আর্থিক ও কৌশলগত ভাবে মজবুত ইন্দো-মার্কিন সম্পর্ক কখনওই চিনের দিকে তাকিয়ে নয়। বরং তা সারা বিশ্বের উন্নতির লক্ষ্যেই। বুধবার কলকাতায় এ কথা জানালেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রিচার্ড রাহুল বর্মা।
‘বিল্ডিং প্যান এশিয়া কানেক্টিভিটি’ শীর্ষক সম্মেলনে যোগ দিতে এসেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। দু’দিন ধরে এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করছেন দেশবিদেশের বিশেষজ্ঞেরা। উদ্যোক্তা কলকাতার মার্কিন কনস্যুলেট, ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি এবং অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন নামে একটি সংস্থা। বুধবার, সম্মেলনের শেষ দিনে মার্কিন প্রশাসনের অভিমত জানাতেই রিচার্ড বর্মা কলকাতায় এসেছিলেন।
সম্মেলনের প্রশ্নোত্তর পর্বে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, “ভারত আর আমেরিকার সম্পর্ক মজবুত। এবং সেটা আঞ্চলিক এবং এক অর্থে সারা বিশ্বের স্বার্থেই। অন্য কোনও দেশের কথা ভেবে নয়। চিনের কথা ভেবে তো নয়ই।” রিচার্ডের বিশ্বাস, ভারত আর আমেরিকা এক জায়গায় এলে বিশ্বের চেহারা বদলে যেতে পারে। চিনের সঙ্গে ভারত বা আমেরিকার সম্পর্ক নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত জানান, ভারত-চিন কিংবা আমেরিকা-চিন সম্পর্ক সব সময়েই এক দিক থেকে জটিল, আবার অন্য দিক থেকে সুসংহত। এখানে এক দিকে যেমন প্রতিযোগিতা রয়েছে, তার পাশাপাশি আছে সহযোগিতার দিকও। রিচার্ড বলেন, “চিনের সঙ্গে আর্থিক সম্পর্ক রয়েছে আমাদের উভয়েরই (ভারত আর আমেরিকা)। কিন্তু যখন নিরাপত্তা বা মানবাধিকারের প্রশ্ন আসে, তখন আমরা সরব হই।”
এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর ক্ষেত্রে সব চেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা কী? মার্কিন দূতের জবাবে, “অবশ্যই নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং উগ্রপন্থা। কারণ, সব কিছুর আগে এই অঞ্চলের মানুষকে নিরাপদে বাঁচতে হবে। তা ছাড়া এ তল্লাটে গণবিধ্বংসী অস্ত্রের উপস্থিতিটাও চিন্তার।” তবে যদি ধারাবাহিক আর্থিক বৃদ্ধির সঙ্গে সকলকে যুক্ত করা যায়, তা হলে পরিস্থিতি দ্রুত বদলাবে বলে মনে করেন এই মার্কিন কূটনীতিক।
বিশ্বের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য এশিয়ার আর্থিক বৃদ্ধি যে জরুরি, তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে রিচার্ড জানান, এই অঞ্চলে যোগাযোগ আরও নিবিড় করে তোলার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ অনেক। তবে সার্বিক আর্থিক বৃদ্ধির অভাব আর জলবায়ু পরিবর্তনই সব চেয়ে বড় বাধা বলে মনে করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।