বয়স তখন কুড়ির কোঠায়। মন উড়ুউড়ু। প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিলেন রাধা এবং মাধব। আমদাবাদে বাড়ি। কয়েক মাস পরই তাঁদের আশঙ্কা হল জাতপাতের ঝামেলায় বাড়ির লোক বিয়ে দেবে না। তাই এক গভীর রাতে বাড়ি ছেড়ে পালালেন রাধা-মাধব। সেটা ১৯৯৭।
দিন কয়েক আগে একটি বিয়েবাড়িতে গিয়ে হঠাৎই রাধাকে দেখতে পান তাঁর ভাই। চুলে পাক ধরেছে, কিন্তু দিদিকে চিনতে অসুবিধা হয়নি। প্রায় দু’দশক পরে দেখা। এক রাশ কান্নাকাটি সেরে দিদিকে অনেক বুঝিয়ে সুজিয়ে বাড়ি নিয়ে এলেন। ডাকা হল জামাইবাবুকেও। তিনি এলেন। কিন্তু এ কী! এ তো মাধব নয়! চোখ মাথায় উঠল বাড়ির লোকের। ১৭ বছর পরে ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আশায় এসেছিলেন মাধবের বাড়ির লোকও। তাঁরা কান্নাকাটি জুড়ে বললেন, “এই মেয়ে নিশ্চয় মাধবকে খুন করেছে। তার পর এই ছেলেটাকে বিয়ে করেছে। ওকে পুলিশে দে।”
পরিস্থিতি তখন থানা-পুলিশ পর্যন্ত গড়িয়েছে। রাধা কত কিছুই বলতে চায়, কিন্তু কেউ শুনতে চাইলে তো! এমন সময় থানায় উপস্থিত হলেন খোদ মাধব। বাড়ির লোক আনন্দে আত্মহারা। তখন মাধবই বললেন, রাধা নির্দোষ। আসলে রাধার সঙ্গে ঝোঁকের মাথায় পালালেও পরে বিবেক দংশনের চোটে টিকতে পারছিলেন না। রাধাকে সাফ বলে দেন, “বাড়ি ফিরে যাও।” হাতে কিছু টাকাপয়সাও দিয়ে দেন। কিন্তু বাড়িতে কী ভাবে মুখে দেখাবেন ভেবে আর ফিরতে পারেননি রাধা। তিনি আশ্রয় নেন চেনা এক জ্যোতিষীর বাড়ি। মাধবকে বিয়েতে রাজি করানোর জন্য জ্যোতিষীও আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু মাধব নাছোড়। কয়েক বছর পরে রাধা সিদ্ধান্ত নেন বিয়ে করবেন ওই জ্যোতিষীকেই। এত দিন তাঁর সঙ্গেই সুখে ঘরকন্না করেছেন। অন্য দিকে, মাধবও অন্য এক মহিলাকে বিয়ে করে সংসার পেতেছেন সেই ভাবনগরেই।
রাধা-মাধবের গল্প শুনে তখন সবাই হতভম্ব। হঠাৎই উড়ে এলো প্রশ্ন। মাধব কী ভাবে থানায় পৌঁছলেন রাধাকে বাঁচাতে? লাজুক মুখে জবাব জামাই-জ্যোতিষীর, “আমিই মাধবের বাড়ি গিয়েছিলাম। নইলে বউকে খামোখা জেল খাটতে হতো যে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy