আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস ছিলই। কিন্তু এমনটা যে হবে তা বোধ হয় কেউই আন্দাজ করতে পারেননি। শুক্রবার বিকেলের দেড় ঘণ্টার ঝড়-বৃষ্টি দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকায় প্রাণ কাড়ল ন’জনের। এর মধ্যে ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে দিল্লিতে। তিন জন মারা গিয়েছেন গাজিয়াবাদে। গাছ পড়ে, দেওয়াল ভেঙে জখম হয়েছেন ১৩ জন।
গত কয়েক দিন ধরেই তাপমাত্রার পারদ চড়ছিল দিল্লিতে। অসহ্য গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন শহরবাসী। বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা ছিল ৪৩.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার বিকেল পাঁচটা বাজতে না বাজতেই আকাশ কালো করে ঝেঁপে বৃষ্টি নামে। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ৯০ কিলোমিটার বেগে ঝড়। পাকিস্তানে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার কারণে এ দিনের ভয়াবহ ঝড় বলে জানানো হয়েছে আবহাওয়া অফিসের তরফে।
ঝড়ে সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পূর্ব দিল্লি, নয়ডা ও গাজিয়াবাদের বিস্তীর্ণ এলাকা। দিল্লি শহরের নানা জায়গায় গাছ উপড়ে গিয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির উপরে গাছ পড়ে দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে বেশ কিছু গাড়ি। বন্ধ হয়ে গিয়েছে কিছু রাস্তাও।
ব্যাহত হয়েছে মেট্রো পরিষেবাও। বিকেলের ব্যস্ত সময়ে প্রায় এক ঘণ্টা বন্ধ ছিল মেট্রো পরিষেবা। বিভিন্ন মেট্রো স্টেশনের বাইরে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় নিত্যযাত্রীদের। মেট্রো রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্ধ্যা ছ’টা থেকে মেট্রো পরিষেবা স্বাভাবিক হয়েছে। বিঘ্ন ঘটেছে ট্রেন চলাচলেও। অতি বৃষ্টি ও ঝড়ে জনকপুরী এবং ইন্দ্রলোকের মতো কিছু এলাকায় ওভারহেড তারে টিনের পাত ও পাইপ জড়িয়ে যায়। ফলে ওই সব স্টেশনে বেশ কিছুক্ষণ ট্রেন দাঁড়িয়ে ছিল। বিপাকে পড়েন নিত্যযাত্রীরা। এক থেকে চার ঘণ্টা বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ ছিল দক্ষিণ, পূর্ব ও উত্তর দিল্লির বেশ কিছু এলাকায়। উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিল্লির কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হতে সময় লাগে দীর্ঘক্ষণ।
ঝড়ে গাছ উল্টে বন্ধ হয়ে গিয়েছে রাস্তা। শুক্রবার নয়াদিল্লিতে। ছবি:এপি।
ঝড়-বৃষ্টিতে বিঘ্ন ঘটেছে বিমান পরিষেবাতেও। ইন্দিরা গাঁধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাঁচটি বিমান। কাছাকাছি বিমানবন্দরগুলিতে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে চব্বিশটি বিমানকে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী দু’দিনও একই রকম আবহাওয়া থাকবে।