Advertisement
E-Paper

আম আদমির জন্যই সংস্কার, বার্তা জেটলির

পথ একই থাকবে। শুধু বদলে যাবে প্রচারের কৌশল। দিল্লি-ভোটে আম আদমি পার্টির (আপ) কাছে বিজেপি ধরাশায়ী হওয়ার পরে সংস্কার নিয়ে এ ভাবেই এগোতে চাইছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। আসন্ন বাজেটে বার্তা দিতে চাইছেন যে, সংস্কার থামবে না, কিন্তু তা হবে সাধারণ মানুষের জন্যই। দিল্লি বিধানসভায় আপের ঝাড়ুতে সাফ হয়ে যাওয়ার পরেও সংস্কারের পথেই অটল থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এ দিন সেই কথাই সরকারি ভাবে ঘোষণা করেছেন জেটলি। তিনি বলেন, “চার রাজ্যে জেতার পর একটিতে হার হয়েছে বলেই সংস্কারের গতি কমবে, এমন ভাবার কোনও ভিত্তি নেই।’’

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৪:৩০

পথ একই থাকবে। শুধু বদলে যাবে প্রচারের কৌশল। দিল্লি-ভোটে আম আদমি পার্টির (আপ) কাছে বিজেপি ধরাশায়ী হওয়ার পরে সংস্কার নিয়ে এ ভাবেই এগোতে চাইছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। আসন্ন বাজেটে বার্তা দিতে চাইছেন যে, সংস্কার থামবে না, কিন্তু তা হবে সাধারণ মানুষের জন্যই।

দিল্লি বিধানসভায় আপের ঝাড়ুতে সাফ হয়ে যাওয়ার পরেও সংস্কারের পথেই অটল থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এ দিন সেই কথাই সরকারি ভাবে ঘোষণা করেছেন জেটলি। তিনি বলেন, “চার রাজ্যে জেতার পর একটিতে হার হয়েছে বলেই সংস্কারের গতি কমবে, এমন ভাবার কোনও ভিত্তি নেই।’’

অনেকে মনে করছেন, এই কথায় আজ জেটলি এক ঢিলে দুই পাখি মেরেছেন। দিল্লিতে বিজেপি হারের পর মোদী-সরকার আরও দ্রুত সংস্কার করবে এই আশায় শেয়ার বাজার চাঙ্গা হয়েছে। অন্য দিকে, শিল্পমহলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল যে, এ বার ভোট-রাজনীতির কথা ভেবে মোদী-সরকার সাহসী সংস্কার থেকে পিছিয়ে যাবে না তো? আজ জেটলি সেই আশঙ্কাও দূর করতে চেয়েছেন।

কিন্তু এতে সাধারণ মানুষ আশ্বস্ত হবেন কী ভাবে? মন্ত্রিসভার এক সদস্যের ব্যাখ্যা, সাধারণ মানুষ অর্থাৎ আম আদমির মধ্যে একটা ধারণা তৈরি হয়েছে যে, সংস্কার হচ্ছে মূলত শিল্পপতিদের লাভের কথা ভেবে। কিন্তু আখেরে যে এতে সাধারণ মানুষেরই লাভ হবে, তা বোঝানো দরকার। প্রতি মাসে দশ লক্ষ নতুন তরুণ-তরুণী চাকরির সন্ধানে বাজারে বার হন। এই সংখ্যায় কাজের সুযোগ তৈরির জন্য নতুন শিল্প, কারখানা দরকার। চাই নতুন লগ্নি। আর সংস্কার জরুরি সেই লগ্নির পরিবেশ গড়ে তোলার জন্যই। জমি অধিগ্রহণ আইনে সংশোধনও সে দিকে তাকিয়ে। যাতে কারখানা গড়তে গিয়ে সমস্যায় না পড়েন শিল্পোদ্যোগীরা।

আগামী বাজেটের মূল লক্ষ্যই নতুন কাজের সুযোগ তৈরি। রোজগারের সুযোগ বাড়ানো। জেটলির কথায়, “নতুন লগ্নির হাত ধরে কর্মসংস্থান ও দারিদ্র দূরীকরণের জন্য সংস্কারে আমরা বদ্ধপরিকর।”

অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের চিন্তার কারণ হল, এখনও নতুন লগ্নি সে ভাবে আসছে না। তার কারণ মূলত দু’টি। এক, অধিকাংশ কর্পোরেট সংস্থা কয়েক বছরে বিশেষ লাভ না-করায় এখনই নতুন লগ্নির সাহস করছে না। দুই, ঋ

ণে সুদ কমবে বলে অপেক্ষা করছে শিল্পমহল। বেসরকারি লগ্নির অভাব মেটাতে তাই প্রথমে সরকারি লগ্নি বাড়ানোয় নজর দেওয়া হবে। অর্থ মন্ত্রক সূত্রে খবর, আগামী আর্থিক বছরে কেন্দ্র ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি পরিকাঠামোয় বিপুল অঙ্কের লগ্নি করবে। সে রূপরেখা মিলবে বাজেটেই। বলা হবে, পরিকাঠামো তৈরি হলে বিপুল সংখ্যায় কর্মসংস্থানের কথাও।

দিল্লি-ভোটের ফল বেরনোর পরে অবশ্য আর একটি বিষয় নিয়েও জোরদার আলোচনা হচ্ছে অর্থ মন্ত্রকে। তা হল আয়কর-কাঠামোর হেরফের করে মধ্যবিত্তকে কিছুটা সুরাহা দেওয়া। যা হয়তো সাধারণ মানুষের মন জেতার অন্যতম সহজ উপায়। মোদী-সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত বছর প্রথম বাজেটে আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা ২ লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ২.৫ লক্ষ টাকা করা হয়েছিল। প্রবীণ নাগরিকদের জন্য তা বেড়ে হয়েছিল ৩ লক্ষ। জেটলি তখনই বলেছিলেন, তিনি ওই ঊর্ধ্বসীমা আরও বাড়াতে চান। কিন্তু রাজকোষ ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে গিয়ে তা করতে পারছেন না।

এখন বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম কমায় তেল আমদানির খরচ কমেছে। আবার পেট্রোল-ডিজেলের উপর শুল্ক বসিয়ে বাড়তি আয়ও হাতে এসেছে। ফলে এখন জেটলি আয়করে ছাড় বাড়ানোর সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে পারেন বলে মনে করছেন অনেকে। রাজস্ব দফতরের কর্তাদের বক্তব্য, করছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা খুব বেশি বাড়লে, করদাতার সংখ্যা অনেকটা কমে যাবে। কিন্তু বৃদ্ধির অঙ্ক কম হলে, রাজস্ব আদায়ে খুব বেশি প্রভাব পড়বে না। বরং আয়কর ছাড়ের সীমা বাড়ালে, মানুষের হাতে বাড়তি নগদ থাকবে। খুশি হবেন মধ্যবিত্তরা। যাঁরা বিজেপির সবথেকে বিশ্বস্ত ভোটব্যাঙ্ক। নগদ বেশি থাকলে, কেনাকাটা বাড়বে। বাড়বে বৃদ্ধির হার।

আগামী বছরে বৃদ্ধির হার ৮ শতাংশের উপরে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়েই বাজেট তৈরি করছেন জেটলি। এ দিনও তিনি বলেন, “আমরা আরও দ্রুত গতিতে বৃদ্ধির জন্য তৈরি।”

বিজেপি নেতৃত্বেরও বক্তব্য, ‘আচ্ছে দিন’ আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটে লড়েছিলেন মোদী। কিন্তু গত ন’মাসে সেই প্রতিশ্রুতি সে ভাবে পূরণ করা যায়নি বলে ধারণা তৈরি হয়েছে। যা দিল্লি-ভোটে হারের অন্যতম কারণ। এরপরও যদি মোদী-সরকার সংস্কারের সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে যায়, তবে তা বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়ে ফেলবে বলে দলের আশঙ্কা।

AAP arun jaitley
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy