Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পরীক্ষার্থীর হাতে বই দিয়ে সাসপেন্ড কাছাড়ের শিক্ষক

পরীক্ষা-কেন্দ্রের ঘরে ৭-৮টি বই নিয়ে ঘুরছিলেন শিক্ষক। পরীক্ষার্থীরা ডাকলে কখনও বই তুলে দিচ্ছিলেন তাদের হাতে, কখনও বা কোন পৃষ্ঠার কোথায় উত্তর রয়েছে, তা বের করে দিচ্ছিলেন! অসমে মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিন কাছাড় জেলার সিরাজুল আলি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ওই ঘরে নজরদারির দায়িত্ব তাঁকেই দিয়েছিল অসম মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ।

মাধ্যমিকের  প্রথম দিনে শিলচরের একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে। বৃহস্পতিবার স্বপন রায়ের তোলা ছবি।

মাধ্যমিকের প্রথম দিনে শিলচরের একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে। বৃহস্পতিবার স্বপন রায়ের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি ও শিলচর শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৪:১৮
Share: Save:

পরীক্ষা-কেন্দ্রের ঘরে ৭-৮টি বই নিয়ে ঘুরছিলেন শিক্ষক। পরীক্ষার্থীরা ডাকলে কখনও বই তুলে দিচ্ছিলেন তাদের হাতে, কখনও বা কোন পৃষ্ঠার কোথায় উত্তর রয়েছে, তা বের করে দিচ্ছিলেন!

অসমে মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিন কাছাড় জেলার সিরাজুল আলি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ওই ঘরে নজরদারির দায়িত্ব তাঁকেই দিয়েছিল অসম মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ। পরীক্ষার্থীদের ‘সমস্যা’ মেটাতে এ ভাবেই পাহারা দিচ্ছিলেন চানপুর পাবলিক হাইস্কুলের শিক্ষক আহমেদ হোসেন বড়ভুইয়া। খুশিতে ছিল দু’পক্ষই।

আচমকা ওই স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে তাজ্জব হয়ে যান অতিরিক্ত জেলাশাসক অসীমকুমার ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “ওই ঘরে ঢুকতেই দেখি সেখানে হাজির শিক্ষক কিছু লুকানোর চেষ্টা করছেন। খুঁজতেই দেখতে পাই, সেগুলি ইংরেজির নোটবই।” পর্ষদের ‘নোডাল অফিসার’ মহেশচন্দ্র মহন্তকে বিষয়টি দেখার নির্দেশ দেন অসীমবাবু। এর পরই অভিযুক্ত শিক্ষককে পরীক্ষা-কেন্দ্র থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কাছাড়ের বিদ্যালয় পরিদর্শক কাবিলউদ্দিন আহমদ জানান, পরীক্ষার্থীদের নকল করতে সাহায্য করার জন্য ওই শিক্ষককে চাকরি থেকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে, সেখানকার কোনও পরীক্ষার্থীর খাতা বাতিল করা হয়নি। তবে ওই পরীক্ষাকেন্দ্রের অন্য একটি ঘর থেকে নকল করার দায়ে এক ছাত্রীকে বহিষ্কার করা হয়। পর্ষদ সূত্রে খবর, বরাক উপত্যকায় ৩০ জন পরীক্ষার্থীকে নকল করার দায়ে পরীক্ষা-কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। পর্ষদের নোডাল অফিসার মহন্ত জানান, কোনও কোনও পরীক্ষার্থীর পোশাকের মধ্যে বইয়ের পাতা ঠাসা ছিল। কাছাড়ে পরীক্ষার প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়ে তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেন। মহেশচন্দ্র মহন্ত জানান, এখানে অনেক স্কুলে শিক্ষকরাই নকলে সাহায্য করেন। স্কুলের করণিকদের একাংশও তাতে জড়িত থাকেন।

এ দিন অসমের ৯৪০টি কেন্দ্রে ম্যাট্রিক (হাইস্কুল লিভিং সার্টিফিকেট পরীক্ষা) পরীক্ষায় বসেছিল ৪ লক্ষ ৩ হাজার ২২৮ জন। একই সঙ্গে হাই মাদ্রাসার চূড়ান্ত পরীক্ষায় নতুন পাঠ্যক্রমের ৯ হাজার ১৪ জন ও পুরনো পাঠ্যক্রমের ১ হাজার ৪২৫ জন পরীক্ষা দিয়েছে। এ বার ম্যাট্রিক দিচ্ছে দলগাঁওয়ের বছর এগারোর ছাত্র শামিম মেহফিজ। অন্য দিকে, ধেমাজি জেলার সিমেন চাপড়িতে পরীক্ষা

দিতে যাওয়ার সময় মায়ের চোখের সামনে গাড়ি চাপা পড়ে মারা যায় শিবনাথ দোলে।

নতুন পাঠ্যক্রমের অ্যাডমিট কার্ড পাওয়া শিলচর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ৩৬ ছাত্রীও এ দিন নির্বিঘ্নে পরীক্ষা দিয়েছে। তারা পুরনো পাঠ্যক্রমেরই প্রশ্ন হাতে পায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kachhar expelled
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE