কাল এসেছিলেন নবীন পট্টনায়ক। আজ এলেন জয়ললিতা। ওড়িশা ও তামিলনাড়ুর দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করতে। তবে এনডিএ-তে আরও শরিক টেনে আনার কাজটিও মোদী তলে তলে এগোতে চাইছেন বলে রাজনৈতিক সূত্রের খবর।
গতকাল ওড়িশার দাবি বিবেচনা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মোদী। আজ তামিলনাড়ুর দাবি নিয়ে তাঁকে একটি স্মারকলিপি দেন জয়ললিতা। তামিলনাড়ু সরকার জানিয়েছে, কাবেরী নদীর জলবণ্টন ও মুল্লাপেরিয়ার বাঁধ নিয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপের দাবি করেছেন জয়ললিতা। শ্রীলঙ্কার তামিলদের সমস্যা নিয়ে মোদীর সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। তামিলকে সরকারি ভাষার মর্যাদা দেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন এডিএমকে নেত্রী। তাঁর সব দাবিই বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
গতকাল বিজেডি-র এনডিএ জোটে আসার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন নবীন। এই বিষয়টি এখনও ভেবে দেখা হয়নি বলে জানিয়েছিলেন তিনি। আজ একই প্রশ্নের মুখে পড়েন জয়ললিতা। তিনি বলেন, “মোদী সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। তাই সমর্থনের প্রয়োজন নেই। তবে রাজ্যসভায় প্রয়োজনে তাদের সমর্থন করা হবে কি না তা এডিএমকে ভেবে দেখবে।”
সংখ্যার বিচারে রাজ্যসভায় বিল পাশ করাতে জয়ললিতা-নবীনের সমর্থন মোদীর প্রয়োজন। আবার রাজ্যের উন্নয়নের ক্ষেত্রে মোদী সরকারকে প্রয়োজন জয়ললিতা ও নবীনের। ভোটের সময়ে রাজনৈতিক আক্রমণ করলেও মোদীর সঙ্গে কাজ করতে তাঁদের আপত্তি নেই। সংখ্যালঘু ভোট টানার তাগিদ থাকায় এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে মোদীর সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করা অস্বস্তিকর হতে পারে। কিন্তু, জয়ললিতা বা নবীনের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। অনেকের মতে, জয়ললিতা ও নবীন এনডিএ-তে আসতে রাজি ছিলেন। কিন্তু, বিজেপি বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ায় আপাতত থমকে গিয়েছেন তাঁরা। মোদী অবশ্য এনডিএ-তে যত বেশি সম্ভব শরিক আনতে আগ্রহী। তাতে এক দিকে তাঁর হাত আরও শক্ত হবে। অন্য দিকে বিরোধী আসনে আরও নিঃসঙ্গ হয়ে পড়বে কংগ্রেস।
ইউপিএ জমানায় বিরোধী দলের হাতে থাকা রাজ্যগুলি বঞ্চনার শিকার হয়েছে বলে ভোট প্রচারে বার বার দাবি করেছিলেন মোদী। বিজেপি সূত্রে খবর, এখন সব রাজ্যকে উন্নয়নে সাহায্য করতে আন্তরিক ভাবেই চান তিনি। আর সেই অস্ত্রেই যদি নবীন-জয়াকে নিজের দিকে টেনে আনা যায় তবে আরও লাভ হবে তাঁর। অদূর ভবিষ্যতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ হবে। তখন নয়া শরিকদের কথাও ভাবা যেতেই পারে।
তা-ই নিজে জয়ললিতার সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি আজ আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদকেও তাঁর কাছে পাঠান প্রধানমন্ত্রী। দীর্ঘ দিন জয়ললিতার সঙ্গে ব্যক্তিগত স্তরে যোগাযোগ রক্ষার কাজ করেছেন রবিশঙ্কর। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, তাঁকে পাঠিয়ে এডিএমকে নেত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিতে চান মোদী। প্রধানমন্ত্রীর কৌশলে এনডিএ-র পরিধি বাড়ে কি না, তা-ই এখন দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy