Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Mask

Coronavirus in India: কড়াকড়ি শিথিল হতেই মাস্ক ভুলেছেন ৭৪%, তৃতীয় ঢেউয়ের আগে জানাল উদ্বিগ্ন কেন্দ্র

দৈনিক সংক্রমণ কমেও কমছে না। বিভিন্ন শহরে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় দেখে খোদ প্রধানমন্ত্রী দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন। অথচ জনতার হেলদোল নেই।

ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২১ ০৫:৫৪
Share: Save:

মাস্ক পরাই ভুলতে বসেছে দেশের সিংহভাগ জনতা!

বিশেষজ্ঞেরা বারবার বলছেন, করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ দোরগোড়ায়। দৈনিক সংক্রমণ কমেও কমছে না। বিভিন্ন শহরে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় দেখে খোদ প্রধানমন্ত্রী দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন। অথচ জনতার হেলদোল নেই। আজ সাংবাদিক বৈঠকে রীতিমতো উদ্বেগের সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়ে দিল, কোভিড-বিধির কড়াকড়ি শিথিল হওয়ার পর থেকে সারা দেশে মাস্ক ব্যবহার প্রায় ৭৪ শতাংশ কমে গিয়েছে।

মাস্ক পরতে অনীহা, থুতনিতে মাস্ক ঝুলিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আড্ডা বা বিড়ি-সিগারেটে সুখটানের মতো ছবি কলকাতা শহরেই দেখা যাচ্ছিল গত বছর লকডাউন শিথিল হওয়ার পর থেকে। এখনও দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রকোপ ও সরকারি কড়াকড়ি কমতেই দোকান-বাজারে উপচে পড়ছে মাস্কবিহীন ভিড়। হাত ধোয়া বা পারস্পরিক দূরত্বের স্বাস্থ্যবিধি তো অনেক ক্ষেত্রে শিকেয় উঠেছে কবেই! এই পরিস্থিতিতে আতঙ্ক আরও বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান।

একটি লেখচিত্র দেখিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল আজ বলেন, ‘‘বিশ্লেষণ বলছে, আমরা স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সঙ্গে সঙ্গেই মাস্কের ব্যবহার পড়তির দিকে। সার্বিক ভাবে মাস্কের ব্যবহার ৭৪ শতাংশ কমেছে। বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মাস্ক আমাদের জীবনযাত্রার অঙ্গ হওয়া উচিত।’’ গুগলের তথ্যের ভিত্তিতে আগরওয়াল জানান, দেশের বেশ কিছু এলাকায় জনতার গতিবিধি অতিমারির আগের দিনগুলোয় যেমন ছিল, প্রায় তেমনই হয়ে গিয়েছে। বিশেষত গত মে থেকে জুলাই মাসের মধ্যে মানুষের গতিবিধি লক্ষ্যণীয় ভাবে বেড়েছে। এতে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে সংক্রমণের ঝুঁকিও বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে মাস্ক, পারস্পরিক দূরত্ব এবং হাত ধোয়ার মতো প্রাথমিক সুরক্ষার কোনও বিকল্প নেই। সমস্যা হল, অধিকাংশ দেশবাসী এই ধরনের সতর্কবার্তায় কানই দিচ্ছেন না। গত মে মাসে স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছিল, করোনার বিধ্বংসী দ্বিতীয় ঢেউ সত্ত্বেও ৫০ শতাংশ ভারতবাসী মাস্ক পরছেন না। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, মাস্ক না-পরার জন্য মোটামুটি তিনটি অজুহাত দিচ্ছেন এই মানুষেরা। এক, শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। দুই, অস্বস্তি হচ্ছে। তিন, পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখলে মাস্ক পরার দরকার নেই বলেই অনেকের বিশ্বাস। বলা বাহুল্য, এই প্রতিটি অজুহাতই ভ্রান্ত এবং বিপজ্জনক।

তবে বেশ কয়েকটি রাজ্যের সরকারও সংক্রমণ রুখতে যথেষ্ট দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে না বলে বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন। দ্বিতীয় ঢেউয়ের তাণ্ডবের মধ্যেই কাতারে কাতারে মানুষ উত্তরাখণ্ডে গিয়ে কুম্ভস্নান সেরে এসেছেন। কুম্ভে সংক্রমণ ছড়িয়েছে দেদার। কুম্ভ থেকে শিক্ষা নিয়ে উত্তরাখণ্ড সরকার ওই রাজ্যে কাঁওয়াড় যাত্রা স্থগিত রেখেছে। কিন্তু উত্তরপ্রদেশ এই যাত্রায় অনুমতি দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে জিজ্ঞাসা করেছে, কেন তারা এমন সিদ্ধান্ত নিল? বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, রুজির চিন্তায় বাধ্য হয়ে যাঁদের রাস্তায় বেরোতে হচ্ছে, তাঁদের কথা আলাদা। তবু তাঁরা সতর্কতা অবলম্বন করবেন, এটাই প্রত্যাশিত। কিন্তু দিঘা-পুরী থেকে শিলং-মুসৌরি ছুটে বেড়ানো কিংবা ভিড় বাজারে অহেতুক ‘শপিং’ করতে বেরোনোর সময় যে এখনও আসেনি, আমজনতা আর কত বার বললে তা বুঝবে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mask Coronavirus in India Pandemic
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE