Advertisement
E-Paper

এ বার কি দাউদের পালা, টুইটে বিস্ফোরক নকভি

আগের দিনই বিহারের মাটিতে দাঁড়িয়ে জেহাদি জঙ্গিদের নিকেশ করার অঙ্গীকার করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। এ বার সেই বিহার থেকেই এক প্রাক্তন জেডিইউ নেতা বিজেপিতে যোগ দিলেন, ইসলামি সন্ত্রাসের সঙ্গে যাঁর নাম জড়িত বলে অভিযোগ। আজ দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে সাঙ্গোপাঙ্গ নিয়ে দলে যোগ দেন সাবির আলি। তার কিছু ক্ষণ পরেই টুইটারে রীতিমতো বোমা ফাটান বিজেপির ভাইস প্রেসিডেন্ট মুখতার আব্বাস নকভি। তিনি লেখেন, “জঙ্গি ভটকলের বন্ধুকে দলে নেওয়া হল। এ বার তবে দাউদ ইব্রাহিমের পালা!”

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৪ ০৩:৪৮

আগের দিনই বিহারের মাটিতে দাঁড়িয়ে জেহাদি জঙ্গিদের নিকেশ করার অঙ্গীকার করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। এ বার সেই বিহার থেকেই এক প্রাক্তন জেডিইউ নেতা বিজেপিতে যোগ দিলেন, ইসলামি সন্ত্রাসের সঙ্গে যাঁর নাম জড়িত বলে অভিযোগ।

আজ দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে সাঙ্গোপাঙ্গ নিয়ে দলে যোগ দেন সাবির আলি। তার কিছু ক্ষণ পরেই টুইটারে রীতিমতো বোমা ফাটান বিজেপির ভাইস প্রেসিডেন্ট মুখতার আব্বাস নকভি। তিনি লেখেন, “জঙ্গি ভটকলের বন্ধুকে দলে নেওয়া হল। এ বার তবে দাউদ ইব্রাহিমের পালা!”

এক দিকে মুখতারের কথায় অস্বস্তি, অন্য দিকে দলীয় অনৈক্য সামনে এসে পড়া দু’দিক থেকেই বিব্রত বিজেপি নেতৃত্ব। কিছু দিন আগেই কনার্টকে খনি কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত রেড্ডি ভাইদের ঘনিষ্ঠ বি শ্রীরামুলুকে দলে নেওয়া নিয়ে ঠিক এই ভাবেই টুইটারে সরব হয়েছিলেন সুষমা স্বরাজ। দলের সভাপতি রাজনাথ সিংহ পরে বলেছিলেন, দলের ব্যাপার নিয়ে এ ভাবে বাইরে মুখ খোলা ঠিক নয়। এ দিন কিন্তু সেই সুষমার পথেই হাঁটলেন মুখতার।

ভোটের আগে দলে নানা বিষয়ে জলঘোলা কম হচ্ছে না। উত্তরপ্রদেশে অমিত শাহ অধিকাংশ প্রার্থী স্থির করেছেন বলে খোদ রাজনাথ অসন্তুষ্ট। উমা ভারতীকে ঝাঁসি থেকে সরানোর নিয়ে ঝামেলা চলছে। আডবাণীর আসন-জট, মুরলীমনোহর জোশীর আসন বদল, যশোবন্ত সিংহকে টিকিট না দেওয়ার মতো ঘটনা তো রয়েইছে। তার মধ্যে গেরো বাড়ালেন মুখতার।

মুখতারের ক্ষোভের কারণ? দলের একাংশ অভিযোগ করছেন, ব্যাপারটা নাকি একান্তই ব্যক্তিগত। দীর্ঘ দিন ধরে দলের সংখ্যালঘু মুখ হয়ে থেকেছেন মুখতার। দলীয় অনৈক্যের বহু মুহূর্ত সামাল দিয়েছেন। এই অবস্থায় অন্য সংখ্যালঘু নেতার যোগদান তাঁর পক্ষে স্বস্তিকর নয় বলেই অনেকের দাবি। অন্য দিকে মুখতার নিজে তাঁর ক্ষোভের যে কারণ দেখাচ্ছেন, তা বিজেপির জন্য গুরুতর। মুখতারের অভিযোগ, সাবির আলির সঙ্গে ইসলামি জঙ্গিদের নিবিড় যোগ রয়েছে। তিনি নাকি ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন নেতা ইয়াসিন ভটকলের বন্ধু এবং দাউদ ইব্রাহিমের আত্মীয়। মুম্বইয়ে সাবিরের বাড়িতে ভটকল এক বার আশ্রয় নিয়েছিলেন বলেও মুখতারের দাবি। সূত্রের খবর, সাবির বরাবরই বিতর্কিত নেতা। আদতে বিহারের বাসিন্দা। এক সময়ে মুম্বইয়ে চলে যান। টি সিরিজের প্রাক্তন কর্ণধার গুলশন কুমারের হত্যাকাণ্ডে তাঁর নাম জড়িয়েছিল। কয়েকটি শিবিরের দাবি, দাউদ ইব্রাহিমের তুতো বোন ইয়াসমিন আলিকে বিয়ে করার পরে সাবিরের ভাগ্য ফেরে। আর্থিক স্বচ্ছলতার পাশাপাশি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে তাঁর।

প্রথমে রামবিলাস পাসোয়ানের লোক জনশক্তি পার্টিতে ছিলেন সাবির। পরে যোগ দেন জেডিইউতে। নীতীশ কুমারের দলের দিল্লি শাখার প্রধান হন তিনি। দিল্লি বিধানসভা ভোটে জেডিইউ-এর প্রচারের দায়িত্ব সামলেছিলেন সাবির। এ বারে লোকসভা নির্বাচনে টিকিটও পেয়েছিলেন প্রথমে। কিন্তু তার পর প্রকাশ্যে মোদীর প্রশংসা করায় দল থেকে বহিষ্কার করা হয় তাঁকে। আজ কয়েকশো সমর্থকের উপস্থিতিতে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। অনুষ্ঠানে রাজনাথ সিংহের সহায়ক সুধাংশু ত্রিবেদী, বিহারের দায়িত্বে থাকা নেতা ধর্মেন্দ্র প্রধান উপস্থিত ছিলেন। রাজনাথ নিজে অবশ্য ছিলেন না। তার কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, লখনউয়ে প্রচারের কাজে ব্যস্ত থাকার জন্য তিনি আসতে পারেননি।

ক্ষুব্ধ নকভি দাবি করছেন, “দল ভুল করেছে। ভুল শুধরোতে হবে।” সম্প্রতি কর্নাটকে শ্রীরাম সেনে-র নেতা প্রমোদ মুতালিককে দলে নিয়েও তাঁর সদস্যপদ খারিজ করা হয়েছে। মুখতারের বক্তব্য, সাবির আলির সদস্যপদও খারিজ করতে হবে। কিন্তু ঘটনা হল, মুতালিকের ক্ষেত্রে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব গোটা দায় রাজ্য নেতাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু সাবিরকে নেওয়া হয়েছে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে। সুধাংশু ত্রিবেদী বলার চেষ্টা করছেন, বিহার ইউনিটের পরামর্শেই সব হয়েছে। রাজনাথ রাতে মোদীকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, নীতীশের বিষয়ে অনেক কিছু জানেন সাবির। তাই তাঁকে নেওয়া হয়েছে। অতীতের সব অভিযোগ থেকে সাবির এখন মুক্ত বলেও রাজনাথ শিবিরের দাবি।

কিন্তু নকভির বিদ্রোহের পরে হাতে অস্ত্র পেয়ে গিয়েছেন অন্য বিক্ষুব্ধ নেতারা। তাঁরা প্রশ্ন তুলছেন, গোটা দেশে যদি মোদী হাওয়া উঠে থাকে, যদি শরিকের প্রয়োজন না-ই হয় তা হলে বিতর্কিত নেতাদের কেন সামিল করা হচ্ছে বিজেপিতে?

sabir ali mukhtar abbas nakbhi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy