ভোটের ময়দানে পালে হাওয়া টানতে আদিবাসী প্রধান দলের তকমা মুছতে তৎপর ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা। নির্বাচনে লাভ-লোকসানের হিসেব কষেই এগোচ্ছেন দলীয় নেতৃত্ব। সে দিকে তাকিয়ে লোকসভা ভোটে জামশেদপুরে প্রার্থী করা হল ওড়িশার নিরূপ মহান্তিকে। জেএমএম নেতৃত্ব জানান, বিধানসভা ভোটের আগে দলে বাংলা ও ওড়িয়া ভাষার কয়েক জন নেতাকে জনসমক্ষে তুলে ধরা হবে।
দলের মহাসচিব সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, “জেএমএমের উপরে আদিবাসী তকমা লেগে গিয়েছে। নতুন রাজ্য গঠনের পর জেএমএম জোট সরকারে আদিবাসীরাই মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন।” সেই রীতি বদলাতে চাইছে জেএমএম। দলের মহাসচিবের কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনও এখন পরিবর্তন চাইছেন। তিনিই জামশেদপুরে নিরূপবাবুকে প্রার্থী করার সুপারিশ করেছিলেন।”
নিরূপবাবু টাটা স্টিলের প্রাক্তন আধিকারিক। মতানৈক্যের জেরে সম্প্রতি জেএমএম শিবির ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন বিদ্যুৎবরণ মাহতো। তার পরই নিরূপবাবুকে জামশেদপুরের প্রার্থী করার কথা তোলেন হেমন্ত। প্রথমে দলের পরিকল্পনা ছিল, বাংলাভাষী কাউকে সেখানে প্রার্থী করার। কিন্তু ওই আসনে লড়ছেন ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চার ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থী অজয় কুমার। জেএমএমের বিরুদ্ধে ময়দানে রয়েছেন আদিবাসী নেতা বিদ্যুৎবরণও। জামশেদপুর আসনে জয় নিয়ে তা-ই একশো শতাংশ নিশ্চিত হতে পারেননি জেএমএম নেতারা। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জেভিএম প্রার্থীর সঙ্গে টেক্কা দিতে ‘পরিচিত’ মুখের খোঁজ শুরু হয়। মনোনীত করা হয় নিরূপবাবুকে। পাশাপাশি, ওড়িশাবাসী ওই প্রার্থীর দিকে সাধারণ মানুষের কতটা সমর্থন মেলে, তা-ও এই সুযোগে দেখে নিতে চাইছে জেএমএম।
দলীয় নেতৃত্ব জানিয়েছে, রাজ্য গঠনের পর থেকেই জেএমএম আদিবাসীদেরই পৃষ্ঠপোষকতা করেছে। তাই বাঙালি, ওড়িয়া, সংখ্যালঘুদের ভোট তেমন ভাবে মোর্চার ঝুলিতে আসেনি। সাঁওতাল পরগনায় জেএমএম বাংলাভাষীদের সমর্থন পেলেও রাঁচি, জামশেদপুরে ওই ভোট বিজেপি, কংগ্রেসের দিকেই চলে যায়।
এমন পরিস্থিতিতে পরবর্তী বিধানসভার দিকে তাকিয়ে দলে বাংলা এবং ওড়িয়াভাষী নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বর্তমানে জেএমএম শিবিরে দলের মহাসচিব সুপ্রিয়বাবু ছাড়া বাঙালি নেই বললেই চলে। গিরিডিতে রয়েছেন দলের জেলা সভাপতি পঙ্কজ তা।
শুধু জেএমএম নয়। ঝাড়খণ্ডের অন্য দলগুলিতেও বাঙালি নেতাদের ‘অভাব’ চোখে পড়ার মতো। তবে, বিজেপি-র আঞ্চলিক ভাষা সংক্রান্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয় সাঁওতাল পরগনার শিবলাল ঘোষকে। রাঁচির কংগ্রেস নেতা চঞ্চল চট্টোপাধ্যায়কেও গুরুত্বপূর্ণ কোনও দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। ছোট একটি অঞ্চলে সীমাবদ্ধ রয়ে গিয়েছেন। এ নিয়ে সব দলের অন্দরমহলে বাংলাভাষী নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ জমেছে।
জেএমএম মহাসচিব জানান, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের ৮১টি আসনের মধ্যে কয়েকটিতে বাংলাভাষী এবং ওড়িশা মানুষকে প্রার্থী করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। দলীয় সূত্রের খবর, এতে সায় রয়েছে দলের শীর্ষনেতা শিবু সোরেনেরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy