প্রতিবাদের হাতিয়ার ছিল ফরওয়ার্ড ব্লকের। বিজেপি-বিরোধী জোট গড়ে তোলার মরিয়া চেষ্টায় সেই অস্ত্রই হাতে তুলে নিয়ে এমডিএমকে নেতা ভাইকোর সঙ্গে হাত মেলালেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়! এ রাজ্যে তৃণমূলের এখন ৩৪ জন সাংসদ। তামিলনাড়ুতে ভাইকোর দলের এক জন সাংসদও নেই। তবু বিজেপি-র মোকাবিলা করার পথ খুঁজতে দেশের উত্তর থেকে দক্ষিণ, সব প্রান্তে এখন দূত পাঠাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই চেষ্টাতেই নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে সেতু করে মঙ্গলবার সেতুবন্ধন হল দিদি-ভাইকোর!
তৃণমূল নেত্রীর নির্দেশে সোমবারই চেন্নাই পৌঁছেছিলেন পার্থবাবু। তামিলনাড়ুর রাজধানী শহরে এ দিন ভাইকোর ধর্নায় যোগ দিয়েছিলেন তিনি। যে ধর্নার অন্যতম দাবি নেতাজির অন্তর্ধান সংক্রান্ত সরকারি নথি প্রকাশ করা। ভাইকোর সঙ্গে সুর মিলিয়েই পার্থবাবু এ দিন প্রশ্ন তুলেছেন, ইউপিএ আমলে রাজনাথ সিংহেরা বলতেন ক্ষমতায় এলে তাঁরা ওই নথি প্রকাশ্যে আনবেন। অথচ বিজেপি কেন্দ্রে সরকারে আসার পরে এখন উল্টো পথে হাঁটছে। ঠিক এই কথা বলেই আন্দোলনে নেমেছে বাম শরিক ফব-ও। কলকাতায় যুব সমাবেশ থেকে সোমবার ফব-র অশোক ঘোষ, জয়ন্ত রায়, নরেন চট্টোপাধ্যায়, জি দেবরাজনেরা যা বলেছিলেন, এ দিন হুবহু তা-ই বলেছেন পার্থ-ভাইকো! ফব নেতৃত্ব অবশ্য মনে করছেন, একঘরে হয়ে পড়েছেন বলেই তৃণমূল নেতৃত্ব এখন নেতাজির নাম করে ভেসে থাকতে চাইছেন।
ধর্নার আগে পার্থবাবুর সঙ্গে আলাদা বৈঠকও সেরেছেন ভাইকো। পার্থবাবুর কাছে তাঁর প্রস্তাব, প্রয়োজনে নেতাজি-প্রশ্নেই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিন মমতা। নেতাজি সুভাষের প্রয়াত সহযোদ্ধা মথুরালিঙ্গম থেবর যে তামিলনাড়ুর দলিত সম্প্রদায়ের কাছে এখনও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, তা-ও উল্লেখ করেছেন ভাইকো। ঘটনাচক্রে, থেবরও ফব-র নেতা! নেতাজি উপলক্ষ হলেও তাঁদের প্রকৃত রাজনৈতিক তাগিদ উঠে এসেছে ওই বৈঠকেই। ভাইকো বলেছেন, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে একজোট হওয়া দরকার। সহমত পার্থবাবুও। পরে ধর্নায় তিনি বলেছেন, “ক্ষমতায় এসে নরেন্দ্র মোদী দেশবাসীর হাতে ঝাড়ু ছাড়া কিছু দেননি!”
সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে কালো চাদর জড়িয়ে এ বার বিক্ষোভ করেছিলেন তৃণমূল সাংসদেরা। প্রতিবাদের প্রতীক হিসাবে কালো চাদর ব্যবহারে পথিকৃৎ ভাইকোই। সিঙ্গুর-পর্বে ধর্মতলায় মমতার অনশন-মঞ্চে তিনি এসেছিলেন কালো চাদর গায়ে। ধর্নাতেও এ দিন তাঁর গায়ে ছিল সেই কালো চাদরই!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy