জাতপাতের কারণে মহারাষ্ট্রের নান্দেড়ে বছর ২০-র সক্ষম তাটের খুনের ঘটনায় তাঁর প্রেমিকা এ বার ভাইদের পাশাপাশি পুলিশের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুললেন। সক্ষমের মৃতদেহের সঙ্গে প্রতীকী বিয়ে করা আঁচল মামিদওয়ার (২১) দাবি করেছেন, তাঁর প্রেমিককে খুনের জন্য দুই পুলিশকর্মী তাঁর ভাইদের প্ররোচনা দিয়েছিলেন।
দুই ভাইয়ের মাধ্যমেই সক্ষমের সঙ্গে পরিচয় হয় আঁচলের। তবেআঁচল সেই দাবি উড়িয়ে দিয়ে জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে সক্ষমের পরিচয় হয়েছিল সমাজমাধ্যমে। তরুণী জানিয়েছেন, সক্ষমের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক প্রাথমিক ভাবে মামিদওয়ার পরিবার মেনে নেয়নি। কারণ দু’জনের জাত-ধর্মের পার্থক্য। যদিও পরে ধীরে ধীরে তাঁদের সম্পর্ক মেনে নেয় আঁচলের পরিবার, এমনই দাবি করেছেন ওই তরুণী।
তবে সক্ষমকে আঁচলের বাবা শর্ত দেন, ধর্ম পরিবর্তন করতে হবে। আঁচলের জানিয়েছেন, সেই শর্তেও রাজি ছিল সক্ষম। তরুণীর কথায়, “আমাদের তিন বছরের সম্পর্ক ছিল। অনেক স্বপ্ন ছিল। ভাইয়েরা আমাকে সক্ষমের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার কথাও নিশ্চিত করেছিল। কিন্তু শেষ মুহুর্তে তারা বিশ্বাসঘাতকতা করে।”
আঁচল জানান, গত বৃহস্পতিবার তাঁর ছোট ভাই হিমেশ স্থানীয় থানায় গিয়ে সক্ষমের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করার জন্য তাঁকে জোর করেন। আঁচলের অভিযোগ, তিনি সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায়,থানায় উপস্থিত ওই দুই পুলিশকর্মী ধীরজ কোমলওয়ার এবং মহীত অসরওয়ার তাঁর ভাইকেবলেছিলেন, “তুমি এত জনকে মেরে জেলে গিয়েছ। তোমার বোনকে যে ফাঁসিয়েছে, তাকে খুন করছ না কেন?” জবাবে আঁচলের ভাই না কি বলেছিলেন, “আমি সন্ধ্যার মধ্যে ওকে মেরে ফেলব।”
এর পরে সে দিন সন্ধ্যায় সক্ষমের উপরে চড়াও হয় আঁচলের দুই ভাই। হিমেশ সক্ষমকে গুলি করেন। এর পরে টালি দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করেন হিমেশ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বছর ২০-এর যুবকের। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত আট জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ইতিমধ্যেই আঁচলের দুই ভাই এবং তাঁর বাবা গজাননকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার সক্ষমের শেষকৃত্য চলাকালীন মৃত প্রেমিকের বাড়িতে হাজির হন আঁচল। নিথর দেহে মাখিয়ে দেন হলুদ। এর পরেই নিজের সিঁথিতে সিঁদুর লাগিয়ে প্রকাশ্যে ঘোষণা করেন— “আমি আজ থেকে এই পরিবারের বউ। সক্ষমের সঙ্গে এই বিয়ে আমাদের প্রেমকে অমর করে রাখবে।” এর পরেই তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করে পরিবার। আপাতত তাটে পরিবারের সঙ্গেই থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আঁচল।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)