Advertisement
E-Paper

মোদীর তোপে এ বার বারাণসীর একে-৪৯

পরিবারতন্ত্রের মুখ হিসেবে তুলে ধরতে রাহুল গাঁধীকে শাহজাদা বা সাহাবজাদা আখ্যা দিয়ে নিরন্তরই আক্রমণ করে এসেছেন নরেন্দ্র মোদী। আজও তার অন্যথা হয়নি। কিন্তু ভোটযুদ্ধের ময়দানের প্রতিপক্ষের মুখ স্পষ্ট হতেই নরেন্দ্র মোদী আজ বেনজির আক্রমণ শুরু করলেন আম আদমি পার্টি নেতা অরবিন্দ কেজরীবালকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৪ ০৩:২৫

পরিবারতন্ত্রের মুখ হিসেবে তুলে ধরতে রাহুল গাঁধীকে শাহজাদা বা সাহাবজাদা আখ্যা দিয়ে নিরন্তরই আক্রমণ করে এসেছেন নরেন্দ্র মোদী। আজও তার অন্যথা হয়নি। কিন্তু ভোটযুদ্ধের ময়দানের প্রতিপক্ষের মুখ স্পষ্ট হতেই নরেন্দ্র মোদী আজ বেনজির আক্রমণ শুরু করলেন আম আদমি পার্টি নেতা অরবিন্দ কেজরীবালকে। গত কালই যিনি বারাণসীতে মোদীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।

এ কে। তিন বার এই ইংরেজি হরফ-যুগলকে মোদী আজ ছুড়ে দেন তিনটি নিশানা বিঁধতে। একে-৪৭। এ কে অ্যান্টনি। আর এক এ কে হলেন অরবিন্দ কেজরীবাল। দায়িত্ব পেয়ে যিনি দিল্লিতে মাত্র ৪৯ দিন সরকার চালিয়েছেন। নামের আদ্যক্ষরে সেই শ্লেষ জুড়ে একে-৪৯। নরেন্দ্র মোদীর আক্রমণের নয়া নিশানা। তাঁর কথায় “তিনটি একে এখন পাকিস্তানে শক্তি। একে-৪৭, একে অ্যান্টনি এবং একে-৪৯।” কেজরীবাল প্রসঙ্গে মোদী আরও বলেন, “এই একে-৪৯ এমন একটা দলের জন্ম দিয়েছেন, যার ওয়েবসাইটে কাশ্মীরকে পাকিস্তানের অংশ বলে দেখানো রয়েছে।”

আজ সকাল থেকে তিনটি সভা করেন মোদী। জম্মু, উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহর ও রাতে রাজধানী দিল্লি। তিনটি সভাতেই তিনি রাহুলের চেয়ে ঢের বেশি তীব্র ভাবে আক্রমণ করলেন কেজরীবালকে। কাশ্মীরে সেনা থাকার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আপ নেতা প্রশান্তভূষণের গণভোট চাওয়ার সমালোচনা করেন মোদী। প্রচারের শুরুতেই জম্মু-কাশ্মীরে মাটিতে দাঁড়িয়ে জাতীয়তাবাদ উস্কে দিয়ে কেজরীবালকে কার্যত রাষ্ট্রবিরোধী হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেন মোদী। আর রাতে দিল্লিতে এসে কেজরীবালকে আখ্যা দেন ‘ধোঁকাবাজ রাজনীতিক’ হিসেবে।

কেজরীবাল এর প্রতিক্রিয়ায় টুইট করেছেন, “প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর মুখে এই ধরনের কথা মানায় কি? মুখোমুখি বিতর্কের ডাক কেন তিনি বারবার বারবার এড়িয়ে যাচ্ছেন? ভোটে দুর্নীতিগ্রস্তদের টিকিট দেওয়া নিয়েই বা মৌনী কেন মোদী?”

কেজরীবাল আজ বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর ভাষা নিয়ে কটাক্ষ করেই থেমে যাননি। গ্যাসের দাম থেকে কৃষক আত্মহত্যা নিয়ে এত দিন মোদীর থেকে জবাব চেয়ে আসছিলেন তিনি। কাল রাতেই গুজরাত সরকারের পক্ষ থেকে এক বিস্তৃত জবাব দেওয়া হয়। তা নিয়ে আজ কেজরীবালের পক্ষ থেকে আজ জানানো হয়, মোদী যাবতীয় প্রশ্নের উত্তরই এড়িয়ে গিয়েছেন।

বারাণসীতে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী কেজরীবালকে আক্রমণের পাশাপাশি, নিজের আর এক নির্বাচনী লড়াইয়ের কেন্দ্র বডোদরা নিয়েও এ দিন মুখ খোলেন মোদী। এ ক্ষেত্রে নিশানা ছিলেন রাহুল। সেখানে কংগ্রেসের কর্মীদের রায়ে প্রার্থী বাছাই করেও গত কাল তা বদলে ফেলা হয়েছে। আগের প্রার্থী নরেন্দ্র রাওয়াত দলিত বলেই রাহুল তাঁকে বদল করেছেন, বলে অভিযোগ তুলে সুকৌশলে দলিত-তাসটি খেলেছেন মোদী। তাণর কথায়, “দলিত মায়ের পেটে জন্ম নিয়েছেন বলেই কী অপরাধ? শাহজাদা স্পষ্ট করলেন, কর্মীদের রায়ে প্রার্থী বাছাই হলেও গণতন্ত্রে তাঁদের বিশ্বাস নেই।”

তবে লক্ষণীয় ভাবে আম আদমি পার্টির নেতাকেই আজ বারবার মূল নিশানা করেন মোদী। তাঁর বক্তব্য, দেশের নয়, কংগ্রেসের ভাল করতেই কেজরীবাল রাজনীতিতে এসেছেন।

এত দিন অমিত শাহ বা অরুণ জেটলিরা কেজরীবালকে আক্রমণ করলেও মোদী সে পথে হাঁটেননি। আজ কেন এই প্রত্যক্ষ আক্রমণ? বিজেপি নেতৃত্ব বলছেন, এর কারণ মূলত তিনটি। এক, মোদীই এখন আপ শীর্ষনেতার প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। রাহুল গাঁধীর বিরুদ্ধে লঘু প্রার্থী দিয়েছেন (কুমার বিশ্বাস)। এমনকী, সুযোগ থাকলেও সনিয়া গাঁধীর বিরুদ্ধে নিজে প্রার্থী হননি। ফলে তাঁকে আর উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। দুই, অনেক আসনেই বিজেপির ভোটে থাবা বসাতে পারে আপ। তিন, কেজরীবালের তুলনায় রাহুলকে খাটো করে দেখিয়ে কংগ্রেসকে তাতিয়ে দিতে চাইছেন মোদী। কংগ্রেসকে গুরুত্বহীন হিসেবে দেখালে তারা বারাণসীতে ওজনদার কোনও প্রার্থী দিতে পারে। মোদী-বিরোধী ভোট ভাগাভাগি হবে। লাভ পাবেন মোদীই।

modi kejriwal fight
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy