আবার সরকারে এলে রাহুল গাঁধী উৎপাদনে বিপ্লব আনতে চান। অনেকটা চিনের মতো। কিন্তু সামাজিক বণ্টনকে অবজ্ঞা করতে চান না। জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, ইউপিএ মডেলে বণ্টনে জোর দেওয়া হয়েছে আর এনডিএ মডেলে তো উৎপাদনের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল? রাহুল এই বিতর্কটা এড়িয়ে গিয়েছেন। বলেছেন, এই দুয়ের মধ্যে ভারসাম্য রাখা উচিত। তিনি মনে করেন, একশো দিনের কাজ, খাদ্য নিরাপত্তা জাতীয় প্রকল্প শুধু ঝোলাওয়ালা সংস্কৃতি নয়, এদের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি উৎপাদনের লক্ষ্যে পৌঁছনো যাবে।
এর আগেও রাহুল চিনের মতো উৎপাদন করার কথা বলেছেন। তবে বলেননি, এটা কী করে সম্ভব হবে। বরং জোর দিয়েছেন আর্থিক নিরাপত্তা, জমি বিল ইত্যাদির উপর। শিল্পমহলের সমালোচনা যে, কংগ্রেস সরকার কিছুটা বামপন্থী। শিল্পোৎপাদন নিয়ে যথেষ্ট উদ্যোগী নয়। আনন্দবাজারকে দেওয়া রাহুলের সাক্ষাৎকারে এঁরা উৎসাহিত বোধ করবেন না। কারণ, উৎপাদনের কথা বললেও সেটা যে প্রাথমিক লক্ষ্য, তা কিন্তু তাঁর বক্তব্য থেকে বেরিয়ে আসে না।
এনডিএ আমলে অ্যালুমিনিয়াম প্রস্তুতকারী রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ‘বালকো’-র বেসরকারিকরণ নিয়ে রাহুল গাঁধী কটাক্ষ করেছেন। তবে শুধু একটি বাক্য থেকে বোঝা কঠিন যে, তিনি রাষ্ট্রায়ত্তের পক্ষে না বিপক্ষে। তবে এটা পরিষ্কার যে, বেসরকারিকরণের বিপক্ষে না হলেও এই ধরনের সংস্কারের পক্ষে তাঁর মনোভাব খুব ইতিবাচকও কিছু নয়।
পশ্চিমবঙ্গ নিয়েও খুব পরিষ্কার নয় রাহুল গাঁধীর বক্তব্য। তাঁর মতে, তৃণমূল রাজ্যের ক্ষমতায় আসায় পরিবর্তন হয়নি। শুধু পতাকার রং বদলেছে আর মানুষ পিছিয়ে গিয়েছেন। নরেন্দ্র মোদীর মতো রাহুল গাঁধীও বলেন যে, কলকাতা এক সময়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্র ছিল এবং তার যোগাযোগ ছিল সারা পৃথিবীর সঙ্গে। রাহুলের পুনরুজ্জীবনের মন্ত্র: পার্টনারশিপ। ব্যবসায়িক উন্নয়নের স্বার্থ আর গরিব মানুষের স্বার্থকে মেলানো। তবে এটা কী করে সম্ভব, তা তিনি পরিষ্কার করে জানাননি।
রাহুল জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস নিয়ে তিনি খুব সিরিয়াস। দলের হৃতমর্যাদা তিনি ফিরে পেতে চান। তাই, এ বার ৪২টি আসনেই লড়ছেন। মৌসম নূর, শুভঙ্কর সরকার, সাবিনা ইয়াসমিনের মতো নবীন নেতাদের কংগ্রেস তুলে এনেছে। তিনি নিশ্চিত, ভবিষ্যতে এঁরাই সক্রিয় ভূমিকা নেবেন।
প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে রাহুল গাঁধী এক নতুন পরীক্ষা এই নির্বাচনে করেছেন। পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে এ বার সারা দেশের ১৫টি কেন্দ্রে কংগ্রেসের কর্মীরা নিজেরাই প্রার্থী বেছে নিয়েছেন। ওই ১৫টি কেন্দ্রের মধ্যে উত্তর কলকাতা অন্যতম। অবশ্য ওই কেন্দ্রের বেলায় দলের অনুগত কর্মীরা প্রার্থী হিসেবে কেবল একটি নাম-ই প্রস্তাব করেন। ফলে, শেষমেশ নির্বাচনের আর প্রয়োজন হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy