Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বড় বিপদ জঙ্গিরা, উন্নয়নই অস্ত্র পূর্বে

খাগড়াগড় বিস্ফোরণেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে দেশের পূর্ব-সীমান্ত কতটাই অরক্ষিত। আর ডিজি সম্মেলনের ঠিক আগে অসমে যে পরিমাণে বিস্ফোরক ও অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার হয়েছে তা বুঝিয়ে দিয়েছে উত্তর-পূর্বে নাশকতার ঘটনা কিছুটা পেলেও জঙ্গি তৎপরতা বিন্দুমাত্র কমেনি। এই পরিস্থিতিতে আগামী দিনে দেশের পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব সীমান্তে জঙ্গি তৎপরতা রোধে কড়া পদক্ষেপ করার ইঙ্গিত দিল কেন্দ্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৫৫
Share: Save:

খাগড়াগড় বিস্ফোরণেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে দেশের পূর্ব-সীমান্ত কতটাই অরক্ষিত। আর ডিজি সম্মেলনের ঠিক আগে অসমে যে পরিমাণে বিস্ফোরক ও অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার হয়েছে তা বুঝিয়ে দিয়েছে উত্তর-পূর্বে নাশকতার ঘটনা কিছুটা পেলেও জঙ্গি তৎপরতা বিন্দুমাত্র কমেনি। এই পরিস্থিতিতে আগামী দিনে দেশের পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব সীমান্তে জঙ্গি তৎপরতা রোধে কড়া পদক্ষেপ করার ইঙ্গিত দিল কেন্দ্র।

আগামী কাল গুয়াহাটিতে ডিজিপি সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন প্রধানন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। থাকার কথা উত্তর-পূর্বের সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি অসম-সহ উত্তর-পূর্বে যে ভাবে মৌলবাদী ও জেহাদি শক্তি ঘাঁটি মজবুত করেছে তা ধ্বংস করতে কেন্দ্রীয় সরকারের ভবিষ্যৎ রণনীতি কী হবে সে বিষয়ে সুস্পষ্ট বার্তা মিলতে পারে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মতে, উত্তর-পূর্বের সীমান্ত অরক্ষিত থাকার ফায়দা নেয় জঙ্গিরা। ভারতে ধরপাকড় শুরু হলেই জঙ্গিরা বাংলাদেশ ও মায়ানমারে গা ঢাকা দেয়। তবে শেখ হাসিনার সরকার আসার পর বাংলাদেশে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ফলে মায়ানমারই এখন হল জঙ্গিদের অন্যতম নিরাপদ আশ্রয় বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধান আসিফ ইব্রাহিম। তবে এ মাসেই মায়ানমার সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী সে দেশের সরকারের কাছে ওই জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। এতে আগামী দিনে বাংলাদেশের মতোই মায়ানমারে জঙ্গিদের আশ্রয় নেওয়া শক্ত হবে বলে আশা করছে কেন্দ্র।

এর পাশাপাশি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশ রুখতে বেড়া বসানো ও ফ্লাডলাইট বসানোর কাজ দ্রুত শেষ করা হবে বলে জানিয়েছেন ইব্রাহিম। গোটা পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতে অনুপ্রবেশ রুখতে একটা সার্বিক পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। খুব দ্রুত সেই কাজ শুরু হবে।

অরক্ষিত সীমান্ত যেমন একটি চ্যালেঞ্জ তেমনি উত্তর-পূর্বের নিরাপত্তার প্রশ্নে কেন্দ্রের অন্যতম দুশ্চিন্তার বিষয়, জঙ্গি সংগঠনগুলির গোপন তৎপরতা। নিত্য ঘটছে গোষ্ঠী-সংঘর্ষ, তোলা আদায়, অপহরণ। সার্বিক ভাবে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে গোটা এলাকার। ইব্রাহিমের মতে, “সে জন্য উত্তর-পূর্বের নিরাপত্তা সবর্দাই কেন্দ্রের কাছে চিন্তার বিষয়।” ডিজি সম্মেলনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ এ দিন বলেন, “এখানে ৭০-এর চেয়ে বেশি জঙ্গি সংগঠন রয়েছে। সংঘর্ষবিরতিতে থেকেও অনেকে তোলাবাজি ও অন্যান্য অপরাধ চালাচ্ছে। এখানকার আর্থসামাজিক অনুন্নয়নই সন্ত্রাসের মূল কারণ। তাই প্রধানমন্ত্রী উত্তর-পূর্বের সার্বিক বিকাশ নিয়ে বদ্ধপরিকর।”

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের মতে, উত্তর-পূর্বে জাতিগোষ্ঠীগুলির মধ্যে সংঘর্ষের পিছনেও থাকে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির উস্কানি। এই সংগঠনগুলিকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করা, অর্থ ও অস্ত্রের মজুত নষ্ট করা ও তার জোগান বন্ধ করাই এখন কেন্দ্রের অন্যতম লক্ষ্য। এর জন্য এলাকার সার্বিক উন্নয়নকে হাতিয়ার করতে চাইছে কেন্দ্র। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের যুক্তি, উন্নয়নমূলক কাজের মাধ্যমে দেশে মাওবাদী সমস্যা অনেকটাই কমে এসেছে। উত্তর-পূর্বের জন্য আগামী দিনে সেই মডেল মেনে চলার বিষয়ে ভাবছে কেন্দ্র। তবে একই সঙ্গে কোণঠাসা মাওবাদীরা প্রত্যাঘাতে এখন মরিয়া বলেও রাজ্যগুলিকে সতর্ক করেছেন ইব্রাহিম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

arif nia khagragarh blast burdwan blast
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE