল নরেন্দ্র মোদী প্রশস্তি। গোটা সংসদ যখন একটি রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে, সেই সময় অক্সফোর্ডে গিয়ে কংগ্রেসের অবস্থানের বিরুদ্ধে গিয়েই শশী তারুর বলেছিলেন, সংসদের মুলতুবির পক্ষে তিনি নন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৫ ২১:৩৭
Share: Save:

কাল সনিয়ার বকুনি, আর আজ জুটল নরেন্দ্র মোদী প্রশস্তি।

গোটা সংসদ যখন একটি রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে, সেই সময় অক্সফোর্ডে গিয়ে কংগ্রেসের অবস্থানের বিরুদ্ধে গিয়েই শশী তারুর বলেছিলেন, সংসদের মুলতুবির পক্ষে তিনি নন। তারজন্য গতকালই শশীকে ধমক দিয়েছিলেন সনিয়া গাঁধী। কিন্তু আজ সাংসদদের এক কর্মশালায় শশীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুধু তাই নয়, সকালে সংসদের করিডরে অরুণ জেটলিও ডেকে শশীকে অভিনন্দন জানান। কিন্তু কপাল এমনই, জেটলি যখন তাঁর পিঠ চাপড়াচ্ছিলেন, ঠিক সেই সময় পাশ থেকে হেঁটে যাচ্ছিলেন সনিয়া। দু’জনের কথোপকথন দেখে একটু থমকে কটমট করে তাকানও শশীর দিকে। তারপর কিছু না বলেই চলে যান। ঘনিষ্ঠ মহলে জেটলি রসিকতা করে বলেছেন, ‘‘বোধহয় আরও এক দফা বকুনি জুটবে এ বারে।’’

প্রধানমন্ত্রী যখন আজ প্রশস্তি করছিলেন, সেই সময় একেবারে সামনের সারিতে বসেছিলেন শশী। কংগ্রেস যখন গোটা অধিবেশন স্তব্ধ করে রেখেছে, ঠিক সেই সময় সংসদ চলার পক্ষে কংগ্রেসেরই এক নেতা বিদেশের মাটিতে যে ভাবে সোচ্চার হয়েছেন, সেটিকে রাজনৈতিক ভাবে কাজে লাগাতে চাইছে বিজেপি। আর তাই প্রধানমন্ত্রী আজ বলেন, সংসদে আলোচনার গুরুত্ব রয়েছে। অক্সফোর্ডে শশী তারুর যে ভাবে বলেছেন সেটি ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ভারতের অভিব্যক্তির যে একটি মেজাজ রয়েছে, শক্তি রয়েছে, সেটি ফুটে উঠেছে। এটাই প্রমাণ করে সঠিক জায়গায় সঠিক বিষয় উপস্থাপন করেছেন তিনি। সঠিক সুযোগেরও মাহাত্ম্য আছে।

প্রধানমন্ত্রী শুধু প্রশস্তিতেই থেমে থাকেননি। সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী সচিবালয় থেকে জারি করা বিবৃতিতেও শশী তারুরের প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়েছে। মোদীর মুখ থেকে এত প্রশস্তির পর থেকেই সংসদের অলিন্দে গুঞ্জন শুরু হয়েছে, তাহলে কী এ বারে বিজেপির পথে পাড়ি দিচ্ছেন শশী তারুর? অনেকে বিজেপি নেতাদেরও পরামর্শ দিচ্ছেন, ‘‘এ বারে হৃদয় আরও প্রসারিত করে শশী তারুরকে দলে আলিঙ্গন করে নিন।’’ ঘরোয়া স্তরেও আজ বিজেপির শীর্ষ নেতারা বলাবলি করেছেন, আর যাই হোক, শশী তারুরের এই বিষয়ে যোগ্যতা রয়েছে। তাঁকে সঠিক ভাবে ব্যবহার করলে কাজ দিতে পারে। কিন্তু অতীতে এ ভাবেই নরেন্দ্র মোদীর প্রশস্তি করে সনিয়ার কোপে পড়েছিলেন তারুর। মুখপাত্র তখনও বিজেপিতে যাওয়ার জল্পনা উঠেছিল। কিন্তু শশী নিজেই তা খন্ডন করেন সেই সময়। এমনকী এখনও কংগ্রেস নেতারা বলছেন, এমন নয় সনিয়ার কাছে তারুরের কোনও কদর নেই। কিন্তু যে ভাবে আগ বাড়িয়ে তিনি কান্ড বাধিয়ে দলকে বিপাকে ফেলেন, সে বিষয়ে সতর্ক করেছেন সভানেত্রী।

তারুরকে মোদীর প্রশস্তিকে অবশ্য লঘু করে দেখানোরই চেষ্টা করেছে বিজেপি। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী তারিফ করেছেন তো কী হয়েছে? ক’দিন আগে জম্মুতেও এক সভায় প্রধানমন্ত্রী আমার তারিফ করেছেন!’’ কিন্তু খোদ শশী তারুর প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। বেশ আবেঘঘন গলায় তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী অনেক আন্তরিক ভাবে আমার বিষয়ে বলেছেন। বড় মনের পরিচয় দিয়েছেন। আমি আর কী বলব? আমার মন ছুঁয়ে গিয়েছে। আমি কৃতজ্ঞ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE