Advertisement
E-Paper

মুম্বইয়ে বৃষ্টি-বাদল এবং খিচুড়ি

‘আবার আষাঢ এসেছে আকাশ ছেয়ে’। বৃষ্টিভেজা দিনে স্মৃতি হাতড়ানো আরও কত কী যে মনে ভিড় করে আসে...। এমন দিনেই কি তারে বলা যায়! সেই তিনটে অনেক দিন না-বলা শব্দ! আষাঢ়ের বৃষ্টি-মাখা বিকেল-সন্ধে মনে রেখে লিখলেন মধুছন্দা মিত্র ঘোষ।‘আবার আষাঢ এসেছে আকাশ ছেয়ে’। বৃষ্টিভেজা দিনে স্মৃতি হাতড়ানো আরও কত কী যে মনে ভিড় করে আসে...। এমন দিনেই কি তারে বলা যায়! সেই তিনটে অনেক দিন না-বলা শব্দ! আষাঢ়ের বৃষ্টি-মাখা বিকেল-সন্ধে মনে রেখে লিখলেন মধুছন্দা মিত্র ঘোষ।

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৪ ০০:০৫

আষাঢ়ের ধূসর মেঘটা থমকে আছে পশ্চিমঘাট পাহাড়ের গায়ে। পাহাড় চুঁইয়ে রোদের তাত অনেকক্ষণ ফিকে হয়ে গেছে। কাগজ-কলম নিয়ে লিখতে বসে মনটাও মেঘলা হয়ে আসছে বৃষ্টিকথনে। যেখানে কোনও হট্ট নেই, দেখনদারি নেই। পায়ে পায়ে সকাল গড়িয়ে আলস্যের বৃষ্টি-বিকেল। বিকেল গড়িয়ে সন্ধে। সন্ধে গড়িয়ে নিঝুম রাত রিম ঝিম রিম ঝিম।

কখনও বৃষ্টি ছাঁট ঘিরে ফেলছে, তো কখনও হাওয়ার বর্ণনা। খেই হারিয়ে যাচ্ছে, কী লিখি। বৃষ্টি নির্ভর দু’চোখে নীরবতার সীমানাও বাড়ছে। মনের কোটরে অমনিই গুনগুনিয়ে এল রবীন্দ্রগান

“আষাঢ় কোথা হতে আজ পেলি ছাড়া
মাঠের শেষে শ্যামল বেশে ক্ষণিক দাঁড়া”

এমন সময় এক আকাশ বৃষ্টির কাছে তখন আর কীই বা চাইবার থাকতে পারে। ঘোর লাগা রোমান্টিকতায় মনটাও প্রেমিক হতে চায়। খুচরো বৃষ্টির টুপটাপ ফোঁটাগুলো ঝরে পড়তে না পড়তেই মাতোয়ারা মন ছলাৎ ছল। বৃষ্টি বৃষ্টি গল্পগাছি নিয়ে এই কবিজন্ম অথবা আহ্লাদে ভিজে ওঠা। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিমাখা জল চিক চিক সব্জে পাতা গড়িয়ে চুঁইয়ে পড়ছে টুপটাপ টুপটাপ। সে এক বিশুদ্ধ পরিবহ মন-যমুনার এ পার ও পার তখনও জল থই থই। নিবিড় হব সেই অছিলায় কিছু নিরিবিলি। আজন্মলালিত প্রেমিক-হৃদয় নিয়ে ডায়েরির পাতায় লিখেও ফেলি কয়েক ছত্র। বলা নেই, কওয়া নেই, বর্ষা তত্ত্বাবধানে আমিও তখন যে গোল্লাছুট। কাটাকুটি করা সেই লেখাগুলোর জুতসই নাম খুঁজি। নিজের লেখা সেই বৃষ্টি-কাব্যকথাগুলোর নাম দিই ‘বৃষ্টি বৃষ্টি গল্পগাছি’।

“সাবেক বৃষ্টিরা তখন
গা ভিজোচ্ছিল
দিশাহীন সে স্নানপর্ব
বশ্যতা না মানা সোঁদা গন্ধে
অলীক গোপন
জলছাপ জলরং...”

“হাতড়ে বেড়ানো রামধনু বিকেলে
চলো বৃষ্টি,
কেয়াবাত সাঁতার শিখে নিই”।

আষাঢ় ছড়িয়ে যাচ্ছে আমাদের মুম্বইয়েও। আমাদের বর্ষা ঝমঝম মুম্বই মহানগরীয়ায়। ধূসর মেঘ-ভরা আকাশটা ছায়া ফেলেছে ওই পশ্চিমঘাট পাহাড়ের গায়ে। জানলার ঝাপসা হয়ে থাকা শার্সিতে এখন জল ভাসছে। বন্ধ জানলার ওপারে বৃষ্টির গুঞ্জন। ভাল তো লাগেই, জানলার দূর নাগালে ওই পশ্চিমঘাটের ভিজে ওঠা। কেবল বৃষ্টি কী ভাবে আপস করে সেইটুকুই দেখার। শেষপর্যন্ত কোথাও এসে, গত বছরের সেই প্লাবনের কথা মনে পড়ে। যেখানে আবহবিদদের সতর্কবাণী ভীষণ রকম সত্যি করে কয়েক রাতের তাণ্ডবে দেবভূমিতে শ্মশানের স্তব্ধতার কথা কানে বাজে। সেই ভয়ঙ্করতার কথা।

আষাঢ়স্য প্রথম দিবসে

রামগিরি পর্বত অঞ্চলে বিরহী যক্ষ বিচ্ছেদ বেদনায় কাতর। মহাকবি কালিদাস, তাঁর ‘মেঘদূত’ কাব্যে যক্ষ-এর বিরহ চিত্রণ করেছেন অত্যন্ত নিপুণ কাব্যসুষমায়। যেখানে যক্ষ, মেঘকে দূত হিসাবে প্রেরণ করেছিলেন তার প্রেয়সীর কাছে। বর্ষা ভারাক্রান্ত মেঘ সেখানে রামগিরি ও অলকাপুরীর মাঝে এক অনুঘটক মাত্রা। আষাঢ় পড়তেই আকাশে মেঘের চলাচল ও অদূরে কোথাও গর্জে ওঠা বজ্রধ্বনিকে সাক্ষী রেখে কাতর যক্ষ আরও ব্যাকুল হয়ে পড়েন। একদা ধনরাজ কুবেরের কোনও এক আদেশ সুচারু রূপে পালন করতে পারেনি তাঁর প্রজা যক্ষ। ক্রুদ্ধ কুবেরের নির্দেশে দীর্ঘ এক বছর নির্বাসনে যেতে হয় তাঁকে। পিছনে পড়ে থাকে সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী, ঘরদুয়ার, পরিজন, অলকানগরী। সেই কাহিনি নিয়েই কালিদাসের ‘মেঘদূতম’ এক চিরায়ত প্রেমকথা। আষাঢ়ের প্রথম দিনটিতেই বিরহপীড়িত যক্ষ মেঘকে করজোড়ে আকুল অনুরোধ করেছিলেন

“যাও মেঘ, বলো তাকে...।”

আমাদের তো একটু আলগা ছেড়ে দেওয়া মন জুড়ে বর্ষায় নেকুপুষু কবিতা লেখার জন্য এক অমোঘ ছটফটানি। উলুকঝুলুক কবিতা ও সেই সঙ্গে অবুঝ অভিমানগুলোও একই নৌকায় সওয়ার হয়ে মুখোমুখি বসে। বৃষ্টির উচ্ছ্বাসে প্রতিবেশী কবিরাও তখন দারুণ অক্ষর কোলাহলে। সোশ্যাল নেট ওয়ার্কিং চ্যাট বক্সের দৌলতে ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ, উই চ্যাট, টুইটার, ইন্সটাগ্রাম এ সবেই জানলা বা ছাদ বা গাছের পাতা চোঁয়ানো বৃষ্টির ছবি আর ওই নেকুপুষু কবিতার খোয়াব।

বর্ষার বাদলা কারুকাজে বাঙালির হেঁসেলও যেন উৎসব। যৌথ পরিবার থেকে নিউক্লিয়ার ফ্যামিলি প্রখর বাদলা কোনও কোনও দিন ছুটির দুপুর বা রাতের বর্ষা উদযাপনের ছবিটা কিন্তু বদলায়নি একচুলও। চাইনিজ, থাই, পিৎজা হাট, ম্যাকডোনাল্ড, কন্টিনেন্টালের যুগেও এখনও বর্ষায় ‘খিচুড়ি’র আবেগ ভুলতে পারেন না কোনও বাঙালিই। বর্ষার সঙ্গে খুবই একনিষ্ঠ ভাবে জড়িয়ে রয়েছে বাঙালির হেঁসেলের নিজস্ব খিচুড়ি মৌতাত।

(কাগজ পড়ে জেনেছি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও খিচুড়ি খুব ভাল বাসেন।)

ভোজনরসিক মাত্রই অনেকেই বেশ তৃপ্তবোধ করেন ভরা বর্ষার দিনে জম্পেশ করে খিচুড়ি সেবন করতে। তাই দিদা-ঠাকুরমাদের নিজস্ব পদ্ধতির রান্না করা খিচুড়ির গল্প শুনে বা মা-মাসির রান্নার খাতা খুঁজে বাঙালির খিচুড়ি রান্না। আর খিচুড়ি মানেই তো আর নেহাত ‘চালে-ডালে’ নয়। খিচুড়িরও যে কত রকমফের আছে। বর্ষাদিনের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে, বাজার থেকে কিনে আনা ডিমভরা ইলিশ মাছ। তার পর ছাঁকা তেলে ইলিশ মাছের ডিমের বড়া আর রাউন্ড পিস ইলিশের কড়কড়ে ভাজাবাঙালির রসনায় সেই আদি ও অকৃত্রিম সোয়াদ ও একটা বেশ বড়সড় তৃপ্তির ঢেঁকুর। গরম খিচুড়িতে একটু ভাল ঘি ছড়িয়ে দেওয়া!

সোনামুগ ডাল ভেজে, গোবিন্দভোগ চাল, খানিক নারকেল কুড়ানো, কাজুবাদাম, কিশমিশ, কড়াইশুঁটি দানা, ডুমো ডুমো আলু, গাজর-টমেটো-কাঁচা-লঙ্কা কুচি, চিনি, নুন, দারচিনি, লবঙ্গ, ছোট এলাচ, জায়ফল গুঁড়ো, ঘি, শুকনো লঙ্কা-তেজপাতা ফোড়ন দিয়ে তরিবত করে বানানো ‘ভুনি খিচুড়ির’ সুবাসআহা‘নেবার্স এনভি, ওনার্স প্রাইড’। এই দ্যাখো, ভুনি খিচুড়ির ফিরিস্তি লিখতে লিখতেই মনে পড়ে গেল, কিশোরী বেলায় বুদ্ধদেব গুহর লেখা কোনও এক উপন্যাসে এই ভুনি খিচুড়ির কথাও পেয়েছিলাম। আসলে, হিন্দিতে ‘ভুনা’ অর্থাৎ ‘ভাজা’। এই রন্ধনশৈলীতে সমস্ত উপকরণ গাওয়া ঘি বা ভঁয়সা ঘিয়ে সামান্য ভেজে কষিয়ে রাঁধতে হয় বলেই ‘ভুনি খিচুড়ি’। তবে শুধুই কি আর ভুনি খিচুড়ি? ঝিরিঝিরি বর্ষায় মাংসের কিমার খিচুড়ি, পাঁচমিশালি ডালের খিচুড়ি, অনেক কিছুই রাঁধা যেতে পারে। সঙ্গে বেগুনি বা পেঁয়াজ পকোড়া, কুমড়ো ভাজা, পটল ভাজা, তোপসে ফ্রাই, ইলিশ মাছের ডিম ভাজা উফ! কোনও একটা হলেই খিচুড়ির সঙ্গে জমে যাবে।

বর্ষার সঙ্গেই আরও এক লেজুড় হয়ে জুড়ে থাকা বর্ষাতি ও ছাতার এক অদ্ভুত বুনোট। বৃষ্টির ছাঁট থেকে নিজেকে বাঁচানোর প্রচেষ্টায় এই ব্যবহার। ছাতাও এখন ফ্যাশনদুরস্ত। কখন সে দুই ভাঁজ থেকে তিন ভাঁজ হল। এখন তো লম্বা ছাতা, ফ্যাশন দুনিয়ায় ইন। পাঠক মনে করতে পারেন, সেই যে শ্রী৪২০ ছবির শংকর-জয়কিষন সুরারোপিত শৈলেন্দ্র লিখিত “প্যায়ার হুয়া ইকরার হুয়া, প্যায়ার সে ফির কিঁউ ডরতা ইয়ে দিল...” গানটি। ঝমঝমে বৃষ্টিতে বড় কালো ছাতার তলায় রাজকপূর-নার্গিসের সেই আবছায়া নিগূঢ় প্রেম ও একত্রে থাকার শপথ। এমন গা ঘেঁষাঘেঁষি রোমান্স মনে থেকে যায় চিরকাল। আবার ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘রেনকোট’ নামের সেই অসাধারণ সিনেমা, যেটি ও’ হেনরির লেখা ‘দ্য গিফট অফ ম্যাগি’ গল্পটি থেকে নেওয়া সেখানে এই বর্ষাতিই যেন অনুঘটকের ভূমিকায়। সেই বর্ষাতির পকেটে রাখা একজোড়া সোনার বালা ও চিরকুট। আর ব্যাকগ্রাউন্ডে শুভা মুদগল“পিয়া তোরা ক্যায়সে অভিমান...” গানের মনকেমন করা মূর্ছনা।

বর্ষায় প্রাণখোলা আনন্দ নিয়ে মেতে থাকতে ইদানীং কলকাতাকেন্দ্রিক গঙ্গাবক্ষে ‘হিলসা কার্নিভাল’এর এক নয়া হুজুগ। ল্যাদ খাওয়া বাঙালির ‘ইলিশ পার্বণ’ নিয়ে মনসুন ম্যানিয়ার এক নতুন সৃজন। ইলিশ ভাজা, বরিশালের সরষে ইলিশ, ইলিশ ভাপা, ইলিশ কালো জিরে ঝাল, বোনলেস ইলিশ পাতুরি, ইলিশ কড়াই, ইলিশ হান্ডি, ইলিশ মাছের মাথা দিয়ে কচুর শাক, ইলিশ মাছের ডিমের টক কত রকমারি ব্যঞ্জন-বাহার। আর আমরা বাঙালিরা তো খাওয়ার পাতে এক টুকরো ইলিশ পেলেই আহ্লাদে আটখানা।

বর্ষার সঙ্গে ভূতের গল্পের কেমিস্ট্রিটাও দারুণ রকম ‘খাপে খাপ’। ‘হরর ফিল্ম’ মানেই ঝড়-বাদলের রাত আর অশরীরী আত্মার মৌরসিপাট্টা। বর্ষার মাস কয়েক ছাড়া ভূতগুলো বাকি সময়টা কোথায় যে থাকে! নাকি তারাও সরীসৃপদের মতো বর্ষার সময়টুকু ছাড়া বাকি সময়ে শীতঘুম দেন কফিনের তলায়। বাংলার গ্রামীণ ভূতরা যেমন ব্রহ্মদত্যি, শাকচুন্নি, স্কন্ধকাটা, গো-ভূত, মামদো, পেত্নী তারা কখনও সখনও ভয়টয় দেখালেও, ‘ঘোস্ট স্টোরি’ আর ‘হরর ফিল্মের’ জন্য গা ছমছমে তুখোড় একটা বর্ষণমুখর রাত চাই-ই।

“শ্যামকান্তময়ী কোন স্বপ্নমায়া
ফিরে বৃষ্টিজলে...”

মনসুন ম্যানিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আষাঢ় সন্ধ্যায় আমরা মেদুর হয়েই বরং থাকি। নঞর্থক ব্যাপারস্যাপারকে আপাতত দূরে সরিয়ে রেখে ‘বারিস মে ভিগি হুই ইয়ে তন মন’-কে উপভোগ করে নেওয়া যাক খানিক আয়াসী মেদুরতায়। জীবনে সমস্যা থাকবেই। আর প্রাকৃতিক বিপর্যয় দুর্যোগ দুর্ভোগগুলোর কাছে আমরা নিত্য অসহায়।

আমরা বর্ষাসুখে বেমক্কা কবিতা লিখি ফেসবুক, ওয়েবজিন আর ডায়েরির পাতায়। ‘মনসুন ধামাকার’ বিশাল ছাড় দেখে কেনাকাটা করি। বৃষ্টি বৃষ্টি বিকেলে স্ট্রিট ফুডের দোকান থেকে কলকাতার বেগুনি-ফুলুরি-পেঁয়াজি-শিঙ্গাড়া-আলুর চপ-এর স্মৃতিকে সান্ত্বনা দিয়ে মুম্বইয়া ‘কুইক বাইটস’ মিক্স পকোড়া, পনির পাকোড়া, পঞ্জাবি সামোসা, পনির টিক্কি এসবই কিনে খাই। ভিজে চুপ্পুস হয়ে সোসাইটির ছাতে ‘রেন ডান্স’ করি। তার পর অব্যর্থ ভাবেই সর্দি-কাশি-গলা খুসখুস-জ্বর নিয়ে ক’দিন ভুগি। তার পর চটজলদি ঔষধ আর অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে খানিক দুর্বল হয়ে পড়ি ক’দিন।

কখনও বা দুরন্ত রোমান্স ভর করে মুম্বইয়েরই কাছে পিঠে কোথাও লং ড্রাইভে। লোনাভোলা-খাণ্ডালা, মাথেরান কিংবা আলিবাগ-মুরুড-জঞ্জিরা ও আশপাশের আরও কয়েকটা সৈকতে। বৃষ্টির দিনে পাহাড়গুলোর রূপ আরও খোলতাই হয়। সবুজের পরত বিছিয়ে থাকে পাহাড়ের শরীরে। গাড়ির সামনের কাঁচে নিরন্তর বৃষ্টির ফোঁটাগুলি আলগোছে মুছে নেয় ওয়াটার ওয়াইপার। গাড়ির ভেতর ক্রমান্বয়ে বেজে চলেছে ‘হিন্দি টপ টোয়েনটি ফিল্মি রেন সঙস’।

স্মৃতিমেদুরতায় মনে পড়ে যায়, বর্ষার সন্ধেতে পাড়ার জলসায় ‘বর্ষামঙ্গল’ অনুষ্ঠান করার কথা। একের পর এক বর্ষার গানের সঙ্গে নাচ-গান-গ্রন্থনা। আর বিকেল থেকে একটু বৃষ্টি ঝরল কী ঝরল না আমাদের সমবেত আবৃত্তি চলে

“লেবুর পাতায় করমচা,
এই বৃষ্টি ধরে যা...”

কাকতালীয় ভাবে কিন্তু বৃষ্টিটাও সে দিনের মতো ধরে যেত, ভাল ভাবেই শুরু হত ‘বর্ষামঙ্গল’ অনুষ্ঠান। স্কুলজীবনে ফি বছর অবধারিত দু’একটা ‘রেনি ডে’! বিলকুল ছুটি। বালিকাবেলায় পুতুলের বিয়ের সময় দিদা-ঠাম্মাদের কাছে শেখা আরও একটা মনোজ্ঞ গান সবাই মিলে গাওয়ার চল ছিল।

“টাপুর টুপুর বৃষ্টি পড়ে ন’দে এল বান
শিব ঠাকুরের বিয়ে হবে,
তিন কন্যে দান...”

বৃষ্টিভেজা দিনে স্মৃতি হাতড়ানো আরও কত কী যে মনে ভিড় করে আসে...। এমন দিনেই কি তারে বলা যায়! সেই তিনটে অনেত দিন না-বলা শব্দ!

mumbai khhichuri khichuri rain
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy