Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

শিলচর পুরসভায় উপপ্রধানের কুর্সি নিয়ে দ্বন্দ্ব

শিলচর পুরসভায় উপপ্রধানের কুর্সি নিয়ে টানাপড়েন চলছে বিজেপির অন্দরমহলে। পুরভোটে প্রবীণ আইনজীবী নীহারেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরীকে সভাপতি প্রার্থী করে লড়েছে গেরুয়া দল। তা নিয়ে কোনও জটিলতা তাই নেই। কিন্তু নির্বাচনে জয়ী প্রাক্তন দুই উপপ্রধানের মধ্যে পুরনো তখ্ত নিয়ে টানাটানি শুরু হয়েছে।

উত্তম সাহা
শিলচর শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:৩১
Share: Save:

শিলচর পুরসভায় উপপ্রধানের কুর্সি নিয়ে টানাপড়েন চলছে বিজেপির অন্দরমহলে।

পুরভোটে প্রবীণ আইনজীবী নীহারেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরীকে সভাপতি প্রার্থী করে লড়েছে গেরুয়া দল। তা নিয়ে কোনও জটিলতা তাই নেই। কিন্তু নির্বাচনে জয়ী প্রাক্তন দুই উপপ্রধানের মধ্যে পুরনো তখ্ত নিয়ে টানাটানি শুরু হয়েছে।

২৮ সদস্যের পুরসভায় বিজেপি জিতেছে ১৭ আসনে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মিত্রা রায়, বিজেন্দ্রপ্রসাদ সিংহ। ১৯৯৭ সালে বিজেপি নেতৃত্বাধীন বোর্ডে উপপ্রধান পদে ছিলেন মিত্রাদেবী। গত পুরবোর্ডে ওই দায়িত্ব ছিল বিজেন্দ্রপ্রসাদের হাতে। ২০০৯ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে পুর-সভাপতি সুস্মিতা দেব বা তমালকান্তি বণিকের আমলে বিজেন্দ্রবাবুই ছিলেন সেকেন্ড ইন-কমান্ড। ভোটের কয়েক দিন আগে তিনি কংগ্রেস শিবির ছেড়ে বিজেপি শিবিরে যোগ দেন।

পুরনো অভিজ্ঞতার জেরে দু’জনই এখন উপপ্রধানের দায়িত্ব পেতে চাইছেন।

বিজেন্দ্রবাবুর বিপক্ষ গোষ্ঠীর বক্তব্য, কয়েক দিন আগে যে নেতা দল-বদল করলেন, তাঁকেই উপপ্রধানের দায়িত্ব দিলে দলের জন্য আর খেটে কী লাভ হবে! বিজেপির জেলা সভাপতি কৌশিক রাই ভোটের আগে বলেছিলেন, “বোর্ড দখল করলে অন্য দল থেকে আসা কেউ সভাপতি বা উপসভাপতি হবেন না।” পাশাপাশি, বিজয়ী মহিলা পুরসদস্যরাও বিজেন্দ্রবাবুর পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। শিলচর পুরসভায় বিজেপির ১৭ সদস্যের মধ্যে ১১ জনই মহিলা। ওই মহিলা সদস্যদের ইচ্ছা, তাঁদের কাউকেই ওই পদে বসানো হোক এ বার।

মিত্রাদেবীকে নিয়েও দলে মতবিভেদ বজায় রয়েছে। বিজেপির ওই শিবিরের বক্তব্য, ১৯৯৭ সালে উপসভাপতি থাকাকালীন বোর্ড টিকিয়ে রাখতে পারেননি মিত্রাদেবী। দু’জন সদস্য কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায়, মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার দেড় বছর আগেই পুরবোর্ডের ক্ষমতা চলে যায় কংগ্রেসের হাতে। তাঁদের বক্তব্য, এ জন্য তৎকালীন পুরপ্রধান রাজেন্দ্র ব্রহ্মচারীর নেতৃত্বকে দায়ী করা হলেও, মিত্রাদেবীও দায় এড়াতে পারেন না কখনওই। ওই গোষ্ঠীর এক নেতার কথায়, “১৯৯৭ সালের মতো পরিস্থিতি এখন আর নেই। সেই সময় বাধ্য হয়ে মিত্রাদেবীকে গুরুদায়িত্ব দিতে হয়েছিল। এখন পুরসভার কাজকর্মে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। উনি এ সব সামলাতে পারবেন না।” এই পরিস্থিতিতে উপপ্রধান পদের দাবিদার হিসেবে সামনের সারিতে এসেছেন চামেলী পাল, রীনা পালের নাম। চামেলীদেবী আইনের স্নাতক, রীনাদেবীও উচ্চশিক্ষিত। তিনি মেঘালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। তবে, দু’জন এ বারই প্রথম পুরসভার সদস্য হয়েছেন।

শিলচরের বিজেপি বিধায়ক দিলীপকুমার পাল বলেন, “গত কাল বিজয়ী সদস্যদের নিয়ে দলের জেলা নেতৃত্ব বৈঠক করেছেন। উপসভাপতি পদ নিয়ে কোনও সুপারিশ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। সব দিক ভেবে শীর্ষ নেতৃত্ব চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।”

জেলা সভাপতি কৌশিকবাবুও এই বিষয়ে তড়িঘড়ি কিছু করতে নারাজ। তিনি বলেন, “গণনার ১৫ দিনের মধ্যে সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। তার পরই বৈঠকে বসে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” বিজেপির মহিলা মোর্চার জেলা সভাপতি সন্ধ্যা আচার্য বলেন, “টিকিট দেওয়ার ক্ষেত্রে দল মহিলাদের বাড়তি গুরুত্ব দিয়েছে। নির্বাচিত পুরসদস্যদের দুই-তৃতীয়াংশ মহিলা। উপপ্রধান পদের মনোনয়নে মহিলাদেরও গুরুত্ব দিক দল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE