Advertisement
E-Paper

মার্কিন প্রযুক্তিতে দেশেই হবে অস্ত্র কারখানা

ছবিটা বদলাচ্ছে। এত দিন ছিল, ফৌজি কর্তারা আমেরিকায় যাবেন ও চাহিদা মতো অস্ত্র এবং যুদ্ধ-সরঞ্জাম কিনে নিয়ে আসবেন। বিনিময়ে ডলার গুণে দেবেন। মেরামতের দরকার পড়লে ডাকতে হবে সেই মার্কিন সংস্থাকেই।নতুন ছবি হল, মার্কিন সংস্থাগুলি এ বার ভারতের সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে কারখানা তৈরি করবে। উন্নত মার্কিন প্রযুক্তির সাহায্যে দেশেই তৈরি হবে সমর-সরঞ্জাম। সেই কারখানায় কাজ পাবেন ভারতের তরুণ-তরুণীরা। এ জন্য প্রাথমিক ভাবে পাঁচটি প্রকল্পও বাছাই করা হয়েছে।

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:০৯

ছবিটা বদলাচ্ছে।

এত দিন ছিল, ফৌজি কর্তারা আমেরিকায় যাবেন ও চাহিদা মতো অস্ত্র এবং যুদ্ধ-সরঞ্জাম কিনে নিয়ে আসবেন। বিনিময়ে ডলার গুণে দেবেন। মেরামতের দরকার পড়লে ডাকতে হবে সেই মার্কিন সংস্থাকেই।

নতুন ছবি হল, মার্কিন সংস্থাগুলি এ বার ভারতের সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে কারখানা তৈরি করবে। উন্নত মার্কিন প্রযুক্তির সাহায্যে দেশেই তৈরি হবে সমর-সরঞ্জাম। সেই কারখানায় কাজ পাবেন ভারতের তরুণ-তরুণীরা। এ জন্য প্রাথমিক ভাবে পাঁচটি প্রকল্পও বাছাই করা হয়েছে।

বারাক ওবামার সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে গুরুত্বের তালিকায় এ বারও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রই শীর্ষে। কিন্তু প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারত-মার্কিন আলাপ-আলোচনার চেনা ছকটা এ ভাবে বদলে দিতে চলেছে মোদী সরকার। তাঁর ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের সুরে সুর মিলিয়েই প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারত-মার্কিন নতুন বোঝাপড়া চুক্তি হতে চলেছে। ২০০৫-এ তৎকালীন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় ও মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব ডোনাল্ড রামসফেল্ড দশ বছরের প্রতিরক্ষা চুক্তি করেছিলেন। তার মেয়াদ ফুরিয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্র বলছে, ওবামার সফরেই আগামী দশ বছরের জন্য নতুন করে প্রতিরক্ষা সমঝোতা চুক্তি সই হবে। সেই সমঝোতায় সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হতে চলেছে ‘প্রতিরক্ষা বাণিজ্য ও প্রযুক্তি উদ্যোগ’ তথা ‘ডিফেন্স ট্রেড অ্যান্ড টেকনোলজি ইনিশিয়েটিভ’। সংক্ষেপে ডিটিটিআই।

গত কয়েক দিন ধরেই দু’দেশের প্রতিরক্ষা কর্তারা এই সমঝোতা চুক্তি চূড়ান্ত করার কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। এই নতুন সমঝোতার মূল বিষয় হল, আমেরিকা ভারতকে প্রযুক্তি দেবে। তা কাজে লাগিয়ে এ দেশেই যুদ্ধ-সরঞ্জাম তৈরির কারখানা হবে। ট্যাঙ্ক ধ্বংসের ক্ষমতাসম্পন্ন জ্যাভেলিন মিসাইল, রোমিও হেলিকপ্টার, উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ইউএভি, যুদ্ধজাহাজের জন্য কামান তৈরির প্রযুক্তি বেচতে রাজি আমেরিকা। যুদ্ধবিমানগুলি যাতে কোনও সমস্যা ছাড়াই বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজে ওঠানামা করতে পারে, তার জন্যও একসঙ্গে প্রযুক্তি-ব্যবস্থা গড়ে তোলা নিয়ে কথাবার্তা চলছে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, আমেরিকা মোট ১৭টি ক্ষেত্রে ভারতকে প্রযুক্তি দিয়ে সাহায্য করতে রাজি।

যে প্রযুক্তির সাহায্যে ভারত ও মার্কিন সংস্থাগুলির যৌথ প্রকল্প তৈরি হবে। কিন্তু ভারতের তরফে এই ১৭টির মধ্যে ৫টি ক্ষেত্রেই উৎসাহ দেখানো হয়েছে।

সাউথ ব্লকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কর্তারা চাইছেন, ভারত-মার্কিন যৌথ উদ্যোগে তৈরি কারখানায় যে সব যুদ্ধ-সরঞ্জাম তৈরি হবে, তার সবই যে ভারতের সামরিক বাহিনীই কিনবে, তা নয়। প্রয়োজনে তা রফতানিও হবে। তাতে এই প্রকল্পগুলি লাভজনক হয়ে উঠতে পারবে। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে মার্কিন লগ্নির পথ সুগম করার জন্য মোদী সরকার ইতিমধ্যেই প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বিদেশি লগ্নির দরজা খুলে দিয়েছে। চলছে লাল ফিতের ফাঁস কাটানো, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করা, বিদেশি লগ্নির প্রক্রিয়া সরল ও স্বচ্ছ করার কাজ।

পোখরানে ১৯৯৮ সালে পরমাণু পরীক্ষা করেছিল বাজপেয়ী সরকার। এর পরই ভারতের উপর নানা রকম নিষেধাজ্ঞা চাপায় আমেরিকা। ২০০৫-এ প্রণব-রামসফেল্ড চুক্তির পরে নতুন করে শুরু হয় বোঝাপড়া। ওবামার এ বারের সফরের আগে বিদায়ী মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব চাক হাগেল ওয়াশিংটনে মন্তব্য করেছেন, “প্রেসিডেন্টের সফর যথেষ্ট ইতিবাচক হবে। আমাদের আন্ডার-সেক্রেটারি ফ্র্যাঙ্ক কেন্ডাল এ জন্য ভারতে গিয়ে সলতে পাকানোর কাজ সেরে এসেছেন।”

মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার একশো দিনের মধ্যেই হাগেল ভারত সফরে এসেছিলেন। নয়াদিল্লি মনে করছে, নতুন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব অ্যাস্টন কার্টার দক্ষিণ এশিয়া সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। তাঁর সঙ্গে নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকরের বোঝাপড়ায় দু’দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে নতুন অধ্যায় শুরু হতে চলেছে।

barack obama weapons factory
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy