চরিত্র-১। কেন্দ্রে মন্ত্রী হবেন বলেই নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার হেলায় ছেড়ে চলে এসেছিলেন নেফিয়ু রিও। দল বার বার তাঁকে লোকসভায় প্রার্থী হতে বারণ করেছিল।
কিন্তু রিও-র বক্তব্য ছিল, চিরকাল রাজ্যেই থাকতে চান না। এনডিএ জোটের শরিক হওয়ার সুবাদে নাগাল্যান্ডের একমাত্র লোকসভা আসনে এনপিএফের প্রার্থী হন রিও। তিনি নিশ্চিত ছিলেন, মোদী কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসছেন। আর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনিও কেন্দ্রে মন্ত্রী হবেন। মোদী প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, তবে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে রিও এখন একজন সাধারণ সাংসদ। এবং চরম হতাশও।
চরিত্র-২। জীবনে প্রথম বার নির্বাচনে হেরে তিনি প্রকাশ্যেই ঘোষণা করেছিলেন, আর কখনও নির্বাচনে লড়বেন না। তবে শেষ পর্যন্ত সেই প্রতিজ্ঞায় অটল থাকতে না পেরে নিজের সাংসদ-কন্যাকে সরিয়ে তুরায় ফের ভোট লড়তে নামেন পূর্ণ সাংমা। এনডিএ জোটের শরিক তাঁর দল ন্যাশনাল পিপল্স পার্টি।
রিও-র মতো তাঁরও হিসেব ছিল, মোদী প্রধানমন্ত্রী হবেন। এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, প্রাক্তন স্পিকার হওয়ার সুবাদে তিনিও কেন্দ্রে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পাবেন। কিন্তু মোদী মন্ত্রিসভায় ঠাঁই হয়নি সাংমার। হতাশ তিনিও। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেয়েছেন অরুণাচলের বিজেপি যুব নেতা কিরেণ রিজিজু। কিন্তু স্থান পাননি প্রবীণ নেতা-নেত্রীরা।
হতাশ হলেও এখনই কোনও রকম বিতর্কে যেতে চাইছেন এঁরা। আপাতত অপেক্ষা। পরে মোদীর আস্থা অর্জন করে মন্ত্রিসভায় যদি ঠাঁই পান। জুনে মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ হতে পারে, এই আশায় দিল্লিতে দরবার চালাচ্ছেন তাঁরা।
ইউপিএ জমানায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় উত্তর-পূর্বের পাঁচ প্রতিনিধি ছিলেন। মোদী জমানায় সংখ্যাটি ২। উত্তর-পূর্বের ৪৬ জন সাংসদের মধ্যে এনডিএর সাংসদ-সংখ্যা ৯। এঁদের মধ্যে দু’জনকে মন্ত্রিসভায় জায়গা দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। মন্ত্রিত্ব পেয়েছেন অসম বিজেপি-র সভাপতি সর্বানন্দ সোনোয়াল এবং অরুণাচলের কিরেণ রিজিজু।
জায়গা পাননি চার বারের সাংসদ, অসম বিজেপি-র বিজয়া চক্রবর্তী বা রাজেন গোঁহাই। ৭৫ বছরের বয়সসীমায় আটকে গিয়েছেন বিজয়া দেবী। হতাশ তাঁরাও। ঘনিষ্ঠ মহলে হতাশা প্রকট করলেও, উত্তর-পূর্বের উন্নয়নের স্বার্থে ও মোদী সরকারের প্রতি আস্থা অটুট রাখার বার্তা
দিতে এখনই নেতিবাচক মন্তব্য করছেন না কেউ।
প্রাক্তন আসু সভাপতি সর্বানন্দ সবে ২০১১ সালে অসম গণ পরিষদ ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। অসমে বিতর্কিত আইএমডিটি আইন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে লড়াই চালানো ‘কট্টর’ সর্বানন্দকে প্রদেশ বিজেপির সভাপতি করে দল।
২০০৪ সালে প্রথম অগপ-র হয়ে সাংসদ হন সর্বানন্দ। এ বার রাজ্যে তাঁর নেতৃত্বেই কংগ্রেসকে কোণঠাসা করে অসমের ১৪টির মধ্যে ৭টি আসন বিজেপি জিতেছে। পুরস্কার হিসেবে মিলেছে মন্ত্রিত্ব। স্বাধীন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে ক্রীড়া, যুবকল্যাণ, দক্ষতাবৃদ্ধি ও উদ্যোগীকরণ মন্ত্রকের দায়িত্ব পেয়েছেন সর্বানন্দ।
অন্য দিকে, বিজেপির হয়ে ২০০৪ সালে সাংসদ হওয়া অরুণাচলের যুব নেতা কিরেণ রিজিজুর জনপ্রিয়তা বরাবরের। ২০০৯ সালে হারার পরে, কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী দোর্জি খাণ্ডুর পরামর্শদাতা হিসেবে কিছুদিন কাজ করার পরে ফের তিনি বিজেপিতে ফেরেন। এ বার অরুণাচল বিধানসভায় নির্বাচনে কংগ্রেস ক্ষমতা দখল করলেও কংগ্রেসের বেশ কিছু তাবড় নেতা-মন্ত্রীকে হারিয়ে দিয়েছে বিজেপি। লোকসভায় ফের জিতেছেন কিরেণ। মিলেছে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ভার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy