চার দিনের মাথায় পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। শনিবার বিকেলে দুই দেশের তরফে জানানো হয়েছে, আজ বিকেল ৫টা থেকে ভারত ও পাকিস্তান সব ধরনের সংঘর্ষ থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই ঘোষণার পর থেকে দুই দেশকেই স্বাগত জানিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনেতারা। কেউ কেউ প্রশংসা করেছেন আমেরিকার মধ্যস্থতারও।
ভারত-পাক সংঘাত কমানোর যাবতীয় প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও। মহাসচিবের উপ-মুখপাত্র ফারহান হক সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেন, ‘‘দু’তরফেই সংঘাত বন্ধ করার সমস্ত প্রচেষ্টাকে আমরা স্বাগত জানাই। আমরা গোটা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখছি।’’ ‘সকলের স্বার্থে’ গৃহীত ভারত-পাক যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ব্রিটেনের বিদেশসচিব ডেভিড ল্যামিও।
বাংলাদেশের অন্তর্বতিকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসও নিজের এক্স হ্যান্ডলে ভারত-পাক যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানিয়েছেন। পাশাপাশি, মার্কিন মধ্যস্থতার প্রশংসাও করেছেন তিনি। ইউনূস লেখেন, ‘‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং বিদেশসচিব রুবিয়োকে তাঁদের মধ্যস্থতার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। বাংলাদেশ তার দুই প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সমস্ত বিরোধ কূটনৈতিক আলোচনার মধ্য দিয়ে মিটিয়ে তাদের পাশে থাকবে।’’
উল্লেখ্য, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ মাত্র এক মিনিটের একটি সাংবাদিক বৈঠক করে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা করেন ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী। ওই সাংবাদিক বৈঠকের কিছু ক্ষণ আগেই নিজের ট্রুথ সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে তিনি লেখেন, ‘‘আমেরিকার মধ্যস্থতায় রাতভর (আমেরিকার হিসাবে) আলোচনার পর, আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি, যে ভারত এবং পাকিস্তান অবিলম্বে পূর্ণ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।’’ পাশাপাশি, ভারত ও পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে স্বাগত জানিয়ে ট্রাম্প আরও মন্তব্য করেন, ‘‘বাস্তবজ্ঞান এবং বুদ্ধিমত্তার সদ্ব্যবহার করার জন্য দুই দেশকে অভিনন্দন।’’ কয়েক মিনিটের মাথায় পাক উপপ্রধানমন্ত্রী তথা বিদেশমন্ত্রী মহম্মদ ইশাক দারও যুদ্ধবিরতি নিয়ে নয়াদিল্লি-ইসলামাবাদ ঐকমত্যের কথা জানান।
এর পরেই মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়ো যুদ্ধবিরতির কথা জানিয়ে নিজের এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘‘আমরা গত ৪৮ ঘণ্টা ধরে নরেন্দ্র মোদী, শাহবাজ শরিফ, ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনির, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং আসিম মালিক (আইএসআই প্রধান)-সহ ঊর্ধ্বতন ভারতীয় ও পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি।’’ তারই পরিণতিতে সংঘর্ষবিরতি হয়েছে বলে জানান তিনি। শান্তির কথা মাথায় রেখে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার জন্য দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদও জানান তিনি। একই সুর মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সের গলাতেও। তিনি বলেন, ‘‘আমেরিকার প্রেসিডেন্টের দল, বিশেষত রুবিয়ো অসাধারণ কাজ করেছেন। এ ছাড়া, দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকেও তাঁদের পরিশ্রম এবং যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই।’’