আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে জাতীয় স্বার্থ অক্ষুন্ন রাখতে সম্ভাব্য সমস্ত রকম পদক্ষেপ করবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার। বৃহস্পতিবার লোকসভায় এ কথা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। সেই সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যের বিরোধিতা করে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘একদা ‘ভঙ্গুর অর্থনীতির’ তালিকাভুক্ত ভারত এখন বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার পথে এগিয়ে চলেছে।’’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বুধবার ভারতের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপান। একই সঙ্গে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্কের কারণে অনির্দিষ্ট একটি ‘জরিমানা’ (পেনাল্টি)-র কথাও জানান ট্রাম্প। পাশাপাশি তিনি জানান, বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে ভারতের সঙ্গে দর কষাকষি চালিয়ে যাচ্ছে আমেরিকা। কিন্তু এর কয়েক ঘণ্টা পরেই ট্রাম্প তাঁর সমাজমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ একটি পোস্টে লেখেন, ভারত এবং রাশিয়া, দুই দেশের অর্থনীতিই মৃত! চাইলে এই দুই দেশ আরও অর্থনৈতিক অধোগতির পথে হাঁটতে পারে বলেও কটাক্ষ করেন তিনি।
এই আবহে বৃহস্পতিবার সংসদে ট্রাম্পের নতুন শুল্ক-হানা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে পীযূষ বলেন, ‘‘নতুন হারে শুল্ক আরোপের কী প্রভাব পড়তে পারে, আমাদের সরকার তা খতিয়ে দেখছে। জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে আপস করা হবে না।’’ প্রসঙ্গত, গত ২ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের পণ্যের উপর পারস্পরিক শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ভারতের পণ্যে শুল্কের পরিমাণ ছিল ২৬ শতাংশ।
আরও পড়ুন:
কিন্তু নতুন শুল্কনীতি কার্যকর হওয়ার আগে ৯০ দিনের জন্য স্থগিতাদেশ ঘোষণা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট (যদিও ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়ামজাত পণ্যে ২৫ শতাংশ বাড়তি শুল্ক বহাল রাখা হয়)। ৯০ দিনের সেই সময়সীমা শেষ হয়েছিল গত ৯ জুলাই। তার পরে ট্রাম্পই সেই সময়সীমা বাড়িয়ে ১ অগস্ট করেছিলেন। এর পরে গত তিন সপ্তাহে বাণিজ্যচুক্তির খসড়া চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে দফায় দফায় দ্বিপাক্ষিক প্রতিনিধি স্তরের আলোচনা হয়েছে। কিন্তু আলোচনার মাঝেই বুধবার ভারতের উপর আচমকা ২৫ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা করে দিয়েছেন ট্রাম্প। যা নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন টানাপড়েন।