Advertisement
E-Paper

ফতোয়া মানতে বাধ্য করা অবৈধ, বলল সুপ্রিম কোর্ট

শরিয়তি আদালতের ফতোয়া বা নির্দেশ কাউকে মানতে বাধ্য করার ক্ষমতা ওই আদালতের নেই বলে রায় দিল সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। শরিয়তি আদালতের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে শীর্ষ আদালতে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন দিল্লির কৌঁসুলি ভীষ্মলোচন মাদম। তাঁর আর্জি ছিল, শরিয়তি আদালত দেশে সমান্তরাল বিচার ব্যবস্থা চালাচ্ছে। মুসলিমদের মৌলিক অধিকার বিভিন্ন সংগঠনের ‘কাজি’ বা ‘মুফতি’রা ফতোয়া দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না বলেও আর্জিতে জানান ভীষ্মলোচন।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৪ ০৩:২৭

শরিয়তি আদালতের ফতোয়া বা নির্দেশ কাউকে মানতে বাধ্য করার ক্ষমতা ওই আদালতের নেই বলে রায় দিল সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।

শরিয়তি আদালতের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে শীর্ষ আদালতে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন দিল্লির কৌঁসুলি ভীষ্মলোচন মাদম।

তাঁর আর্জি ছিল, শরিয়তি আদালত দেশে সমান্তরাল বিচার ব্যবস্থা চালাচ্ছে। মুসলিমদের মৌলিক অধিকার বিভিন্ন সংগঠনের ‘কাজি’ বা ‘মুফতি’রা ফতোয়া দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না বলেও আর্জিতে জানান ভীষ্মলোচন। সেই মামলাতেই আজ এই রায় দিয়েছে শীর্ষ আদালতে বিচারপতি সি কে প্রসাদের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের বেঞ্চ।

বেঞ্চের মতে, শরিয়তি আদালত অনেক সময়েই সেখানে অনুপস্থিত ব্যক্তির বিরুদ্ধে রায় দেয়। সেই রায় অনেক ক্ষেত্রেই সেই ব্যক্তির মানবাধিকারের বিরোধী। এমনকী, অনেক সময়ে তাতে ওই ব্যক্তিকে শাস্তিও দেওয়া হয়। শরিয়তি আদালতের ফতোয়া বা নির্দেশের কোনও আইনি বৈধতা নেই। বেঞ্চ জানিয়েছে, কেবল মাত্র কোনও মুসলিম চাইলে তবেই তাঁর অধিকার বা দায়িত্ব নিয়ে ফতোয়া জারি করা যেতে পারে।

মুসলিম পার্সোনাল ল’বোর্ডের কৌঁসুলি সওয়ালের সময়ে জানান, ফতোয়া মানতে কেউ বাধ্য নয়। এটি কোনও মুফতির ব্যক্তিগত মত। তা মানতে বাধ্য করার ক্ষমতা মুফতির নেই। কোনও ব্যক্তির ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাঁকে ফতোয়া মানতে বাধ্য করা হলে তিনি কোর্টে যেতে পারেন।

তবে দার-উল-কাজার মতো শরিয়তি আদালত বা ফতোয়া জারি করার বিষয়টিকে বেআইনি ঘোষণা করেনি শীর্ষ আদালত। বেঞ্চের কথায়, “এটা বৈধ আদালতের বাইরে একটি বিচারব্যবস্থা। দু’পক্ষের মত নিয়ে সমস্যার ফয়সালা করাই এর উদ্দেশ্য। সেই ফয়সালা মানা বা না মানা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ইচ্ছাধীন।”

রায়ের পরে ল’বোর্ডের সদস্য জাফরিয়াব জিলানি বলেন, “আমরা সমান্তরাল বিচারব্যবস্থা চালাচ্ছি না। কাজির আদেশ সকলেই মানতে বাধ্য এমন কথাও আমরা কখনও বলিনি। দু’পক্ষের সম্মতি থাকলে আমরা শরিয়তি আইন মেনে সমস্যার মীমাংসা করার চেষ্টা করি।” পটনার ইমরাত শরিয়তের মৌলানা আনিসুর রহমানও বলেছেন, “সালিশির জন্য রাজি দু’পক্ষই শরিয়তি আদালতে এলে তবেই তা আইনসিদ্ধ। সুপ্রিম কোর্ট ভুল করেনি। তবে পুরো রায় পড়ে দেখতে হবে।”

কিন্তু ভিন্ন সুরও শোনা গিয়েছে মুসলিম সমাজ থেকে। ধর্মগুরু খালিদ রশিদ ফারাঙ্গির কথায়, “মুসলিম ব্যক্তি আইন (পার্সোনাল ল) মেনে চলার অধিকার সংবিধানই আমাদের দিয়েছে। ১৯৩৭ সালের শরিয়ত অ্যাপ্লিকেশন আইনে স্পষ্টই বলা রয়েছে, দু’জন মুসলিমের মধ্যে নিকাহ্, তালাকের মতো কিছু বিষয়ে মুসলিম ব্যক্তি আইন মেনে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”

কুল হিন্দ ইমাম অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মৌলানা মহম্মদ সাজিদ রশিদ জানিয়েছেন, ধর্মাচরণের বিষয়ে আদালতে আর্জি জানানোই উচিত নয়। কেউ ইসলাম মানলে তাঁকে ধর্মের সব নীতিই মানতে হবে। শরিয়ত না মানলে কেউ প্রকৃত মুসলিম হতে পারেন না।

fatwa supreme court shariyat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy