Advertisement
E-Paper

বাংলাদেশি বাছার কাজ শুরু হচ্ছে অসম থেকেই

পশ্চিমবঙ্গ নয়, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে ফেরানোর কাজে অসম-সহ উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে কেন্দ্র। কিন্তু সেখানেও যে তড়িঘড়ি অনুপ্রবেশকারীদের ফেরত পাঠানো সম্ভব নয়, সেটা বুঝেছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। তাই হাতে সময় নিয়ে, সব দিক বিবেচনা করে পদক্ষেপ করতে চাইছে তারা। অর্থাৎ, সময় লাগে লাগুক। কিন্তু ভুলের কারণে কেউ যাতে হেনস্থা না হন তা নিশ্চিত করে এগোতে চাইছে সরকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৪ ০৩:২৯

পশ্চিমবঙ্গ নয়, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে ফেরানোর কাজে অসম-সহ উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে কেন্দ্র। কিন্তু সেখানেও যে তড়িঘড়ি অনুপ্রবেশকারীদের ফেরত পাঠানো সম্ভব নয়, সেটা বুঝেছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। তাই হাতে সময় নিয়ে, সব দিক বিবেচনা করে পদক্ষেপ করতে চাইছে তারা। অর্থাৎ, সময় লাগে লাগুক। কিন্তু ভুলের কারণে কেউ যাতে হেনস্থা না হন তা নিশ্চিত করে এগোতে চাইছে সরকার।

বেআইনি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির মধ্যে ছিল। কালক্ষেপ না করে সে কাজটি অসম থেকেই শুরু করে দিতে চায় কেন্দ্র। ঠিক হয়েছে, অসমে বসবাসকারী বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে ১৯৭১ সালের ভোটার তালিকার ভিত্তিতে নতুন করে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ সিটিজেনস) তৈরির কাজ শুরু হবে। সেই অনুযায়ীই ১৯৭১ সালের পর থেকে কারা বাংলাদেশ থেকে অসমে এসে বসবাস শুরু করেছেন, তা চিহ্নিত করা হবে। তার পরে তাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া নিয়ে চিন্তাভাবনা করবে কেন্দ্র।

লোকসভা ভোটের প্রচারে পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ফেরত পাঠানোর কথা বলেছিলেন নরেন্দ্র মোদী।

পাল্টা জবাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেছিলেন মোদীকে কোমরে দড়ি দিয়ে জেলে পাঠানো উচিত। সেই রাজনৈতিক তরজা ভোটের পরেও থামেনি। সংসদেও সম্প্রতি তৃণমূলের তরফে দাবি তোলা হয়েছে, আইন মেনে কাজ হোক, কিন্তু অনুপ্রবেশ নিয়ে যেন রাজনীতি না হয়।

পশ্চিমবঙ্গের অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করার বিষয়ে কী পরিকল্পনা নেওয়া হবে, তা নিয়ে অবশ্য এখনই মুখ খুলছেন না স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারা। বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের দাবি, প্রথমে অনুপ্রবেশ বন্ধ করা হোক। তার পরে যে সব বেআইনি অনুপ্রবেশকারী ইতিমধ্যেই এ রাজ্যে বসবাস করছেন, তাদের চিহ্নিত করা হোক। বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ বলেন, “যাঁরা বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে শরণার্থী হিসেবে এসেছেন, তাঁদের সঙ্গে বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের ফারাক রয়েছে। শুধুমাত্র আর্থিক কারণে যাঁরা বাংলাদেশ থেকে এসেছেন, তাঁদের নামের তালিকা তৈরি হোক।” কী ভাবে বোঝা যাবে কে বেআইনি অনুপ্রবেশকারী আর কে নন? রাহুলের যুক্তি, “পুলিশ-প্রশাসন-রাজনৈতিক দল সকলেই জানে কারা বেআইনি অনুপ্রবেশকারী। সরকারি তথ্যই সেটা বলে দেবে।” এ কাজে যে সময় লাগতে পারে, তা মানছেন রাহুল। তিনি বলেন, “দেরি হোক। কিন্তু কারও যেন হেনস্থা না হয়।”

অসমের ক্ষেত্রেও এই কাজে যথেষ্ট সময় লাগবে বলেই মনে করছে কেন্দ্র। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তাদের হিসেব, নাগরিক পঞ্জি তৈরি করতেই অন্তত ২ বছর সময় লাগবে। রাজ্যের সব বাসিন্দাকে নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করতে হবে। সেই ফর্মে দেওয়া তথ্য ১৯৭১ সালের ভোটার তালিকার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে। এখন যে নাগরিক পঞ্জি রয়েছে, তা ১৯৫১ সালের। এ বার ১৯৭১ সালের ভিত্তিতে নাগরিক পঞ্জি তৈরি হবে। এই প্রকল্পের জন্য ইতিমধ্যেই অসম সরকারকে ২৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। নাগরিক পঞ্জি তৈরির কাজ শুরু করতে রাজ্যের মুখ্যসচিব ও সংশ্লিষ্ট আমলাদের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ।

মনমোহন সরকারের আমলেই অসমে নাগরিক পঞ্জি তৈরির কাজ হাতে নেওয়া হয়েছিল। ২০১০ সালে ‘পাইলট প্রোজেক্ট’ হিসেবে এই কাজ শুরু হয় বরপেটা ও কামরূপ জেলায়। কিন্তু এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামে রাজ্যের সংখ্যালঘু ছাত্র সংগঠন আমসু। পুলিশের গুলিতে চার আন্দোলনকারী নিহত হওয়ার পরে এই প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এ বার নতুন করে আটঘাঁট বেঁধে সেই কাজ শুরু করতে চাইছে মোদী সরকার।

bangladeshi assam infiltrator
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy