E-Paper

ধনখড়ের দীর্ঘ নমস্কার, ফের খোঁচা বিরোধীদের

রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে আজ ধনখড়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন, ‘‘উনি নিজের পরবর্তী পদোন্নতির জন্য সরকারের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করেছেন।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:০৩
রাজ্যসভায় জগদীপ ধনখড়। বুধবার।

রাজ্যসভায় জগদীপ ধনখড়। বুধবার। ছবি: পিটিআই।

‘মাননীয় সভাসদোঁ..’। মার্শালের ঘোষণার পরে রাজ্যসভায় চেয়ারম্যান তথা উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় ঢুকলেন। মঙ্গলবারই পদ থেকে তাঁকে সরানোর নোটিস জমা দিয়েছেন বিরোধীরা। বুধবার আসনে বসার আগে কিছুটা ঝুঁকে হাত জোড় করে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বিরোধীদের নমস্কার জানালেন তিনি, অন্য দিনের তুলনায় দীর্ঘ সময় ধরে। মুখে মুচকি হাসি। তার পরেও বিরোধীদের দিকে তাকানোর সময়ে তাঁর মুখে অর্থপূর্ণ হাসিঝুলেই রইল।

রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে আজ ধনখড়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন, ‘‘উনি নিজের পরবর্তী পদোন্নতির জন্য সরকারের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করেছেন।’’ অনাস্থা প্রস্তাবের নোটিসে বিরোধীদের অভিযোগ, তিনি চেয়ারম্যানের আসনে বসে আরএসএসের প্রশংসা করেন, বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করেন। আজ খড়্গে অন্যান্য বিরোধী দলের রাজ্যসভা নেতাদের পাশে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে দাবি করেন, ‘‘রাজ্যসভায় অচলাবস্থা তৈরি হলে তার সব থেকে বড় কারণ চেয়ারম্যান নিজেই।’’ উদাহরণ হিসেবে বিরোধীরা বলেছেন, বুধবারও রাজ্যসভার শুরুতে চেয়ারম্যান আদানি ঘুষ কাণ্ডের মতো বিষয়ে বিরোধীদের আলোচনার দাবি খারিজ করেন। কিন্তু রাজ্যসভার নেতা জে পি নড্ডাকে কংগ্রেসের সঙ্গে জর্জ সোরসের যোগাযোগের অভিযোগ তোলার সুযোগ দেন। বিজেপি সাংসদরা রাজ্যসভায় সনিয়া গান্ধীকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন, লোকসভা সাংসদ রাহুল গান্ধীকে নিশানা করেছেন। যা নিয়মবিরুদ্ধ হলেও চেয়ারম্যান অনুমোদন দিয়েছেন।

রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের জন্য ১৪ দিনের নোটিস দিতে হয়। চলতি অধিবেশনে ১৪ দিন বাকি নেই। সে ক্ষেত্রে নোটিস গ্রহণ করা হলে পরবর্তী অধিবেশনেও ভোটাভুটি হতে পারে। যদিও সংখ্যার জোর না থাকায় ধনখড়কে অপসারণের প্রস্তাব যে পাশ হবে না, তা বিরোধীরা জানেন। তবে এই উদ্যোগ অঙ্কুরে বিনাশ করতে শাসক শিবির চলতি অধিবেশনে ভোটাভুটি করাতে পারে বলেও বিরোধীদের একাংশের ধারণা। সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু রাজ্যসভায় অভিযোগ তুলেছেন, কংগ্রেস ও ভারত-বিরোধী শক্তির যোগাযোগের অভিযোগ থেকে নজর ঘোরাতেই বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে প্রথম ‘কৃষকপুত্র’ উপরাষ্ট্রপতি হয়েছেন। চেয়ারম্যানকে যাঁরা অপমান করেছেন, তাঁদের রাজ্যসভায় থাকার অধিকার নেই।’’ এ নিয়ে বিরোধীদের আপত্তির পরে অধিবেশন মুলতুবি হয়ে যায়। ওই মন্তব্যের জন্য বিরোধীরা রিজিজুর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের প্রস্তাব আনার পরিকল্পনা করছেন।

বিরোধীদের প্রস্তাব সংক্রান্ত কৌশল নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ রিজিজুর সঙ্গে বৈঠক করেন। বিজেপির মতে, ১৯৫২ সালের পর থেকে এই প্রথম এবং তা-ও মোদী জমানায় রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব অস্বস্তিকর ঠিকই। তবে বিরোধীরা ধনখড়ের আরএসএস-প্রশংসা নিয়ে আপত্তি তোলায় বিজেপি-আরএসএসের লাভ হবে। কংগ্রেসের খড়্গে, ডিএমকে-র তিরুচি শিবা, তৃণমূলের নাদিমুল হক, সিপিএমের বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ব্যাখ্যা দেন, ব্যক্তিগত ক্ষোভ বা রাজনৈতিক রেষারেষির জেরে তাঁরা অনাস্থা প্রস্তাব আনেননি। ধনখড়ের পক্ষপাত তাঁদের বাধ্য করেছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Jagdeep Dhankhar Parliament Of India Rajya Sabha MP

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy