খুনের মামলায় জেলে গিয়েছেন স্বামী। তার মধ্যে স্ত্রী নাকি পরকীয়ায় জড়িয়েছেন। এই অভিযোগে তাঁকে প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে টেনে বার নিয়ে গেলেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। প্রথমে কটূক্তি। কিছু ক্ষণ পরে শুরু হয় মারধর। তখন সঙ্গ দেন কয়েক জন প্রতিবেশীও। কিন্তু এখানেই ‘শাসনের’ ইতি হয়নি। এর পর ৩৫ বছর বয়সি ওই বধূকে অর্ধনগ্ন করে বাঁধা হয় একটি মোটরবাইকের পিছনে। ঘোরানো হয় রাস্তায়। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাতের ধলমিসাল নামে একটি গ্রামে। সমাজমাধ্যমে ওই ঘটনার ভিডিয়ো দেখে এ পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চলছে বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি গত ২৮ জানুয়ারির। ৩৫ বছর বয়সি এক মহিলা প্রতিবেশী যুবকের সঙ্গে দেখা করতে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন। আচমকা সেই ঘরে হুড়মুড়িয়ে ঢোকেন মহিলার শ্বশুর এবং দেওর। তাঁদের সঙ্গে জনা কয়েক পুরুষ এবং মহিলা। তাঁরা চিৎকার-চেঁচামেচি করতে করতে মহিলাকে হিড়হিড় করে টেনে ঘরের বাইরে আনেন। শুরু হয় মহিলার উপর অকথ্য নির্যাতন।
মারধরের সময়েই মহিলার কোমরে দড়ি বাঁধেন কয়েক জন। দড়ির অন্য প্রান্ত বাঁধা হয় মোটরবাইকের পিছনে। তার পর বাইকটি চালিয়ে নিয়ে যান এক জন। অর্ধনগ্ন অবস্থায় মহিলাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায় বাইক। কেউ কেউ এর ভিডিয়ো করেছিলেন (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। যা দেখে তোলপাড় শুরু হয় সমাজমাধ্যমে। নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যে শুরু হয়ে যায় রাজনৈতিক শোরগোল। বিজেপি জমানায় মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে কংগ্রেস এবং আপ।
আরও পড়ুন:
শুক্রবার সে রাজ্যের পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টি নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ওই ঘটনার মূল অভিযুক্ত বলা হচ্ছে শ্বশুরকে। ওই ঘটনার পর শ্বশুরবাড়িতে বন্দি অবস্থায় ছিলেন নির্যাতিতা। তাঁকে উদ্ধারের সঙ্গে সঙ্গে শ্বশুর-সহ ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, বধূর স্বামী একটি খুনের মামলায় জেলে রয়েছেন। শ্বশুরের বিরুদ্ধেও বেশ কিছু মামলা রয়েছে। বধূকে লাঞ্ছনার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিন জন অধরা। তাঁদের খোঁজ চলছে।