হায়নার মুখে বাচ্চা হাতি। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া।
বন্যজীবন কতটা ভয়ঙ্কর, কতটা নিষ্ঠুর, তা আরও একবার ধরা পড়ল এক ফটোগ্রাফারের ক্যামেরায়। জিম্বাবোয়ের এক জঙ্গলে এমনই কিছু ছবি ক্যামেরাবন্দি হয়েছিল। ছবিগুলিতে ধরা পড়েছে, কাদায় আটকে পড়া এক বাচ্চা হাতিকে কী ভাবে খেয়ে ফেলছে হায়নার দল। আর পাশে অসহায় হাতিটির মা, কিছুই করতে পারল না।
জিম্বাবোয়ের মানা পুলস ন্যাশনাল পার্কে বন্যপ্রাণীদের ছবি তুলতে গিয়েছিলেন জেনস কালম্যান। দু’টি পোস্টে মোট এগারোটি ছবি শেয়ার করেছেন জেনস। সেই সঙ্গে বর্ণনা করেছেন, তাঁর চোখের সামনে ঘটে যাওয়া সেই মর্মান্তিক ঘটনার। নামা পুলস ন্যাশনাল পার্কের একটি কর্দমাক্ত জমিতে আটকে পড়ে একটি হাতি ও তার শাবক। দু’জনের মধ্যে মাত্র কয়েক ফুটের দূরত্ব।কাদায় তারা এমনভাবে আটকে পড়েছিল যে, এক সময়ের পর আর নড়তে পারছিল না।
তাদের অসহায় অবস্থা দেখে একদল হায়না বুঝতে পারে, আগামী কয়েক দিন তাদের বাঁচার রসদ জোগাড় হয়ে গেলে। প্রথমে তারা আশপাশে ঘুরতে থাকে। যখন নিশ্চিত হয় দু’টি হাতিরই আর পালানোর পথ নেই। মা হাতিটি শাবকটিকে উদ্ধারও করতে পারবে না, রক্ষাও করতে পারবে না। তখন তারা ধীরে ধীরে এগিয়ে এসে আক্রমণ করে শাবকটিকে।
আরও পড়ুন: করোনা-আতঙ্ক, বিমানে উঠেই প্লাস্টিকে নিজেদের মুড়ে ফেললেন ২ যাত্রী!
তখনও বেঁচে ছিল বাচ্চা হাতিটি, সেই অবস্থাতেই তাকে খেতে শুরু করে হায়নার দল। একদল হায়না মা হাতিটির চোখের সামনেই খেয়ে ফেলে শাবকটিকে। হুঙ্কার দিয়ে মাথা, শুঁড় নেড়েও তাড়াতে পারেনি হায়নার দলকে। আসলে তার শুঁড়ের নাগালের বাইরে ছিল হায়নাগুলি। এক সময় বাচ্চা হাতিটিকে খেয়ে নেয় হায়নারা। এক হায়নাকে বাচ্চা হাতিটির একটি পা মুখে করে নিয়ে যেতেও দেখা গিয়েছে। সেই ভয়ঙ্কর ছবিও ধরা পড়েছে জেনসের ক্যামেরায়।
আরও পড়ুন: প্লাস্টিকের সাপ দেখে ২ দিন ঘর থেকে বেরলেন না মহিলা!
জেনস জানিয়েছেন, এই ঘটনার দু’দিন পর মা হাতিটিও মারা যায়। চড়া রোদে জল, খাবারের অভাবে জীবনের সঙ্গে লড়াই করে দু’দিন। তারপর ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। আর তার শরীরে পেট ভরাতে উপস্থিত হয় একদল শকুন। শকুনগুলি নাকি হাতিটির মারা যাওয়ার আগেই তার গায়ের উপর বসে ছিল বলে জানিয়েছেন জেনস।
দীর্ঘদিন ধরে ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফি করেন বছর পঞ্চাশের জেনস। ফেসবুকে এই হাতি-হায়নার ছবিগুলি সম্প্রতি পোস্ট করেছেন। তবে সেগুলি গত বছর তুলেছিলেন। আসলে এমন ‘নিষ্ঠুর’ ছবি পোস্ট করবেন কিনা তা নিয়ে দোটানায় ছিলেন। শেষ পর্যন্ত পোস্ট করেই দিলেন। সেই ছবিতেই উঠে এল, জঙ্গলের জীবন কতটা কঠিন আর নির্মম।
ছবিগুলি প্রকাশ্যে আসতেই সেগুলি সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। প্রচুর নেটাগরিক ছবিগুলি শেয়ার করে নিজেদের মতামত ব্যক্ত করেছেন।
দেখুন সেই পোস্ট:
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy