স্বজন হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। ছবি: পিটিআই।
অঝোরে কেঁদে চলেছে তিন ভাইবোন। আর বার বার আওড়াচ্ছিল, “আমাদের কী হবে? আমরা তো অনাথ হয়ে গেলাম। আমাদের স্কুলের মাইনে দেবে কে? কে-ই বা আমাদের বাড়িভাড়া দেবে?” তামিলনাড়ুর বিষমদকাণ্ডে বাবা-মা দু’জনকেই হারিয়ে দিশাহারা ওই তিন জন।
তাদের মধ্যে বয়সে বড় রাঘবন। সে বলে, “আমরা স্কুলে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে বাড়ি ফিরে শুনি বাবা-মাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ওরা অসুস্থ। কিছু বুঝে ওঠার আগেই খবর পেলাম, মা-বাবা দু’জনেই মারা গিয়েছে।” রাঘবনের বাবা রঙমিস্ত্রি কাজ করতেন। মা নির্মাণ শ্রমিক ছিলেন। বুধবারের করুণাপুরম গ্রামে বিষমদের কারণে যে ‘মৃত্যুমিছিল’ চলে, সেই মৃতদের তালিকায় ছিলেন রাঘবনের বাবা-মা।
রাঘবনের দিদিমা জানিয়েছেন, তাঁর জামাই মদের একটি বোতল নিয়ে এসে বাড়িতে রেখেছিলেন। কয়েক চুমুক খেয়ে বা়ড়ি থেকে বেরিয়ে যান। বোতলটি ঘরে রেখে গিয়েছিলেন। রাঘবনের মা সেই বোতলে রাখা মদ ওষুধ ভেবে খেয়ে নিয়েছিলেন। তার পরই তাঁর পেটে যন্ত্রণা শুরু হয়। দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে আসে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে রাঘবনের বাবাকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয় তাঁর। রাঘবন জানিয়েছে, তাদের তিন ভাইবোনকে এ বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি। শুধু বলা হয়েছিল, বাবা-মা অসুস্থ। পরে তারা গ্রামেরই এক পড়শির কাছ থেকে বিষমদের ঘটনাটি জানতে পারে।
বুধবার তামিলনাড়ুর কল্লাকুরিচিতে বিষমদ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন শতাধিক ব্যক্তি। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সেই ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪৭। হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে ১১৮ জনের। তাঁদের মধ্যে ৩০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy