Advertisement
E-Paper

রাঁচিতে উত্তর মেলানোর চেষ্টায় রাজনীতিকরা

কে জিতবেন রাঁচিতে? নিঃসন্দেহে লাখ টাকার প্রশ্ন। রাঁচির এক অটোচালকের রসিকতা, “সাবজি পুরস্কার মূল্য কোটি টাকা হওয়া উচিত। প্রশ্নটি বড় কঠিন।” রাঁচির এটাই ছবি। রাঘব-বোয়াল থেকে চুনোপুঁটি---সব মেলালে মোট প্রার্থীর সংখ্যা আঠাশ। হেভিওয়েট প্রার্থীদের কপালে রীতিমতো ভাঁজ। সকলেই অঙ্ক কষছেন। উত্তর মিলছে কিনা তা বুঝতে পারছেন না। বৃহস্পতিবার এখানে ভোট। আর উত্তরের জন্য অপেক্ষা করতে হবে ১৬ মে পর্যন্ত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:২৭

কে জিতবেন রাঁচিতে? নিঃসন্দেহে লাখ টাকার প্রশ্ন। রাঁচির এক অটোচালকের রসিকতা, “সাবজি পুরস্কার মূল্য কোটি টাকা হওয়া উচিত। প্রশ্নটি বড় কঠিন।”

রাঁচির এটাই ছবি। রাঘব-বোয়াল থেকে চুনোপুঁটি---সব মেলালে মোট প্রার্থীর সংখ্যা আঠাশ। হেভিওয়েট প্রার্থীদের কপালে রীতিমতো ভাঁজ। সকলেই অঙ্ক কষছেন। উত্তর মিলছে কিনা তা বুঝতে পারছেন না। বৃহস্পতিবার এখানে ভোট। আর উত্তরের জন্য অপেক্ষা করতে হবে ১৬ মে পর্যন্ত।

দিন কয়েক আগে ইউনিয়ন ক্লাবের বাঙালি সদস্যদের সঙ্গে ‘সৌজন্য বিনিময়’ করতে (পড়তে হবে ‘ভোট চাইতে’) এসে বিজেপি প্রার্থী রামটহল চৌধুরি বলেই ফেললেন, “সিল্লির মানুষ বলছেন দিল্লির লোক দিল্লিতে। আর সিল্লির লোক সিল্লিতেই।” অনেকেই জানেন সিল্লি বিধানসভায় বিজেপির বেশ ‘ব্যথা’ রয়েছে। সেখানকার বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী, আজসু নেতা সুদেশ মাহাতো নিজেই এবার প্রার্থী হয়েছেন। সুদেশ এই প্রথম লোকসভা ভোটে। কুর্মি ভোটার আর তরুণ প্রজন্মের একটা বড় অংশ তাঁর সঙ্গে ঘুরছেন। প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ রামটহলও কুর্মি। তবে ফের রাজনীতিতে ফিরেছেন প্রায় দশ বছর পরে। তবে তিনি কুর্মিদের নেতা

হলেও দীর্ঘদিন কেউ তাঁর দর্শন পাননি। ফলে সুদেশ যদি কুর্মি ভোট বের করে নিয়ে যান, তবে তা কংগ্রেসের সুবিধা করে দেবে।

অন্য দিকে, রাঁচির ক্রিকেটমোদীদের কাছে এত দিন ক্রিকেট সংগঠক হিসেবেই পরিচিত ছিলেন অমিতাভ চৌধুরি। এ বার নির্বাচনের প্রচারে বেরিয়ে পরিচিত হয়ে উঠছেন জেভিএম প্রার্থী এই প্রাক্তন পুলিশ কর্তা। অমিতাভর জন্যই রাঁচির মানুষ মাঠে গিয়ে ক্রিকেট দেখার সুযোগ পাচ্ছেন। তাঁর উদ্যোগেই ধুরুয়াতে তৈরি হয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার অন্তত ছ’মাস আগে থেকেই গ্রামে গ্রামে ঘুরছেন অমিতাভ। ফলে সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে, বিশেষত শহরাঞ্চল থেকে ভালো ভোট তিনি টানবেন। সর্বোপরি অমিতভর ক্ষেত্রে কাজ করবে রাজ্যের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী তথা দলের শীর্ষনেতা বাবুলাল মরাণ্ডির স্বচ্ছ ভাবমূর্তিও।

ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা আর কংগ্রেসের জোট প্রার্থী সুবোধকান্ত সহায়ের কপালে ভাঁজ ফেলেছেন অমিতাভ। পরিস্থিতি সামাল দিতে কংগ্রেস প্রার্থী তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুবোধকান্ত বার বার আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় গিয়ে বলছেন, “এমন চিহ্নে ভোট দিন যাঁরা স্থায়ী সরকার তৈরি করতে পারবেন।” আসলে এই নির্বাচন সুবোধকান্তেরও অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। দল নাকি তাঁকে প্রার্থীই করতে চায়নি। অনেক কষ্টে সুবোধকান্ত টিকিট আদায় করেছেন বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর।

রাজ্য-রাজনীতিতে চিরন্তন ‘নির্দল’ হিসেবেই এতদিন পরিচিত ছিলেন বন্ধু তিরকি। কিন্তু এ বার তিনি দল পেয়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেস বন্ধুকে রাঁচিতে প্রার্থী করেছে। এখানে নির্বাচনী সভাও করে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধুমাত্র তৃণমূলের ব্যানারই বন্ধুকে পায়ের তলার মাটি বেশ শক্ত করে দিয়েছে বলেই বন্ধুর ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি। মমতার ছবি নিয়ে সর্বত্র প্রচার করছেন বন্ধু। যাচ্ছেন সিঠিও, হিন্দপিড়ি, কারবালা চকের মতো সংখ্যালঘু এলাকাগুলিতেও। সঙ্গে অবশ্যই মম্‌তাদিদির ছবি। তবে কংগ্রেসের ভোট ব্যাঙ্ক বলে পরিচিত, এই সংখ্যালঘু ভোট বন্ধু টানতে পারবেন কিনা তা স্পষ্ট নয়। তৃণমূল থাবা বসাতে চাইছে রাঁচির আর এক সংখ্যালঘু ভোটেও। বন্ধু নিজে খ্রিস্টান। খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ভোটও রাঁচিতে কম নয়। বন্ধু হাজির হচ্ছেন গির্জার পুরোহিতদের কাছে। উল্লেখ্য, এখানকার খ্রিষ্টান ভোটও সাধারণত কংগ্রেসের সঙ্গেই থাকে। ফলে সুদেশ যদি কুর্মী ভোট কেটে বিজেপির বিপদ বাড়ান, তবে অমিতাভ আর বন্ধু বিপদ বাড়াচ্ছেন কংগ্রেসের। এখানে আম আদমি পার্টির প্রার্থী, পেশায় ইঞ্জিনিয়ার আমানুল্লাহ আমানও রয়েছেন।

এ হেন আঙ্কিক ধাঁধার মধ্যে পড়ে ভোটের ২৪ ঘন্টা আগে কেউই আর উত্তর মেলানোর চেষ্টা করছেন না। কোটি টাকার প্রশ্নটি ঝুলিয়ে রেখে দিচ্ছেন সামনে।

ranchi loksabha election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy