Advertisement
E-Paper

পাসোয়ান আসতেই শরিক-পালে হাওয়া

তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ শিবির থেকে রামবিলাস পাসোয়ানকে সঙ্গে পেয়ে উজ্জীবিত বিজেপি ভোটের আগেই নেমে পড়ল জোট প্রসারের কাজে। বিজেপি-র শীর্ষ সূত্রের মতে, রামবিলাসকে জোটে পাওয়াটা বিহারের রাজনীতিতে ফারাক তো ঘটাবেই, তার থেকেও বেশি প্রভাব ফেলবে জাতীয় রাজনীতিতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৪ ০৮:৪১

তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ শিবির থেকে রামবিলাস পাসোয়ানকে সঙ্গে পেয়ে উজ্জীবিত বিজেপি ভোটের আগেই নেমে পড়ল জোট প্রসারের কাজে। বিজেপি-র শীর্ষ সূত্রের মতে, রামবিলাসকে জোটে পাওয়াটা বিহারের রাজনীতিতে ফারাক তো ঘটাবেই, তার থেকেও বেশি প্রভাব ফেলবে জাতীয় রাজনীতিতে।

এত দিন নরেন্দ্র মোদীর বিরোধিতা করে যাঁরা ধর্মনিরপেক্ষতার হুজুগ তুলে আসছিলেন, রামবিলাসের আগমনের পর তাঁরা বড়সড় ধাক্কা খেয়েছেন। মোদীর পক্ষে যে হাওয়া বাড়ছে, তা স্পষ্ট। আর তাই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তো বটেই, সমাজের অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিও বিজেপি-তে যোগ দিতে চাইছেন। বিজেপি নেতৃত্ব এখন অসম গণ পরিষদের নেতাদের সঙ্গে প্রাক-নির্বাচনী সমঝোতার আলোচনা শুরু করেছেন। হরিয়ানার ওমপ্রকাশ চৌটালা আদালত থেকে রেহাই পেলে তাঁর সঙ্গেও জোট ঘোষণা হবে। দক্ষিণে ভাইকো, রামডস, বিজয়কান্তের সঙ্গেও জোট-আলোচনা তুঙ্গে।

বিজেপি নেতাদের মতে, কংগ্রেসের একমাত্র বিকল্প মোদীই। ভোট এলেই তৃতীয় মোর্চা গজিয়ে ওঠাটা নতুন কিছু নয়। কিন্তু এই পরীক্ষা বরাবরই বিফল হয়েছে। রামবিলাস এনডিএ-তে যোগ দেওয়ার আগে বলেছেন, তৃতীয় মোর্চার কোনও অস্তিত্ব নেই। আর অগপ তো তৃতীয় মোর্চায় যোগ দেওয়ার কথা বলেও এখন বিজেপি-র সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন। এনডিএ-র পুরনো শরিক ওড়িশার নবীন পট্টনায়ক এ বারের ভোটে বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়লেও ভোটের পর যোগ দিতে পারেন। বিজেপি-র এক নেতার মতে, নবীনকে এই ভোটে কিছুটা দুর্বল করতেই পারলে তিনি বিজেপি-র শরিক হবেন। জোট হতে পারে জগন্মোহন রেড্ডি, চন্দ্রবাবু নায়ডু ও জয়য়ললিতার সঙ্গেও। এরই মধ্যে তামিলনাড়ুতে জয়ললিতার প্রবল প্রতিপক্ষ ডিএমকে নেতা করুণানিধি এক দফা প্রশংসা করেছেন মোদীর। বিজেপি অবশ্য ডিএমকের সঙ্গে জোট গড়তে আগ্রহী নয়। তবে রাজনৈতিক ভাবে করুণানিধির বক্তব্যকে মোদীর পক্ষে ব্যবহার করার সুযোগ কিন্তু হাতছাড়া করছে না দল।

মোদীর কৌশল রচনার রূপকার অরুণ জেটলি বলেন, “যখন মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছিল, তখন অনেকে বলেছিলেন শরিক খোঁজা দুষ্কর হবে। রাজনৈতিক ভাবে বিজেপি কোণঠাসা হয়ে পড়বে। যাঁরা এক সময় ছেড়ে গিয়েছিলেন, তাঁরাই মোদীর পক্ষে হাওয়া বাড়তে দেখে ফিরে আসছেন।”

জেটলির এই মন্তব্যের মধ্যে লালকৃষ্ণ আডবাণী, সুষমা স্বরাজদের প্রতি সূক্ষ্ম কটাক্ষও দেখতে পাচ্ছেন দলের কিছু নেতা। মোদীর নামে নীতীশকুমার জোট ছাড়ার সময় আডবাণীরা বারবার এই কথা বলে সতর্ক করেছিলেন যে, মোদীর নামে এনডিএ-র সহযোগী পাওয়া যাবে না। এখনও এনডিএ-র সম্ভাব্য শরিকদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার চেষ্টা করেন তিনি। এখন রামবিলাসকে পেয়ে মোদীর সেনাপতিরা দলের সেই নেতাদের প্রতিও বার্তা দিচ্ছেন যে, মোদীর নামেও আসতে রাজি নতুন দল ও পুরনো শরিকরা।

মোদী নিজেও সম্ভাব্য শরিকদের প্রতি বার্তা দিচ্ছেন নরম ভাবে। আরএসএস-প্রধান মোহন ভাগবত তাঁকে সেই পরামর্শই দিয়েছেন। যে কারণে যে রাজ্যেই মোদী প্রচারে যান না কেন, সম্ভাব্য শরিকদের কাছে টানার চেষ্টা করছেন। যেমনটি পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি। রাজ্য নেতাদের আপত্তি সত্ত্বেও। প্রধানমন্ত্রী হলে যে তিনি রাজ্যের হাতেই ক্ষমতা তুলে দেবেন, সেই কথা বারবার বলেও মোদী আঞ্চলিক দলগুলিকে বার্তা দিচ্ছেন। দল ছেড়ে যাওয়া নেতাদেরও ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন তিনি। মোদী-বিরোধী নেতা কেশুভাই পটেল ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কট্টর মোদী-বিরোধী নেতা শঙ্করসিন বাঘেলাকেও ফেরানোর তোড়জোর শুরু হয়েছে। এর আগে আডবাণীর আপত্তি সত্ত্বেও ইয়েদুরাপ্পাকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছিলেন মোদী।

তবে মোদী ও তাঁর সেনাপতিদের এই চেষ্টা রাজ্য স্তরে দলের নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি করছে কিছু ক্ষেত্রে। বিহারে রাজ্য নেতাদের একাংশের ক্ষোভকে উপেক্ষা করেই পাসোয়ানের সঙ্গে জোট গড়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। অসমে অগপ-র সঙ্গে জোট নিয়েও বিজেপির কেন্দ্র ও রাজ্য নেতৃত্বের মধ্যে বিবাদ বেধেছে। বিজেপি নেতা এস এস অহলুওয়ালিয়া অগপ-র সঙ্গে জোট বাঁধার ব্যাপারে চাপ দিচ্ছেন। তাঁর মতে, অতীতের রেকর্ড বলছে অগপ-বিজেপি জোট হলে ফল ভাল হয়। কিন্তু, বিজেপি-র প্রদেশ সভাপতি সর্বানন্দ সোনোয়ালের দাবি, গত ডিসেম্বরে, দলের সাধারণ সভায় লোকসভা ভোটে একলা চলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সেই সিদ্ধান্তই বহাল রাখা উচিত। রাজ্য বিজেপি সূত্রে খবর, অসমের ১৪টি আসনেই তারা লড়তে চেয়েছিলেন। রাজ্য নেতারা মনে করছেন, অগপ-র সঙ্গে জোট বাঁধাটা কাজে আসবে না। বরং, কাঁধে বোঝা বাড়বে। তার উপরে জটিলতা সৃষ্টির সম্ভাবনা ষোলো আনা।

rambilash pasoan national politics
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy