বিচার সভায় মার খেয়ে প্রাণ হারাল ১১ বছরের এক কিশোর। গত কালের ঘটনা হলেও ভয়ে কেউ মুখ খুলছিলেন না। গোয়েন্দা সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ স্থানীয় একটি মাঠ থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে। মৃত কিশোরের ময়নাতদন্তও করানো হয়েছে।
ঘটনার শুরু মার্বেল খেলাকে কেন্দ্র করে। ধোয়ারবন্দ থানার ওসি মণ্টুরাম বরা জানিয়েছেন, বিনোদনগর চা বাগানের কিশোররা সোমবার বিকেলে মার্বেল খেলছিল। হঠাৎ রঞ্জিত তেলেঙ্গানার একটি মার্বেল পাশের দোকানে ঢুকে যায়। দোকানটি তখন বন্ধ ছিল। শাটারের নীচে হাত ঢুকিয়ে রঞ্জিত মার্বেল আনার চেষ্টা করছিল। দোকান মালিক রাজেশ শুক্লবৈদ্যর ভাইপো মুন্না শুক্লবৈদ্য বিষয়টি দেখে ফেলে। সে রঞ্জিতকে ধরে ফেলে। অভিযোগ করে, দোকান ভেঙে চুরির চেষ্টা হচ্ছিল। লোকজনও জড়ো হয়ে যায়। রঞ্জিতকে মারধর করে বেঁধে রাখা হয়।
পরে তার বাবা রবিলাল তেলেঙ্গানা ক্ষমা চেয়ে ছেলেকে বাড়ি নিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর রাজেশ শুক্লবৈদ্য, মুন্না শুক্লবৈদ্যরা তাদের বাড়িতে চড়াও হয়। বসে বিচারসভা। অভিযোগ, রঞ্জিত বার বার মার্বেল খোঁজার কথা বলতেই মুন্না তার দুই গালে জোরে দুই চড় কষায়। সঙ্গে সঙ্গে রঞ্জিতের মুখ দিয়ে রক্ত বেরোতে থাকে। বিচার সভাতেই প্রাণ হারায় ১১ বছরের কিশোর।
এই ঘটনা পুলিশে জানাজানি হলে তাকেও প্রাণে মারা হবে বলে ভয় দেখানোয় রঞ্জিতের বাবা রবিলাল আর থানায় যাননি।
তবে গোয়েন্দা সূত্রে খবর পেয়ে যান মণ্টুবাবু। গত কাল বিনোদনগর বাগানে যান তিনি। রঞ্জিতের মৃতদেহ উদ্ধার করে মেডিক্যাল কলেজে পাঠান। আজ মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। মণ্টুবাবু বলেছেন, রবিলালের পরিবার আজও ভয়ে এফআইআর দায়ের করতে রাজি ছিল না। পরে সন্ধ্যায় লিখিত অভিযোগ পুলিশের কাছে জমা দিয়েছে। তাতে চার জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্তরা হল, রাজেশ শুক্লবৈদ্য, মুন্না শুক্লবৈদ্য, কৃষ্ণ দাস এবং সোনারাম দাস। চার জনই ফেরার। পুলিশ জানিয়েছে, বিচারসভায় উপস্থিত অন্যরাও বাড়ি ছাড়া।